পল্লব দাস,নিউজফ্রন্টঃ
চাঁদে মানুষ বাস করতে পারে না,এর প্রধান একটি কারন সেখানে প্রান বায়ু নেই।পৃথিবীতে জীবকুলের জন্য প্রয়োজনীয় সব রয়েছে;কিছু জিনিস অতিরিক্ত ব্যবহারের
ফলে তার বিপরীত প্রতিক্রিয়া আজ বিপদজনক হয়ে পরেছে জীবকুলের জন্য।
পরিবেশ দূষণ বর্তমানে একটি বৃহৎ সমস্যা হয়ে সামনে আসছে ভারত তথা গোটা বিশ্বে।সব জেনেও মন্থর ব্যবস্থা গ্রহণ কি আদতে ধ্বংসের আহ্বান!
ডাবলু এইচ ও -এর একটি রিপোর্ট এ জানানো হয়েছিল গোটা বিশ্বে ৭ মিলিওনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বায়ু দূষণের কারনে।
বায়ুদূষণের ফলে হওয়া এই মৃত্যুর হার ধূমপানের ফলে মৃত্যুর হারের থেকেও অনেক বেশি; ২০১৫ সালে কিছু পরিবেশ বিজ্ঞানীর গবেষণায় এরকমই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।
ভারত দ্রুত এগিয়ে আসছে অর্থনৈতিক উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে।অন্যদিকে শিল্প বাণিজ্যে অগ্রগতির সাথে সাথে পরিবেশ দূষণে রাজধানী দিল্লি বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শহর হয়ে উঠেছে যা সত্যিই মারাত্মক।বিশ্বের দূষিত শহরগুলির মধ্যে বেশির ভাগই ভারতের শহরের নাম উঠে আসছে।এর মধ্যে সবার আগে রয়েছে কানপুর শহরের নাম।রাজধানী দিল্লি ও ফরিদাবাদও রয়েছে তালিকায়।
বায়ু দূষণের ফলে হওয়া রোগ সর্বাগ্রে প্রভাব ফেলে শিশুদের ওপর।দিল্লিতে শিশুদের মধ্যেই বেশি ফুসফুস সংক্রান্ত রোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।অসুবিধা বাড়লে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা কিন্তু আমাদের দেশে এমন অনেক শিশু আছে যাদের পরিবার দরিদ্র যার জন্য ভাল মাস্ক কেনার আর্থিক অবস্থা তাদের নেই।
এদিকে বায়ু দূষণের ফলে বেড়ে চলেছে রক্ত উচ্চ চাপ,হৃদরোগ,ফুসফুসের প্রদাহ জনিত রোগ এমনকি ক্যানসারের সম্ভাবনাও আছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
এমন অবস্থার কারন কি ? দূষণ নিয়ন্ত্রনের দিকে নজর না দিয়েই চলেছে শিল্পায়ন যার ফল আজকের এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে দেশ।শিল্পের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ইউরোপ আমেরিকার অনেক দেশ শিল্প প্রযুক্তির ওপর ভর করে উন্নতির শিখরে;তবে শিল্পের পরে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রনে যথেষ্ট কাজ করেছে পাশ্চাত্যের দেশগুলি।সেখানে পরিবেশ দূষণমুক্ত করতে পর্যাপ্ত আইনি ব্যবস্থা রয়েছে এবং তা কার্যকরী করতে তারা যথেষ্ঠ সক্রিয় ভুমিকা পালন করেছে।ভারতে পরিবেশ আইনবিধিকে মূলত বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে স্বেচ্ছাচার করা হয়।গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ায় বর্তমানে আইনবিধি লাঘু করা এবং সেই নিরিখে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার সাথে সাথে কলকারখানার বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা সঠিক নিয়মে হওয়া উচিত।মুনাফার স্বার্থে পরিবেশে বিষ ছড়িয়ে দেওয়া আটকাতে না পারলে খুব বেশি দিন নেই যখন পৃথিবীতে বেঁচে থাকা দুষ্কর হয়ে উঠবে।
দিল্লিতে ইতিমধ্যেই অ্যাটমোসফেরিক পার্টিকুলেট ম্যাটার ২.৫ ,যার মানে বিপদসীমা থেকে অনেক বেশি দূষিত দিল্লির বায়ু।তবে এবিষয়ে সত্যিই যাদের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত রাজনৈতিক দলগুলি নেতা মন্ত্রী তারা কি করছেন?
আমাদের দেশে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে লোকসভা নির্বাচন।স্বাভাবিক ভাবেই সরকার গড়ার আগে নির্বাচন জেতার জন্য চলে জোর প্রচার,আর সেই প্রচারে উঠে আসে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির লহমা।ঠিক তেমনি উন্নয়নের বিশেষ কিছু বিষয়কে সামনে নিয়ে সার্থক করতে চাওয়ার অঙ্গিকার করে প্রচারে জায়গা পায় ধার্মিক,সামাজিক,গোষ্ঠীভিত্তিক,অথবা কোন সার্বজনীন স্বার্থে পরিবহণ বা আর্থিক উপচার প্রসঙ্গ।ভোটে ক্ষমতায় আসার পর অন্যান্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলেও পরিবেশ নিয়ে জোরালো আন্দোলনের সময় মেলেনা কারো।সে শাসক দল হোক বা বিরোধীরা।রাস্তায় নেমে কিছুদিন ধুলো আবর্জনা পরিষ্কার করে বা কিছু প্রকল্প চালু করার পর সব দায়িত্ব শেষ হয় না।একজন বিশিষ্ট পরিবেশবিদকে পরিবেশ দূষণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে আন্দোলনের বিষয়ে বলা হলে তিনি বলেন সেটা যথেষ্ঠ হবে না কারন ৮০ শতাংশ মিউনিসিপ্যালিটি তাদের নিজের কাজ করেন না।
আরও পড়ুনঃ অকেজো একমাত্র কল,নদীর নোনা জল মেটায় তৃষ্ণা
বিশ্ব ব্যাঙ্কের একটি তথ্য অনুযায়ী ভারত প্রতিবছর দূষণের দরুন হওয়া স্বাস্থ্য হানির জন্য ২.১বিলিয়ন ডলার খরচ করে থাকে।যা জিডিপি এর ৮.৫ শতাংশ।শাসক হোক বা বিরোধী দল নেতা সবুজায়নে ঘেরা হেক্টরের পর হেক্টর বিস্তীর্ণ জায়গায় বসবাস করেন, তাঁরা নিউজ পেপার টেলিভিশনে এ ছবি শুধু দেখেন দূষণের কথা শোনেন বর্তমানে দূষণ দ্বারা তাঁরা প্রভাবিত নন।হয়ত তাই নির্বাচনী বিষয়সূচির মধ্যে জায়গা পায় না পরিবেশ আন্দোলন।অন্যদিকে যে যমুনা নদীর তীরে গড়ে উঠেছে দিল্লি,সেই যমুনা নদী পৃথিবীর অন্যতম মলিন নদী বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।সব দেখে শুনে নির্লিপ্ত রাজনৈতিক দল গুলি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584