উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
সকালে প্রাতঃভ্রমণে বের হয়ে চমকের ইঙ্গিত দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর দুপুরেই মিলল ফল। শুক্রবার সকালে ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে বের হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘অমিত শাহ মানেই চমক।’
দিলীপ ঘোষ সম্ভবত বলতে চেয়েছেন, অমিত শাহ আসা মানেই চমক। তাঁর সভাতেই তৃণমূলের অনেক বিধায়ক, সাংসদ বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন। দিলীপ ঘোষের এই ভবিষ্যত বার্তা আসার সঙ্গে সঙ্গে এদিন বেলা বারোটার মধ্যেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ডোমজুড়ের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন।
শুধু বিধায়ক পদ নয়, এমনকী তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদও ছেড়ে দেন এই নেতা। এর আগে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, যেখানেই থাকেন তিনি রাজনীতিটা চালিয়ে যাবেন। তার মানে রাজীবের বিজেপি যোগের জল্পনা আরো সুদৃঢ় হল। আর সম্ভবত দিলীপ ঘোষ বলতে চেয়েছেন, হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত তৃণমূলের বিধায়করা বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন। এটাই অমিত শাহের চমক।
দু-দিনের বঙ্গ সফরে শুক্রবার রাতেই কলকাতায় আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই সফরে কারা যোগ দিতে চলেছেন বিজেপিতে, তা নিয়েই এখন রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে। গতবার অমিত শাহর সভামঞ্চ থেকে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী, সুনীল মণ্ডল-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা। এবার ৩১ জানুয়ারি হাওড়ার ডুমুরজলায় সভা করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
আরও পড়ুনঃ আইপিএস হুমায়ুন কবিরের ইস্তফা
বৃহস্পতিবারই জানা গিয়েছিল অমিত শাহের সভাতেই সম্ভবত পদ্মশিবিরে যোগ দিতে চলেছেন তৃণমূল থেকে সদ্য বহিষ্কৃত বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তবে একজন নয়, তালিকাটা বেশ লম্বা বলেই খবর বিজেপি সূত্রে। উঠে আসছে হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীর নামও। বিক্ষুব্ধদের তালিকায় তাঁর নামও ওপরের দিকেই রয়েছে।
রয়েছে উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের নাম। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক রাজীব ব্যানার্জিও। তবে সবটাই এখনও জল্পনার স্তরে। সত্যিই কারা দলবদল করবেন, তা জানতে অপেক্ষা মাত্র দু-দিনের।
আরও পড়ুনঃ অভিনেত্রীকে ‘যৌনকর্মী’ মন্তব্যে ক্ষমা চাইল বিজেপি
এদিকে গতকাল মুকুল রায়ের ইঙ্গিত, তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতাদের অনেকেই যোগ দিতে চলেছেন গেরুয়া শিবিরে। আর অমিত শাহ মানেই চমক। মন্তব্য দিলীপ ঘোষের। এবার তাঁর বঙ্গসফরে কারা যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে, তা অবশ্য খোলসা করেননি বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তাঁর ছোট্ট জবাব, লিস্ট বেশ ভারী।
প্রায় প্রতিদিনই প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে নানা ইস্যুতে শাসকদল, মুখ্যমন্ত্রীকে তুলোধনা করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। শুক্রবারও তার অন্যথা হল না। এদিন ইকোপার্ক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নেন দিলীপ। অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। বলেন, “মমতা কোনও প্রতিশ্রুতি পালন করেননি। সেই কারণে মানুষ হতাশ হয়ে গিয়েছে। সকলের সহ্যের সীমা পেরিয়ে গিয়েছে।“
পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, “ওরা অনেক সহ্য করেছে। এভাবে চলতে পারে না।“ ক্ষমতায় এলে পার্শ্বশিক্ষকদের সুবিচারের চেষ্টা করবেন বলেও এদিন জানান দিলীপ ঘোষ। তিনি সরব হন পে কমিশন নিয়ে। অভিযোগ করেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজের সুবিধা করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলছেন।“
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584