শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
লকডাউনেও বেসরকারি স্কুলগুলিতে ফি কমানোর দাবিতে গত কয়েক দিন ধরেই শহরের বিভিন্ন স্কুলের সামনে প্রতিবাদে সরব হচ্ছিলেন অভিভবকরা। তবুও ফি কমাতে নারাজ অধিকাংশ স্কুল কর্তৃপক্ষই। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধের পর থেকে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। বেসরকারি স্কুলগুলির জন্য রাজ্যের নীতি প্রণয়নে
শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেও লাভ হয়নি।
তাই এবার ফি কমানোর আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি দিলেন ইউনাইটেড গার্জেন্স অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার কলেজ স্কোয়ারের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান এই অভিভাবকদের সংগঠন। এরপর ই-মেইল মারফত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ফি কমানোর দাবি জানিয়ে একটি খোলা চিঠি পাঠান। স্কুলের সামনে বিভিন্নভাবে বিক্ষোভ দেখিয়ে এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেও কোনও ফল না মেলায় এবার প্রশাসনের মাথার কাছে দ্বারস্থ হলেন অভিভাবকরা। তাদের বিশ্বাস, তারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ন্যায়বিচার পাবেন।
আরও পড়ুনঃ উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ফের জটিলতা, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
বেশ কয়েকদিন ধরে শহরের বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলে ফি মকুবের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অভিভাবকরা। এর মধ্য রয়েছে জিডি বিড়লা স্কুল, মহাদেবি বিড়লা, সেন্ট জোন্স, আরএন সিং মেমোরিয়াল, অশোকা হল মেমোরিয়াল, ডি পল, জুলিয়েন ডে সহ একাধিক বেসরকারি স্কুল। যেখানে বারবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ন্যূনতম নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন বেসরকারি স্কুল গুলিকে। সেখানে দিনের পর দিন ফী বৃদ্ধির অভিযোগে উত্তপ্ত হয়েছে স্কুল চত্বর।
আরও পড়ুনঃ চিনা পণ্যকে ক্লিয়ারেন্স দেওয়া বন্ধের নির্দেশ শুল্ক দফতরের
এর পরিপ্রেক্ষিতে এদিন বিভিন্ন স্কুলের অভিভাবকদের নিয়ে তৈরি সংগঠন ইউনাইটেড গার্জেন অ্যাসোসিয়েশন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে পাঠানো ওই চিঠিতে জানান, ‘স্কুল গুলি যেন কেবলমাত্র টিউশন ফি বাবদ টাকাই এখন নেয়। যেহেতু এই মুহূর্তে ল্যাবরেটরি, বৈদ্যুতিক খরচ সহ একাধিক পরিষেবা স্কুল দিচ্ছে না, তাই সেই বাবদ টাকা যেন আপাতত মুকুব করা হয়।’ এই প্রসঙ্গে ওই সংগঠনের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “এই সময় পশ্চিমবঙ্গের অভিভাবকরা সকলেই আর্থিক দিক থেকে বিপর্যস্ত। গত তিন মাস ধরে স্কুল বন্ধ কবে স্কুল খুলবে তার কোওন ঠিক নেই। তাই আমরা চাই এখন কেবলমাত্র টিউশন ফি নেওয়া হোক।’
ফি বৃদ্ধির পক্ষে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির অবশ্য রয়েছে অন্য যুক্তি। তাদের মতে স্কুল বন্ধ থাকলেও প্রশাসনিক কাজ চলছে। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন দিতে হচ্ছে। স্কুলের ফান্ড এতটাও মজবুত নয়, যে সেখান থেকে মাসের-পর-মাস শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন দেওয়া যাবে তাই সেই কারণে বাধ্য হয়ে এক প্রকার ফি বৃদ্ধি করছেন। কিন্তু রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও কিভাবে এই সঙ্কটকালীন সময়ে অতিরিক্ত ফি নিতে পারে স্কুলগুলি, তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584