পুতিন নন বিলাসবহুল অট্টালিকার মালিক বলে দাবি করলেন কোটিপতি, তোলপাড় রাশিয়া

0
70

নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ

house | newsfront.co
বিতর্কিত প্রাসাদ। ছবিঃ বিবিসি

এই রহস্যজনক প্রাসাদ নিয়ে ২০১২ সালে প্রথম খবর করেন বিবিসির সাংবাদিকরা। ওই প্রতিবেদনে তিনি মি. পুতিনের সাবেক একজন ব্যবসায়িক সহযোগীকে উদ্ধৃত করে করেন, যিনি অভিযোগ করেছিলেন যে এই অট্টালিকা মি. পুতিনের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য তার সুনির্দিষ্ট মাপজোক এবং চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু সেসময় মি. পুতিনের একজন মুখপাত্র এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।

putin | newsfront.co
আর্কাদি রোটেনবার্গ, ভ্লাদিমির পুতিন। ছবিঃ বিবিসি

এমাসের গোড়ায় ক্রেমলিনের সমালোচক এবং বর্তমানে কারারুদ্ধ রাশিয়ার বিরোধী রাজনীতিক আলেক্সি নাভালনি একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করার পর থেকে এই সম্পত্তি নিয়ে রাশিয়ায় বিরাট বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তথ্যচিত্রটিতে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে এই সম্পত্তির মূল্য ১.৩৭ বিলিয়ন বা একশ ৩৭ কোটি ডলার এবং এটির মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে ”ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঙ্কের ঘুষের অর্থ” দিয়ে। এ সপ্তাহের শুরুতে রুশ প্রেসিডেন্ট মি. পুতিন এই প্রাসাদের মালিক তিনি বা তার পরিবারের কোন সদস্য নন বলে সরাসরি এই অভিযোগ নাকচ করে দেন। এবং তিনি ওই ভিডিওটিকে ‘একঘেঁয়ে’ বলে বর্ণনা করেন।

এই প্রাসাদ নিয়ে অভিযোগ ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকসহ রাশিয়ার সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহান্তে মি. নাভালনির সমর্থনে রাশিয়া জুড়ে যে বিক্ষোভ হয়েছে এই প্রাসাদের সঙ্গে মি. পুতিনের জড়িত থাকার অভিযোগ তাতে বড়ধরনের ইন্ধন জুগিয়েছে। বহু বছরের মধ্যে এটাই ছিল মি.পুতিনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।

আর্কাদি রটেনবার্গ রাশিয়ায় বিশাল এক ব্যক্তিত্ব। সেতু এবং গ্যাস পাইপলাইনের মত অবকাঠামো নির্মাণের বিশাল এক সংস্থার মালিক তিনি। ছোটবেলা থেকেই তিনি মি. পুতিনের সাবেক একজন বন্ধু বলে জানা যাচ্ছে এবং এই রুশ ব্যবসায়ী এক সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জুডো খেলার সঙ্গী ছিলেন। গত বছরের শেষ দিকে মি. রটেনবার্গ এবং তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে লন্ডনের বার্কলেস ব্যাংকের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার এবং নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে গোপনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ প্রকাশ পায়। এই রুশ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আমেরিকা ২০১৪ সালে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তখন তাকে “রুশ নেতার ঘনিষ্ঠ মহলের” একজন সদস্য হিসাবে বর্ণনা করেন আমেরিকান কর্মকর্তারা। তারা দাবি করেন যে মি. পুতিনের ঘনিষ্ঠ এই মহল ”পুতিনের প্রিয় প্রকল্পগুলো” বাস্তবায়নে তাকে সাহায্য করছে।

রাশিয়ার এই ধনকুবের ব্যবসায়ী বলছেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নন, কৃষ্ণ সাগরে বিলাসবহুল ওই অট্টালিকার মালিক আর্কাদি নিজেই।

বিশাল এই প্রাসাদ নিয়ে সম্প্রতি চালানো এক তদন্তের খবর গত সপ্তাহেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। দশ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই এই তদন্তের কেন্দ্রে থাকা প্রাসাদের ভিডিওটি দেখেও নিয়েছেন। এ সপ্তাহের গোড়াতে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন তার প্রতিপক্ষ আলেক্সি নাভালনি তার প্রাসাদ দাবি করে যে বিলাসবহুল অট্টালিকার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছেন, সে প্রাসাদ কখনই তার নয়। মি. পুতিনের ঘনিষ্ঠ মি. রটেনবার্গ শনিবার প্রকাশ্যে দাবি করেছেন এটির মালিক তিনি।

আরও পড়ুনঃ ৪ যুবক আধঘন্টায় ৩০ কেজি কমলালেবু খেতেই কমে গেল বিমান ভাড়া!

ভিডিওতে অভিযোগ করা হয় কৃষ্ণ সাগরের তীরে এই প্রাসাদোপম অট্টালিকার অর্থায়ন করেছেন মি. পুতিনের কোটিপতি বন্ধুরা। বলা হয় এই প্রাসাদে রয়েছে জুয়া খেলার ক্যাসিনো, বরফের ওপর স্কেটিং করার রিংক এবং আঙুরের ক্ষেত।

মি. রটেনবার্গকে উদ্ধৃত করে তার তথ্য দপ্তর জানায়, “কয়েক বছর আগে এই অট্টালিকার সঙ্গে জড়িত কিছু পাওনাদারের সঙ্গে আমার একটি চুক্তি হয় এবং কয়েক বছর আগে এই সম্পত্তির মালিকানা আমার হাতে আসে।”

আরও পড়ুনঃ মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্ল হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্তকে মুক্তি পাক সুপ্রিমকোর্টের

মি. রটেনবার্গ এই প্রাসাদ তার বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা এসেছে ক্রেমলিন পন্থী ম্যাশ টেলিগ্রাম নামে একটি চ্যানেলে পোস্ট করা একটি সাক্ষাতকারের মাধ্যমে। এরপর এই খবর নিশ্চিত করে খবর প্রকাশ করেছে ইন্টারফ্যাক্স সংবাদ সংস্থা।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here