শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রাজ্যের প্রায় ১০ কোটি মানুষকে স্বাস্থ্য সাথী পরিষেবা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই অনেকেই এই কার্ড পেয়েও গিয়েছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের সঙ্গে সোমবার বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালগুলি স্বাস্থ্য দফতরের তিনটি দাবি করলেন। রাজ্য সরকারের তরফে এই তিনটি দাবি যথাযথ মানা হলে তবেই এই প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতাল গুলির সংগঠন।
স্বাস্থ্য ভবনের ‘ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ারে’র প্রেক্ষাগৃহে এদিন দুপুরে প্রথমে নার্সিংহোম এবং পরে বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাব্যক্তিরা। বৈঠকে উপস্থিত বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমের প্রতিনিধিদের একাংশ জানান, রাজ্যের প্রতিটি পরিবারে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। আর এই প্রেক্ষিতেই তিনটি দাবি রেখেছে বেসরকারি হাসপাতাল গুলির সংগঠন।
আরও পড়ুনঃ বীরভূম সফরে মুখ্যমন্ত্রী, সরব বিশ্বভারতী প্রসঙ্গে
বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দিতে গেলে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিভিন্ন চিকিৎসার যে খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা বাড়ানোর কথা বলেন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা। কী পদ্ধতিতে পরিষেবা দেওয়া হবে, তার একটি রূপরেখা তৈরির পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় বছরে কতজনকে পরিষেবা দেওয়া হবে, তাও নির্দিষ্ট করার কথা বলছেন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের একাংশ। সর্বোপরি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে পরিষেবা দেওয়ার পরে খুব বেশিদিন যাতে টাকা আটকে না রাখা হয়, সেই দাবিও রয়েছে।
বিষয় গুলি নিয়ে খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের সচিব সঞ্জয় বনশল এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।
আরও পড়ুনঃ জল্পনায় জল ঢেলে সুব্রত জানালেন করোনার জেরে স্থগিত মমতার নন্দীগ্রামের সভা
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সরকারকে চাপ দিয়ে নিজেদের আখের ভরানোর জন্যই বেসরকারি হাসপাতালের এই কূটনীতি। এমনিতেই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ অনেকটাই বেশি। এর চেয়েও যদি বাড়ানো হয়, তাহলে তা সরকারি সুবিধার সীমার বাইরে চলে যাবে।
স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেসের সুবিধা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তাতে অনেক রোগের চিকিৎসাই করা সম্ভব। কিন্তু যদি খরচ বাড়ানো হয়, তাহলে অনেক চিকিৎসার সীমা ৫ লক্ষ টাকার বেশি হবে। কিন্তু সেই সময় বেসরকারি হাসপাতালগুলির এই দাবি সাধারণ মানুষের কাছে চিন্তার বিষয়।
আরও পড়ুনঃ ঝাড়গ্রামে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ‘দূর হটো’ স্লোগানে বিক্ষোভ তৃণমূলের
বেসরকারি হাসপাতালগুলির বক্তব্য, রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া দরে এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দিতে গেলে অনিবার্য আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এ কথা বললেও সবার জন্য স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে এখনই আপত্তির সুর তীব্র করতে চাইছেন না বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা। তাঁদের বক্তব্য, ভোট পরবর্তী পর্বে অনেক সমীকরণ বদলে যেতে পারে।
প্রোগ্রেসিভ নার্সিংহোম অ্যান্ড হসপিটালস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ আলহাজউদ্দিন বলেন, “স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা বলছেন, কোনও রোগীকে যাতে ফেরানো না হয়। সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচের যে দর রয়েছে তা বাড়ানোর জন্য আমরা আবদার করেছিলাম।
আরও পড়ুনঃ শ্রম দফতরের বৈঠকে মন্ত্রীদের সামনেই নেতাজি ইন্ডোরে ধুন্ধুমার
স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা আমাদের আবদার পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন।” পূর্বাঞ্চলের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া জানান, প্রয়োজনে প্রকল্পের আওতাভুক্ত বিভিন্ন চিকিৎসার খরচ নির্ধারণে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, “বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করতে হবে না। এ ধরনের কাজে অভ্যস্ত এমন কোনও সংস্থাকে ব্যবহার করা যেতে পারে।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584