করোনা সেবায় অনভিজ্ঞ নার্সিং পড়ুয়াদের নিযুক্ত করতে মানসিক চাপ দেওয়ার অভিযোগ

0
75

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

মানুষকে সেবার পেশা বেছে নিয়েও করোনা পরিস্থিতিতে এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে নার্সিং ছাত্রীদের। একদিকে করোনার কারণে বাতিল করা হয়েছে কলেজের ফাইনাল ইয়ার সহ বিভিন্ন পরীক্ষা।কিন্তু অভিযোগ, প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই ১ জুলাই থেকে নার্সিং শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে যোগ দিতে বলা হয়েছে। তাদের সেবা করতে হবে করোনা রোগীদেরও।

Nurse | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র

অভিযোগ, এই নিয়ে তারা আপত্তি করলে দেওয়া হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়ার হুঁশিয়ারি। ২২ জুন বেরোনো স্বাস্থ্য ভবনের এক নির্দেশিকার অপপ্রয়োগ করে এই হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ছাত্রীদের।ইতিমধ্যেই ‘অল ইন্ডিয়া ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস অরগানাইজেশন’ বা এডিআইএসও-র পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, অনভিজ্ঞ নার্সিং ছাত্রীদের দিয়ে জোর করে করোনা রোগীর সেবা করানো বন্ধ করতে হবে। রাজ্যে উপযুক্ত প্রশিক্ষিত চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব সামাল দিতে অনভিজ্ঞ ছাত্র-ছাত্রীদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

Press release | newsfront.co

ইতিমধ্যেই নেওটিয়ার বিএসসি নার্সিং কলেজের এক ছাত্রী কোভিড সন্দেহে রাজারহাট ক্যানসার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাকে জোর করা হচ্ছে, এমন অডিও ক্লিপ ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয়েছে। অর্ধপ্রশিক্ষিত নার্সিং ছাত্রীরা নিজে এবং রোগীর পক্ষেও বিপজ্জনক। তা সত্ত্বেও তৃতীয়, চতুর্থ বর্ষের বা ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রছাত্রীদের জোর করে করোনা রোগী সহ অন্যান্য রোগীদের সেবা করতে বাধ্য করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ আগামী বছর জুন পর্যন্ত বিনামূল্যে চাল আটা! প্রধানমন্ত্রীর পালটা ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

ছাত্রীদের অভিযোগ, কলেজ কোনরকম দায়িত্ব নিতে রাজিই নয়। তাদের ওপর মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে অভিভাবকের কাছ থেকে তারা চিঠি লিখে নিয়ে আসি যাতে কোন রকমের ক্ষতি হলে তার দায় সম্পূর্ণভাবে তারা পরিবারেরই থাকবে। এমনকি তাদের সুরক্ষার জন্য পিপিই কিট, মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার সহ সমস্ত কিছুই নিজেদেরকেই কিনতে বলা হচ্ছে। সেক্ষেত্রেও কলেজগুলো কোন রকমের সাহায্য করছে না। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের জয়েন করার পরে নার্সিংয়ের অনেক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আর সেক্ষেত্রেও কলেজ কোনও রকমের দায়িত্ব নিচ্ছে না। এই নিয়ে ডিরেক্টর অফ মেডিক্যাল এডুকেশন অধিকর্তা (ডিএমই) দেবাশীষ ভট্টাচার্য্যকে বারংবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।

আরও পড়ুনঃ মনোবল বাড়াতে জেলায় জেলায় ‘কোভিড ওয়ারিয়র্স ক্লাব’

‘নার্সেস ইউনিটির সহ-সম্পাদিকা সঞ্চিতা সূত্রধর বলেন,”বেশিরভাগ মেয়েদের বাড়ি অনেক দূরে। এরকম অবস্থায় কাজে যোগ দিলে হাসপাতাল তারা কোথায় থাকবে তা নিয়ে নার্সিং স্কুলগুলো বিন্দুমাত্র ভাবছে না। উপযুক্ত হোস্টেলের ব্যবস্থা নেই, থাকলেও তার পরিকাঠামো ব্যবস্থা এতটাই অনুন্নত যে সেখানে থাকার মত পরিস্থিতি নেই। এদিকে ছাত্রীদের হাসপাতালে যোগ না দিলে রেজিস্ট্রেশন আটকে যাবে, এরকম মানসিক চাপও দিচ্ছেন কলেজের প্রিন্সিপালরা।” তাঁর প্রশ্ন, “কোনও রকম সুরক্ষা ছাড়াই এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে তাদেরকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কেন? কর্তৃপক্ষের কাছে নার্সিং ছাত্রীদের জীবনের কি কোনও মূল্য নেই?

এডিআইএসও-র রাজ্য কমিটির সদস্য দীপক গিরি বলেন, ‘অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে নার্সিং ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার পদ্ধতিও এ রাজ্যে বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ প্রশিক্ষণহীন বা অর্ধপ্রশিক্ষিত নার্সিং ছাত্রীদের দিয়ে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই নিয়ে ২৬ জুন ডিএইচএস এর কাছে প্রতিবাদপত্র পেশ করা হয়েছে। অবিলম্বে এই সার্কুলার রদ এবং প্রশিক্ষণ না পাওয়া নার্সিং ছাত্রীদের ওপর জোর খাটানো বন্ধ করা হোক, এটাই দাবি আমাদের।’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here