শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনায় পশ্চিমবঙ্গে সুস্থতার হার বাড়লেও মৃত্যুর হার এখনও জাতীয় গড়ের থেকে বেশি। আর এই বিষয়টি সবচেয়ে চিন্তায় রেখেছে স্বাস্থ্যকর্তা থেকে প্রশাসনিক আধিকারিকদের। এবার সেই কারণে সমস্ত কোভিড হাসপাতালগুলিকে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করতে নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের ৭৮টি কোভিড হাসপাতালের প্রত্যেকটিতে তাই বিশেষ দল গঠন করা হচ্ছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, এক সময়ে পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মৃত্যুর হার দেশের মধ্যে শীর্ষে ছিল। সেটা বদনাম এখন অবশ্য ঘুচে গিয়েছে। অনেকটাই কমেছে। বড় রাজ্যের মধ্যে মহারাষ্ট্র (৪.৭%) ও গুজরাত (৫.৯%) পশ্চিমবাংলার চেয়ে বেশি। কিন্তু এখনও বাংলার মৃত্যুর হার (৩.৮ শতাংশ) জাতীয় গড়ের (৩.১ শতাংশের) চেয়ে বেশি। প্রত্যেকদিনই গড়ে পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু হচ্ছে ১১ জনের। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় মৃত্যু হার ৫.৩ শতাংশ। শুধু কলকাতাতেই সেটা ৬.৯ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ জন করোনা আক্রান্ত হলে ১৪ জন মারা যাচ্ছেন। তবে মে মাসে মৃত্যু হার ছিল ১২.৮ শতাংশ। সেখান থেকে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে রাজ্য।
প্রাথমিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রথম দিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়ে গিয়েছে। ফলে পরে রোগীর স্বাস্থ্যের অবনতি আটকানো যাচ্ছে না। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এদিন প্রকাশ করা বিবৃতিতে দাবি, সময় মতো চিকিৎসা দিতে পারলে মৃত্যুহার অনেকটাই কমানো যেতে পারে। রাজ্যের ৭৮টি কোভিড হাসপাতালেই তাই বিশেষ দল গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ বেসরকারি স্কুলে ফি কমানোর দাবীতে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি অভিভাবক সংগঠনের
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, প্রতিটি ক্যুইক রেসপন্স টিমে থাকবে একজন অ্যানেস্থেটিস্ট, মেডিক্যাল অফিসার, হাউস স্টাফ, বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নার্স ও একজন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি। ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকবে এই দল। ইতিমধ্যে বেশ কিছু হাসপাতালে এমন দল পরীক্ষামূলক ভাবে নিযুক্ত করা হয়েছে। এবার তা রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ সিবিএসই পরীক্ষা বাতিল, ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের
মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই দাবি করে এসেছেন যে, প্রথম থেকে হাসপাতালগুলি কো-মরবিডিটি অর্থাৎ অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতার পরিস্থিতির ওপর খেয়াল রাখলে, অনেক কম লোক মারা যেতেন। কারোর কো-মরবিডিটি আগে থেকেই থাকলে তাকে বাঁচানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তথ্যের হিসাব অনুযায়ী, ২৪ জুন অবধি রাজ্যে করোনা পজিটিভ অবস্থায় ৫৯১ জন মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে ৪৩৭ জন অর্থাৎ প্রায় ৭৩ শতাংশ কো-মরবিডিটির শিকার। তাই বেশি পরিমাণে শারীরিক অসুস্থ এবং কো-মরবিডিটির শিকার করোনা রোগীদের ওপর বিশেষ নজর রাখতে তৈরি করা হচ্ছে এই টিম। এতে রাজ্যের মৃত্যুহার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা স্বাস্থ্যকর্তাদের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584