শ্যামল রায়,কালনাঃ
মন্তেশ্বর ব্লক কে রেলের মানচিত্রে আনার দাবিতে শাসক দল তৃণমূল যেভাবে সরব হয়েছে তেমন ভাবেই ভারতীয় জনতা পার্টিও রেল পথের দাবিতে সরব হয়েছে।তাই কেউ কাউকে জমি ছাড়তে রাজি নয় ভোটের মুখে।
মঙ্গলবার মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকায় দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা সমর্থনে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির এক বিশাল সমাবেশ ঘটে।এই সমাবেশে মমতাজ সংঘমিত্রা অভিযোগ করেছেন যে তিনি সংসদ এ বারবার মন্তেশ্বর ব্লককে রেল মানচিত্রে আনার দাবিতে সরব হলেও কেন্দ্র সরকার আজও সেই দাবির প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখায়নি।অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সময়কালে রেলমন্ত্রী ছিলেন তখন এই মন্তেশ্বরকে রেলপথের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অর্থমঞ্জুর করেছিল সমীক্ষার জন্য।সেই কাজ আজও হয়নি বলে অভিযোগ।জানা গিয়েছে যে একদিকে পূর্ব বর্ধমানে লোকসভা কেন্দ্র অন্যদিকে দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্র অর্থাৎ পূর্ব বর্ধমান লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত ১৬ টি বিধানসভা থাকলেও ১৫ টি বিধানসভার মধ্যে রেলপথের কোন না কোন অংশ বিভিন্ন স্থান ছুয়ে গিয়েছে কিন্তু একমাত্র মন্তেশ্বর বিধানসভা ঘিরে কোনরকম রেলপথের সুযোগ নেই।তাই এলাকার বাসিন্দাদের রেলপথে কোথাও যেতে হলে মেমারি,নবদ্বীপ বা কালনা কাটোয়া হয়ে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ট্রেন ধরতে হয়।
অন্যদিকে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে মন্তেশ্বর এলাকায় রেলপথের দাবিতে সরব হলেন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাদের সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাও।এদিন সাংসদ মমতাজ সংঘমিতা এবং শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি তপন পোড়েল সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর প্রমুখ বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন যে কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির কারণেই মন্তেশ্বর রেলপথ তৈরি হচ্ছে না অথচ মুখ্যমন্ত্রী এখানে রেলপথ বারবার চেয়ে ছিলেন।
এই সমাবেশে সরকারের উন্নয়নে শাসক দলের প্রধান হাতিয়ার বলে উল্লেখ করেছেন উপস্থিত নেতারা সাধারণ মানুষ বিভিন্ন ধরনের সরকারি পরিষেবা পেয়ে আজ অনেকটাই খুশি এবং উন্নয়নে তারা সরকারের পক্ষেই আছেন তাই বিরোধীদের চিৎকার-চেