টিএমসির খেলা শেষ, খেলা খতমঃ মোদী

0
65

উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ

ঘরে ঘরে জলপ্রকল্পে রাজনীতি করছে তৃণমূল। কেন্দ্র যে টাকা পাঠাচ্ছে, তা আজ পর্যন্ত এখানকার সরকার খরচই করতে পারেনি। বলে তৃণমূলের উদ্দেশ্যে তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী

Narendra Modi | newsfront.co
ছবিঃ এএনআই

এদিন তিনি বলেন, “তৃণমূল সরকার মহিলা, শিশুদের দোষী কিনা? নির্বাচনে শাস্তি পাওয়া উচিত তো? এমন অনেক প্রকল্প রাজ্য সরকার সিন্দুকে রেখে দিয়েছে। দিদি না তো কাজ করবেন, না অন্য কাউকে করতে দেবেন! বিরোধীরাও বলছে, আমি বন্ধুদের জন্য কাজ করি। আমাকে বলা হয়, মোদী নিজের বন্ধুদের জন্য কাজ করে। আমরা সবাই জানি, ছোটবেলায় যেখানে খেলাধুলা করে বড়ো হই, তারাই আমাদের জীবনভর বন্ধু থাকে। আমিও দারিদ্র দেখেছি। তাই গরিবদের দুঃখ দেখতে পাই। তাঁরা আমার বন্ধু। সেজন্য আমাকে বই পড়তে হয় না। ছবি দেখতে হয় না। আমি এটা অনুভব করতে পারি। আর তাই বন্ধুদের জন্য কাজ করি। বাংলায় নিজের বন্ধুদের জন্য কাজ করি।

Mega kolkata rally | newsfront.co
ছবিঃ এএনআই

বাংলায় প্রায় নব্বই লক্ষ গ্যাস সংযোগ দিয়েছি। সাত লক্ষের বেশি মানুষকে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছি। সাত লক্ষের বেশি শৌচালয় করেছি। বত্রিশ লক্ষের বেশি পাকা ঘর দিয়েছি। দলিত, পীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত সকল বন্ধুরা লাভবান হয়েছেন। এখানকার টি-গার্ডেনে কাজ করা শ্রমিকরা আমার বিশেষ বন্ধু। আমার এমন কাজের জন্য ওদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে। আমার চা-ওয়ালা বন্ধুরা পেয়েছেন সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা। বাজেটে চা শ্রমিকদের জন্য এক হাজার কোটি টাকার ঘোষণা করা হয়েছে।”

পাশাপাশি তিনি বলেন, “বিনামূল্যে রেশন, কোটি টাকা ব্যাঙ্কে পাঠানো হয়েছে। আমার বন্ধুদের জন্য বিনামূল্যে করোনা টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। একশো ত্রিশ কোটি ভারতবাসী আমার বন্ধু। প্রতিটা যুব আমার বন্ধু। বস্তিতে থাকা মানুষ আমার বন্ধু। এতে ওদের সমস্যা হয়। এ তো আমাদের হাতে ছিল। এ কোন নতুন বন্ধু এসে গেল! ক্রোধে এরা এতেও বাধা দেয়। কান খুলে শুনুন, পশ্চিমবঙ্গে আমার এই বন্ধুদের জন্য যত বেশি সম্ভব কাজ করতে চাই।

বাংলার সরকার আটকাচ্ছে আমায়। বাংলার লক্ষাধিক কৃষকের ব্যাঙ্কের খাতায় টাকা জমা করতে চাই। বাংলার বন্ধুদের আয়ুষ্মান যোজনায় আনতে চাই। গোটা দেশে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যের সুবিধা চাই। এবার বলুন, দোস্তি চলবে না তোলাবাজি? আপনাদের এই উদ্যম দেখে দিদি ও তাঁর সঙ্গীদের ঘুম উড়ে গিয়েছে। তাই তো ওরা বলছে, খেলা হবে। সত্যিই এরা তো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। খেলতে জানেন। খেলেছেনও। কোনও খেলাই ছাড়েননি। কত দুর্নীতি করে বাংলার গরিবদের লুঠেছেন! আপনি কী বাকি রেখেছেন!

