শরীয়তুল্লাহ সোহন, ওয়েব ডেস্কঃ
সালটা ২০১৪! চারিদিকে একটাই কলরব আপকে বার মোদী সরকার। রেকর্ড গড়ে ক্ষমতায় আসলেন বিজেপির তত্ত্বাবধানে এনডিএ জোট সরকার। দেশের জনগণ এক উন্নতশীল দেশ গড়ার স্বপ্নে বুঁদ হয়ে পরিবর্তন আনলেন ক্ষমতার মসনদে। বিজেপি তাঁর প্রকাশিত ইস্তেহারে ঘোষণা করেছিলেন একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি, তাঁর মধ্যে অন্যতম ছিল দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ১৫ লক্ষ টাকা করে প্রদান এবং বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনা। এছাড়াও ছিল নানা চমক, তাঁর মধ্যে একটি হলো বছরে ২ কোটি করে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি।
মাঝখানে একবার ২০১৯ সালে আবারও ভোট হল, আবার আসলেন ক্ষমতায়। আছেন এখনও ক্ষমতায়। কিন্তু বিগত সাত বছরে আমরা কি পেলাম দেশের জনগণ এই সরকারের কাছ থেকে। এর উপর রিপোর্ট করেছেন ফ্রান্সের এক সংস্থা। সংস্থাটি হল প্যারিস স্কুল অব ইকনমিকস অবস্থিত ‘ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাব’। রিপোর্ট তৈরির দায়িত্বে ছিলেন ফ্রান্সের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটি। এই রিপোর্টে বেরিয়ে এসেছে দেশের বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য এবং কঙ্কালসার দশা। এই রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বদরবারে আর একবার মুখ পুড়ল দেশের।
এই রিপোর্টে বলা হয়েছে বর্তমানে “ভারত দরিদ্র দেশ তো বটেই, পাশাপাশি দেশজুড়ে এক দারুণ অসাম্যতা বিরাজ করছে।” আজ প্রকাশিত অসাম্য রিপোর্ট বলা হয়েছে, দেশের নীচের সারির জনগণের হাতে দেশের সম্পদের কিছুই নেই। অথচও ২০২১ সালে মোট পাঁচ ভাগ আয়ের মধ্যে এক ভাগ আয় ভোগ করছেন দেশের এক শতাংশ মানুষ। যারা সরকার পক্ষের সাথে গোপন আঁতাত করে সরকার কে পরোক্ষ ভাবে সমর্থন করে, তারা এই এক শতাংশ মানুষের তালিকায় পড়ে। অন্যদিকে নিচু তলার ৫০ শতাংশ মানুষ মোট আয়ের মাত্র ১৩ শতাংশ নিয়ে বহু কষ্টে দিনযাপন করছেন। রিপোর্টের মুখ বন্ধ কলমে দেশের নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায় এবং এস্তার ডুফেলা লিখেছেন, “বিশ্বের যে সমস্ত দেশে অসাম্য, দারিদ্র্যতা বিরাজ করছে, ভারত তাদের মধ্যে অন্যতম।” মোদী জমানায় অসাম্য কতটা গভীরে সেটা তুলে ধরতে গিয়ে সরকারি রিপোর্ট এর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ফেসবুকের বিরুদ্ধে ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের
গত তিন বছরে সরকার যে অসাম্য ও দারিদ্র্যতার উপরে রিপোর্ট করেছেন তা সম্পূর্ণটাই উদ্দেশ্য প্রণীত এবং গুণগতভাবে খুবই খারাপ মাপের। তাই সাম্প্রতিক সময়ে অসাম্যর ছবিটা কতটা, কিভাবে বদলেছে, তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়েছে। অর্থনীতিবিদরা রিপোর্টে বলেছেন, যেখানে কোভিড সঙ্কটে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে , সেখানে বিশ্বজুড়ে কোটিপতিদের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছ। বিশ্বের ২৭৫০ জন কোটিপতিদের হাতে মোট ১৩ শতাংশ সম্পত্তি আছে। ১৯৯৫ সালে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল এক শতাংশ। সরকারের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে এই কোভিডের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ধনীরা আরও ফুলে ফেঁপে উঠেছে। যা দেশজুড়ে অসাম্য-এর চিত্র প্রকট করে তুলেছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে বিট্রিশ জমানায় এমন বৈষম্য প্রকট ছিল। সেখানে ১০ শতাংশ মানুষের হাতে মোট আয়ের ৫০ শতাংশ চলে যেত। বর্তমানে সেই পথে দেশ আবারও এগোচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ দুই মহিলা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ত্রিপুরা পুলিশের আইনি কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584