আবদুল হামিদ,কলকাতাঃ
নিরাপত্তা ও প্রাপ্য মাইনের দাবীতে কাজে যোগ দিচ্ছে না কর্মচারীরা। ধর্মঘট ডেকেছে তারা। যার জেরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল বজবজের আইওসি গ্যাস বোটলিং প্ল্যান্ট। শনিবার সকাল থেকেই প্ল্যান্টের লোডিং-আনলোডিং বিভাগের কর্মচারীরা ধর্মঘট শুরু করেছে। সূত্রে খবর, বজবজের এই আইওসি-এলপিজি গ্যাস প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ হাজার গ্যাস সিলিন্ডার মার্কেটে আসে। কলকাতা, দুই ২৪ পরগণাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তা সরবরাহ হয়ে থাকে। এই ধর্মঘট চলতে থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ‘সিলিন্ডার সংকট’ দেখা দেবে, এমনই অভিমত বিভিন্ন গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার। অন্যদিকে, প্ল্যান্টের সাথে যুক্ত প্রায় ৩০০ জন কর্মচারীর পরিবারও আর্থিক সংকটে পরতে চলেছে।
বোটলিং সেকসানের এক কর্মচারী আশিকুল সাঁফুই জানিয়েছে, ‘বিষয়টি এখন জটিল আকার ধারণ করেছে। বহুবিধ সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। একদিকে প্রাপ্য মাইনে পাচ্ছি না। হাজরি হওয়ার পরেও কাজ না হলে সেদিনের পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে না। সেইসাথে, প্ল্যান্ট কোনো রকমের নিরাপত্তা নেই। সিলিন্ডারের বেহাল অবস্থার কারণে বারেবারে দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনকি, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া টেন্ডারেই গত ছ’মাস ধরে আমাদের কাজ করতে বাধ্য করছে তারা।।’
আন্দোলনকারী কর্মচারীরা ‘তারা’ বলতে- কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন (আইওসি)’কে বোঝালেও, আইওসি-এলপিজি পশ্চিমবঙ্গের ডেপুটি ম্যানেজার অমলেশ দত্ত তা মানতে নারাজ। তিনি দাবী করেন, ‘আমরা সরকারী নিয়ম অনুযায়ী কর্মচারীদের কোনো কিছু থেকে বঞ্চিত করিনি।’ ধর্মঘট প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘সকালে কিছু আধিকারিক প্লান্টে ঢুকতে পারেনি। এখন তা স্বাভাবিক আছে। প্ল্যান্ট’টি আগামীদিনে চলবে চলবে কিনা তাও বলা মুশকিল। তবে কর্মচারীরা কিছু করে থাকলে তাঁর সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
এদিকে, বজবজ আইওসি বোটলিং প্ল্যান্ট কর্মচারী ইউনিয়ানের সেক্রেটারি, বিজয় মন্ডল জানাচ্ছেন, ‘শুক্রবার বিকালে, সিরাজুল তরফদার নামে এক কর্মচারী প্ল্যান্টের ভিতরেই গুরুতর জখম হন। ঘটনার পরে প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার জন্য সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। মাইনে বন্ধ থাকায় ইএসআই কোনোরকম সুযোগসুবিধাও তারা পাচ্ছেন না। ফলে, আহত সিরাজুল তরফদারকে বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এই ঘটনার পরেই কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।’
বজবজ থানার ওসি, তাপস সিনহাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। সেইসাথে সাব-ইনপেক্টর সুমন বোগী, ‘ধর্মঘট সম্পর্কে কিছুই জানি না’ বলে এড়িয়ে যান। তবে, আগামী ১৫ মে একটি আইওসি কর্তৃপক্ষের সাথে কর্মচারী ইউনিয়ানের একটি বৈঠক হতে পারে। কর্মচারীদের আশা, সেখান থেকে কিছু সমাধান সূত্র মিলতে পারে। কর্মচারী ইউনিয়ান পক্ষ থেকে জানা গেছে, এই বৈঠকে স্থানীয় বিধায়ক অশোক দেবও থাকতে পারেন।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584