নিউজফ্রন্ট, ওয়েব ডেস্কঃ
বেসরকারিকরণ হচ্ছেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস একটি ইকনমিক কনক্লেভে বৃহস্পতিবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন একথা। এদিন তিনি বলেন, ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ প্রসঙ্গে সরকারের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আলোচনা চলছে, খুবই দ্রুত হবে বেসরকারিকরণ।
আপাতত আলোচনা চলছে বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে। শক্তিকান্ত দাস আশ্বাস দিয়েছেন, ব্যাঙ্কের আর্থিক শক্তি, তহবিল এবং বিধিনিয়ম শক্তপোক্ত করাই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্য। হঠাৎ এই আশ্বাসের কারণ কি তা নিয়ে দেশজুড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলির গ্রাহক এবং ব্যাঙ্ককর্মীদের মধ্যে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। উঠে আসছে একগুচ্ছ প্রশ্ন।
প্রথমে ২০১৭ সাল থেকে একের পর এক পর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে অন্য ব্যাঙ্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা হল, এবার পরবর্তী ধাপে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বেসরকারিকরণের পথে অগ্রসর হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। কোন কোন ব্যাঙ্ক বিক্রি করা হবে, সেটাই এখন জল্পনার মূল বিষয়। কিন্তু সমস্যা হল, সংযুক্তিকরণের পরও একাধিক ব্যাঙ্ক পরিষেবার বেহাল দশা। কারণ, নতুন করে চেক ইস্যু করা হচ্ছে, আইএফএস কোডও বদলে যাচ্ছে। আর এই সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতায় আটকে যাচ্ছে গ্রাহকদের অতি সাধারণ ব্যাঙ্ক লেনদেনও।
আরও পড়ুনঃ ২৬ মার্চের ভারত বন্ধে দেশবাসীকে সামিল হওয়ার আর্জি সংযুক্ত কিষান মোর্চার
এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন হল ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ হলে গ্রাহকদের গচ্ছিত আমানতের ভবিষ্যৎ কী হবে? ব্যাঙ্ককর্মীদের পেনশন, অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা একইরকম থাকবে কিনা। চাকরির নিশ্চয়তা আদৌ থাকবে কিনা! এইসব নিয়ে বিভ্রান্ত গ্রাহক থেকে কর্মী সকলেই।সম্প্রতি নীতি আয়োগের প্রস্তাব, আর্থিক স্বাস্থ্য ফেরাতে যে ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণ করা হল, তাদের এখন বেসরকারিকরণের প্রয়োজন নেই।
আপাতত দু’টি ব্যাঙ্ক এবং একটি বিমা সংস্থাকে বিক্রি করা হবে। কিন্তু এভাবে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তে বিশেষত ডিপোজিট ইনসিওরেন্স কভারের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে। ডিপোজিট ইনসিওরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন আইন অনুযায়ী, একজন গ্রাহকের ব্যাঙ্কে যত টাকাই জমা থাকুক (সেভিংস, কারেন্ট, ফিক্সড ডিপোজিট), ব্যাঙ্ক যদি আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়, তাহলে সর্বাধিক ৫ লক্ষ টাকা পাবেন সেই গ্রাহক।
আরও পড়ুনঃ এপ্রিলের মাঝামাঝি করোনা সংক্রমণের সংখ্যা হতে পারে সর্বোচ্চ, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর এই নিয়মের জেরে গ্রাহকের ভবিষ্যৎ কী হবে? ইতিমধ্যেই ইয়েস ব্যাঙ্ক, পিএমসি ব্যাঙ্কের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর আরো বেশি করে উঠছে এই প্রশ্ন।
যদিও অর্থমন্ত্রকের প্রতিশ্রুতি, গ্রাহক ও ব্যাঙ্ককর্মীদের উপর বেসরকারিকরণের কোনও প্রভাব পড়বে না। সংসদে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, ব্যাঙ্ক কর্মীদের সবরকম সুযোগ-সুবিধা থাকবে। গ্রাহকদেরও আশঙ্কার প্রশ্ন নেই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কও বলেছে, ভারতের ব্যাঙ্কিং সেক্টর যথেষ্ট শক্তিশালী।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে আর্থিক স্বাস্থ্য যদি এতই ভালো, তাহলে সেগুলো সরকার হাতে না রেখে বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে কেন? সরকার বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছে ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলি।তবে, কেন্দ্র এবং বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এর গভর্নর দু’তরফ থেকে একটাই বার্তা স্পষ্ট যে, অদূর ভবিষ্যতে ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ হচ্ছেই এবং এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584