জরুরি পরিষেবার অজুহাতে লকডাউনকে থোড়াই কেয়ার, শহরজুড়ে দাপট গাড়ি-মোটরবাইকের

0
17

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

লকডাউনে গোটা ১০-১২ দিন কোনওরকমে ঘরবন্দি কাটিয়ে ফেললেও আর ঘরে মন টিকছে না অনেক মানুষের। শনিবার সকালে কলকাতার রাস্তায় নেমে দেখা গেল যেন সেই চিত্র। রাস্তায় বাসের দেখা না মিললেও রাস্তা রীতিমত ছেড়ে গিয়েছে বেসরকারি গাড়ি এবং স্কুটারে। সঙ্গে কোনও মালপত্র না থাকলে মুখে অবশ্যই জরুরি প্রয়োজনের বাহানা দিচ্ছেন অনেকেই।

kolkata | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

লকডাউন শুরু হওয়ার পরে প্রথমেই লাঠি হাতে কড়া ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গিয়েছিল পুলিশকে। কিন্তু পুলিশি অতিসক্রিয়তার অভিযোগ উঠতেই নরমপন্থা মনোভাবে ফিরতে হয়েছে পুলিশকে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন অনেকে।

আরও পড়ুনঃ করোনা প্রতিরোধে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১লক্ষ টাকার অনুদান দিলেন জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

অনেকে অন্য কাজে বেরিয়েও পুলিশ ধরলে হয় বাজারের থলে দেখাচ্ছেন, কেউ আবার দেখাচ্ছেন মেডিক্যাল প্রেসক্রিপশন। আবার পুলিশের ই-পাস নিয়েও অন্য কাজে বেরোচ্ছেন অনেকে। লুকোচুরি খেলায় যাচাই করার কোনও উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই ছেড়ে দিতে হচ্ছে পুলিশকে।

কেউ কেউ ধরাও পড়ে যাচ্ছেন। শনিবার সকালে গড়িয়াহাট থানা এলাকাতেও এমন লোকজনকে ধরা হয়েছে। সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘন্টায় ৮০০ জন মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর ১৪৮টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এভাবেই উত্তর থেকে দক্ষিণ ও শহর থেকে শহরতলি সর্বত্রই রাস্তা জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষ। কেউ বা নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়ে, আবার কেউ মোটর বাইকে করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে।

অনেকে আবার নিজেদের গাড়িতে এমার্জেন্সি স্টিকারও লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেকে আবার হাফ প্যান্ট গেঞ্জি পড়ে বাইক নিয়ে এমার্জেন্সি স্টিকার লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের এমার্জেন্সি কথা জানতে চাইলে তারা সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারেননি।

আরও পড়ুনঃ পুলিশের কাছে আসা তালিকায় স্পষ্ট, নিজামউদ্দিনে গিয়েছিলেন মালদার ১৮ জন

রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘দিদি বলেছেন, এমার্জেন্সি সার্ভিসের লোকেদের কোনভাবে অসুবিধা না করতে। তাই যাদের গাড়িতে এমার্জেন্সি স্টিকার লাগানো তাদেরকে আমরা কোনভাবেই অসুবিধা করছি না। বুঝেও না বোঝার ভান করে থাকতে হচ্ছে।’ তবে মাঝেমধ্যে কথার জালে ধরেও ফেলা হচ্ছে অনেককে।

এমনিতেও এই ধরনের ঘটনায় গ্রেফতার হলে তাদের জামিনে সাহায্য করছেন না আইনজীবীরা। তার ওপর সাধারণ মানুষের এই বেপরোয়া মনোভাবে বিরক্ত আইনজীবীদের একাংশ।

নিজামুদ্দিনের ঘটনাকে চোখের সামনে রেখে দেশের মানুষের স্বার্থে সেনা নামিয়ে লকডাউন আইনকে আরো কঠোর করা উচিত বলেই মত আনেকের।

এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী তথা অল ইন্ডিয়া গ্রামের লিগাল এইট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘যারা দেশের আইন-কানুনকে উপেক্ষা করছেন, তাদের জন্য কড়া আইন আনা উচিত। লকডাউন সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই বলবৎ করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু মানুষ নিজের ভালোটা বুঝতে পারছে না। তারা শুধুমাত্র প্রতিবেশী বা নিকট আত্মীয় নয়, নিজেদের পরিবারের লোকেদের ও বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। এ ধরনের মানুষকে চিহ্নিত করে অবিলম্বে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here