আমপান পীড়িতদের জন্য পাঠানো ত্রাণও লুঠেছেন। তোলাবাজি, সিন্ডিকেট করেছেন আপনি। এত দুর্নীতি করেছেন যে কোরাপশন অলিম্পিক হয়ে যাবে। মানুষের জীবন নিয়ে খেলেছেন। চা বাগানগুলি তালাবন্দি করেছেন। নিয়োগ পরীক্ষায় কী ধরনের খেলা হয়! ছোট ছোট তালিকা প্রকাশিত হয়। তালিকা প্রকাশের আগে কারও ঘরে ফাইল যায়, মঞ্জুরি দেওয়া হয়। কোন কোন লোকেদের নেওয়া হয়, তা সারা বাংলা জানে না। এবার এই খেলা চলবে না। এই খেলা বন্ধ হওয়া চাই? এই খেলা খতম হওয়া চাই তো? দিদি এই আওয়াজ শুনুন, শঙ্খনাদ শুনুন। টিএমসির খেলা শেষ, খেলা খতম। উন্নয়ন শুরু।”

আরও পড়ুনঃ ব্রিগেড থেকে ‘আসল’ পরিবর্তনের ডাক মোদীর

আসন্ন বিধানসভা ভোট প্রসঙ্গে বঙ্গের ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “বাংলার ভোটদাতাদের অনুরোধ করছি, ভয় পাবেন না। নির্ভয়ে বিজেপিকে ভোট দিন। কুশাসনের বিরুদ্ধে ভোট দিন। বাংলাকে ভয়মুক্ত করুন। উন্নতির জন্য ভোট করুন। বাংলার জয়, ভারতের জয়। শাস্ত্রে বলা আছে, ক্রোধাৎ ভবতি সম্মোহ, সম্মোহ স্মৃতিবিভ্রম। রাগে মানুষের বিভ্রান্ত হয়, আর নিজের সব কিছু হারিয়ে ফেলেন। আমাকে কী কী বলেছেন? কখনও রাবণ, কখনও দানব, কখনও দৈত্য কখনও গুন্ডা। আমাকে বলেছেন দিদি! দিদি এত রাগ কেন! কথায় কথায় গাল দেওয়া!”

আরও পড়ুনঃ আপনার স্কুটি ভবানীপুর যাওয়ার বদলে নন্দীগ্রাম চলে গেল! মোদীর নিশানায় মমতা

আগামীতে বাংলায় যে পদ্ম ফুটবেই সেই আশা নিয়ে এদিন তিনি বলেন, “আজ যদি বাংলায় পদ্ম ফুটছে, তার কারণ সেই পাঁক, যা আপনার দল এখানে তৈরি করেছে। উন্নতির জায়গায় তোষণের রাজনীতি করেছেন। ভেদাভেদ করেছে। গণতন্ত্রের নামে লুঠতন্ত্রকে উৎসাহ দিয়েছেন। গরিবদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। কয়েক বছর ধরে চিনি দিদিকে। এই দিদি সেই দিদি নন, যিনি বামপন্থীদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। দিদির রিমোটকন্ট্রোল অন্য কারও হাতে আছে! এটা বাংলার সংস্কৃতিবিরোধী।”

বাংলার ভাবাবেগে টোকা দিয়ে ভোটে বাজিমাৎ করার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “বেঁচে থাকলে অরবিন্দ ঘোষ, স্বামী বিবেকানন্দরা দুঃখ পেতেন। বিজেপিকে বহিরাগত বলা, আপনারা বলুন, কংগ্রেস কে তৈরি করেছিল? বামপন্থীরা এত বছর শাসন করেছে। মার্ক্স, লেনিনে আদর্শ বহিরাগত না বাংলার। তৃণমূল কংগ্রেসও। বিজেপির স্থাপনার মূলেই বাংলার চিন্তাভাবনা।

বাংলার সুপুত্র শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আদর্শে তৈরি। বাংলার গন্ধ রয়েছে। বাংলার সংস্কৃতির স্বাদ রয়েছে। বাংলার ডিএনএ-তে বাংলা আছে। বাংলার উপরে ঋণ রয়েছে বিজেপির। এই ঋণশোধ করতে পারব না। বাংলার মাটির তিলক লাগিয়ে তাকে উন্নতির শিখরে পৌঁছব। পদ্মফুলে বাংলার মাটির গন্ধ রয়েছে। লোকসভায় টিএমসি হাফ, এবার পুরো সাফ।”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here