নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদঃ
গতকাল সন্ধ্যায় জলঙ্গী থানার অন্তর্গত ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার টলটলিতে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় তিনজনের। মৃত তিনজনের মধ্যে দুইজন স্থানীয় বাসিন্দা মিন্টু মন্ডল(১৭), নান্টু মোল্লা(৩৮)।
অপরজন ছবি বিশ্বাস। জানা যায় মৃত ছবি সেখ বোমা বাঁধার কারিগর। নির্মীয়মাণ ফাঁকা বাড়িতে এই বিস্ফোরণ ঘিরে সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য।
আজ সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার। পৌঁছায় দমকল বাহিনী, প্রশাসনের বোম্ব স্কোয়াড টিম এবং সি আই ডি’র আধিকারিকরা।
উদ্ধার হয় প্রায় ৮৪টি বোম। মৃতরা এলাকায় সমাজ বিরোধী কার্যকলাপের সাথেই যুক্ত বলে জানা যায়। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষ।
কিন্তু কি কারনে ঘটল এই ঘটনা?
আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকার মত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখ এড়িয়ে কিভাবে মজুত হল এত বোমা। বারুদের সেই স্তুপে গিয়ে খোঁজ নিল নিউজফ্রন্ট।
ঘটনায় সরাসরি অভিযোগের তীর শাসক দলের দিকে। নাম উঠে আসছে তৃণমূল বিধায়ক সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের।চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল এলাকাবাসীর মন্তব্য থেকে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের বক্তব্য, যে সমস্ত দুষ্কৃতীরা গতকাল মারা গিয়েছেন তারা নানান রকম সমাজবিরোধী কাজের সাথে যুক্ত ছিল। সীমান্তে চোরা চালানও তাদের কুক্ষিগত ছিল। দীর্ঘদিন ধরে তারা গরু পাচার থেকে ফেনসিডিল পাচার সবকিছুই করতো।
এমনকি বোমা বাধাঁরও কাজ করত। পূর্বে এদের হাতেই ঘাটের দখলদারি ছিল।
সেই দল ভেঙে যাওয়ায় ঘাটের দখল ঘিরে বাঁধে দ্বন্দ্ব।
গতকাল যে বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছে সেখানে ৫ থেকে ৭ জন উপস্থিত ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। তিনজনের মৃত্যু হলেও বাকিদের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সূত্রে অনুমান তারা গা ঢাকা দিয়ে আছে।
দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যে এতটাই ভীত সাধারণ মানুষ যে, গতকাল সন্ধ্যায় বিস্ফোরণের আওয়াজ পেলেও কেউ বেরিয়ে আসেনি।
সরাসরি অভিযোগ আসে যে যারা মারা গেছেন আহত হয়েছেন তারা সকলেই বর্তমান পঞ্চায়েত দখলদারীদের লেঠল বাহিনী, লাঠি ভোটে (পড়ুন পঞ্চায়েত নির্বাচনে) জিতে তারা হয়ে ওঠে অপ্রতিরোধ্য এবং তাদের সহায়তা করছে স্থানীয় বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক। এমনকি বিস্ময়কর তথ্য এই যে সাংসদ আবু তাহের খান এর নামক জড়িয়ে পড়ছে ঘটনায়। তাদের বক্তব্য তৃণমূলের হয়ে নানান রকম অসামাজিক ক্রিয়াকলাপে এরা যুক্ত ছিল।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অন্যান্য দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এটাকে রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করলেও এখানে তৃণমূলের কোন দখলদারি নেই। এরা কেন কি কারণে বোমা বাঁধছিল তা জানা নেই।
আরও পড়ুনঃ জলঙ্গীতে নির্মীয়মাণ ফাঁকা বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণে মৃত ৩
এ বিষয়ে সাংসদ আবু তাহের আমাদের প্রতিনিধিকে ফোনে জানান, কে কোথায় পাচার বা বোমা বাঁধতে গিয়ে কি করবে এ বিষয়ে দল কি করবে? ঐ সমস্ত দুষ্কৃতীদের সাথে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তার জন্য দলের কোনো দায়িত্ব নেই, এম.পি. র কোনো দায়িত্ব নেই। একটায় কথা বলব প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেক, শক্ত হাতে বিষয়টি দেখুক এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584