শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনা আবহে বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অজুহাতে মোটা অঙ্কের বিল ধরানোর অভিযোগ আসছিল অনেকদিন ধরেই। এই পরিস্থিতি সামলাতে ৫ দফা নির্দেশিকা জারি করে স্বাস্থ্য কমিশন। কিন্তু তারপরেও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল তিলজলার এক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে।
রোগীর পরিবারের অভিযোগ, ভুয়ো করোনা রিপোর্ট দেখিয়ে মোটা অঙ্কের বিল নিয়েছে হাসপাতাল। আর তার বদলে তাঁদের দেওয়া হয়েছে ভেন্টিলেশনে রেখে দেওয়া ২-৩ দিন আগের মৃতদেহ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে কড়েয়া থানায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ওই রোগী আদৌ করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং দেহের ময়নাতদন্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিমানবন্দরে কর্মী ছাঁটাই, প্রতিবাদে কন্ট্রাক্টর্স ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, তিলজলা রোডের বেসরকারি নার্সিং হোম স্বস্তিকা সেবা সদনে ২৫ আগস্ট ভর্তি করানো হয় ৫৫ বছরের সবর আলি নামে হুগলির চণ্ডীতলার এক বাসিন্দাকে। অভিযোগ, ২৬ আগস্ট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রোগীর পরিবারকে জানায় যে,চিকিৎসাধীন ওই রোগী করোনা আক্রান্ত। তাদের একটি রিপোর্টও দেখানো হয়। পরে ধাপে ধাপে প্রথমে রোগীকে আইসিইউ এবং পরে ভেন্টিলেশনে পাঠানো হয়।
পরিবারের দাবি, তাদের হঠাৎ করেই অনেক কিছু ঠিকঠাক মনে হচ্ছিল না। তাই তাঁরা রুবি হাসপাতালে সবর আলিকে স্থানান্তরিত করার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা করেন। কিন্তু অভিযোগ, ওই কথা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে জানাতেই সোমবার ৩১ আগস্ট স্বস্তিকা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রোগীর পরিবারকে বলে যে সমস্ত বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিয়ে রোগীকে নিয়ে যেতে । টাকা না মেটানো পর্যন্ত রোগীকে নামিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে দেওয়া হবে না বলেও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ। এরপর তারা সমস্ত টাকাই মিটিয়ে দেন।
আরও পড়ুনঃ পৌষমেলার মাঠ নিয়ে অগ্নিমিত্রার মন্তব্যের প্রতিবাদে কর্মসূচি
তারপরেই যেন হাবভাব পাল্টে যায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের। আচমকা তারা ছোটাছুটি শুরু করেন। তারপরে তাঁদেরকে জানানো হয় যে সবর আলির মৃত্যু হয়েছে। যে সময় তারা বিল মেটাচ্ছিলেন, সেই সময় মারা গিয়েছেন ওই রোগী। তারপরে তাদের মৃতদেহ হস্তান্তর করে দেওয়া হয়।
আর আচমকা এই খবর শুনে রীতিমত চমকে যান সবর আলির পরিবার। দেহ হাতে পাওয়ার পর পরিবারের অভিযোগ, অন্তত দু-তিন দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বিল বাড়ানোর জন্য তাঁকে এভাবে ভেন্টিলেশনে রেখে দেওয়া হয়েছিল। রোগীকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের জানানো হল না কেন? একই সঙ্গে তাঁদের আরও অভিযোগ, করোনার রিপোর্টও সঠিক নয়। ময়না তদন্ত করবেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।
আরও পড়ুনঃ অন্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চাওয়ায় বৃদ্ধকে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ পর্ণশ্রীতে
এদিকে রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে পাল্টা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে স্বস্তিকা সেবাসদন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, সমস্ত কিছু পরিষ্কার ভাবে জানানো সত্ত্বেও ইচ্ছা করে রোগীর পরিবার নার্সিংহোমে ঝামেলা বাধানোর চেষ্টা করছে। দু’পক্ষের অভিযোগে খতিয়ে দেখে তদন্ত করছে পুলিশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584