পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
পৌষ উৎসব হচ্ছে তবে পৌষ মেলা নেই, এ যেন মন খারাপের শান্তিনিকেতন! মানুষের রুজি রোজগারে টান মারলো করোনা, সেই কারণে এবার বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার শতবর্ষে ও পৌষমেলায় ছেদ পড়লো বিশ্বভারতীতে। তবে ঐতিহ্য মেনে একান্ত ঘরোয়া ভাবেই বিশ্বভারতীতে পৌষ উৎসব পালিত হল ।
আজ ৭ পৌষ ছাতিমতলায় উপাসনার মধ্য দিয়ে সূচনা হলো পৌষ উৎসবের।বিশ্বভারতী সূত্র মারফত জানা গেছে, ১৮৪৩ সালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ঠিক করলেন, দীক্ষিত ব্রাহ্মদের নিয়ে একটি মেলা করবেন। ১৮৪৫-এর ৭ পৌষ, কোলকাতার অদূরে মেলা বসল গোরিটির বাগানে। পরে ১৮৬২ সালে বোলপুরে জনবিরল প্রান্তরের মধ্যে দুটি নিঃসঙ্গ ছাতিম গাছের তলায় মহর্ষি সন্ধান পেলেন তাঁর শান্তিনিকেতনের।
আরও পড়ুনঃ চা-শ্রমিকদের বড়দিনের প্রস্তুতি তুঙ্গে ফালাকাটায়
পরে রায়পুরের জমিদার সিংহ পরিবারের কাছ থেকে মৌরসীস্বত্বে কিনে নিলেন । ১৮৮৮ সালে ২২ মার্চ মহর্ষি শান্তিনিকেতন ট্রাস্টডিড করে লিখলেন, ‘‘ধর্মভাব উদ্দীপনের জন্য ট্রাস্টিগণ বর্ষে বর্ষে একটি মেলা বসাবার চেষ্টা ও উদ্যোগ করিবেন।’’ যে ডিডে পৌষ মেলা করার নির্দেশ রয়েছে। ১৮৯১ সালের ২১ ডিসেম্বর (১২৯৮ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ) শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মমন্দির স্থাপিত হয়।
ব্রাহ্মমন্দিরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্মরণে মন্দিরের উল্টোদিকের মাঠে একটি ছোটো মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।
শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “মহর্ষির ইচ্ছা অনুসারে শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা প্রথম বসল ১৮৯৪ সালে, ৭ পৌষ। মন্দিরের সামনের মাঠে স্থানীয়দের নিয়ে বসে প্রথম পৌষ মেলা। তবে মাঝে দুবার মেলা হয়নি । এবার ও অতিমারীর কারণে পৌষ মেলা করা যাবে না। ”
আরও পড়ুনঃ সোনামুখীতে পুর স্বাস্থ্যকর্মীদের বিক্ষোভ
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারই প্রথম নয় আগেও দুবার পৌষ মেলা হয় নি। ১৯৪৩ সালে মন্বন্তরের সময়। এবং ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলায় দাঙ্গার কারণে। ফের ২০২০ সালে করোনা অতিমারীর কারণে পৌষ মেলা বন্ধ থাকবে। তাই মন খারাপ শান্তিনিকেতনের। বিশ্বভারতীর গবেষক ছাত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন, “পৌষ মেলা আর পাঁচটা মেলার মতো না, পৌষ মেলা কবিগুরুর শান্তিনিকেতনের সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। মেলায় স্থানীয় পণ্য বিপননের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমও।
আরও পড়ুনঃ বালুরঘাটে নবগঠিত পুর প্রশাসক বোর্ডের দায়িত্ব গ্রহণ
শান্তিনিকেতনের প্রবীণ স্বপন কুমার ঘোষ বলেন,” শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠা ও তাকে কেন্দ্র করেই পৌষমেলার সূচনা হয়েছিল সেই পৌষমেলা পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক মানের রূপ নিয়েছে । আজ পৌষমেলা গ্রাম ও শহরের সংস্কৃতি সেতু রচনা করছে। তার উপর এবছর পৌষমেলার শতবর্ষ ।অতিমারীর কারণে পৌষ মেলা বন্ধ। তাই পৌষমেলার কথা ভাবলে মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584