শুধুই মাল্যদান, অবহেলিত স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি

0
55

নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

লক্ষ্মী পূজার অনুষ্ঠানে এসে স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সংগ্রামীর জন্ম ভিটা ভুলে গেলেন জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ও প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। এমনই দৃশ্য লক্ষ্য করা গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় ব্লকের ১৬ নম্বর হেমচন্দ্রপুর অঞ্চলের রাধানগর গ্রামে।

মাল্যদানেই শেষ..? উঠছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

সোমবার বিকালে লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে রাধানগর গ্রামে একটি ক্লাবের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী।

অনুষ্ঠানের ঠিক আগে বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী হেমচন্দ্র কানুনগো, যার আসল “নাম হেমচন্দ্র দাস কানুনগো” র মূর্তিতে মাল্যদান করেন তারা।

বনপতি কানুনগো, হেমচন্দ্র কানুনগোর পরিবারের সদস্য। নিজস্ব চিত্র

কথিত আছে ১৯০৭ সালে জার্মানির স্টুয়ার্ট গার্টএ বিশ্ব সমাজতন্ত্রী সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধি হয়ে মাদামকামা ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা ধরে সাম্রাজ্যবাদী বিরোধীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছিলেন। সেই পতাকা তৈরি করেছিলেন শিল্পী হেমচন্দ্র কানুনগো। এদিন উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার আগে হেমচন্দ্র কানুনগোর জন্মভিটায় যে মূর্তি রয়েছে তাতে মাল্যদান করেন জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাক্তন সাংসদ শিশির অধিকারী।

কিন্তু একবারও তাঁর জন্ম ভিটা ঘুরে দেখলেন না। এখন কি অবস্থায় রয়েছে সেই স্বাধীনতা সংগ্রামী হেমচন্দ্রের জন্মভিটা লক্ষ করার প্রয়োজন বোধ করলেন না তারা।

কোন এক রাজনৈতিক কারণে যেখানে বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে ও গ্রাম সেজে উঠল সেখানে একই জেলায় অবস্থিত স্বাধীনতার বীর সন্তান হেমচন্দ্র কানুনগোর জন্মস্থান ও বসতবাটি অবহেলিত কেন? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে জীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এই স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্মভিটা। নজর নেই প্রশাসনের।

হেমচন্দ্রের পরিবারের এক সদস্য জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থায় রয়েছে হেমচন্দ্রের জন্মভিটা। বহুবার এলাকাবাসী প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি। আজ আমাদের এখানে একটি ক্লাবের অনুষ্ঠানে মন্ত্রীরা আসবে জানিয়ে ছিল তাই আগে থেকে মূর্তিটিকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যখনই কোন এখানে অনুষ্ঠান হয় এইভাবে সাজানো হয়।

জিতেন্দ্র ভক্তা,স্থানীয় বাসিন্দা। নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামোল্লেখ ভারতীর মুখে

আজও সেই ভাবে সাজিয়েছি। আজকেও মন্ত্রীরা এসেছিলেন বিধায়ক ও ছিলেন তারা মাল্যদান করে গেছেন। এভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় মাল্যদান করা হয়। কিন্তু সরকারিভাবে কোনো উন্নয়ন হয়নি ।আজকে ও মন্ত্রীরা এখানে এসে মাল্যদান করে চলে গেছেন। বসতবাড়িতে ঢোকেনি।’

যেখানে ইতিহাসের পাতায় পরিস্ফুট হেমচন্দ্রের জন্মভিটা সেস্তানে এসেও একবারও লক্ষ্য করলেন না তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বরা। সেখানে সরকারি উন্নয়ন হবে কি করে ?এটি এখন প্রশ্ন চিহ্ন স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে।

স্থানীয় বাসিন্দা জিতেন্দ্র ভক্তা জানান, ‘এইভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নেতা-মন্ত্রীরা আসে।মাল্যদান করে চলে যায়।এখানে হেমচন্দ্র কানুনগোকে নিয়ে কেউ কোন কিছু করেনি। আমরা চাই এই স্থান টিকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা হোক।’

তবে যাই হোক স্বাধীনতা সংগ্রামের এই বীর বিপ্লবী হেমচন্দ্র কানুনগোর বসতবাটিকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলার জন্য সরকার কবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সেই দিকে তাকিয়ে এলাকাবাসীরা।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here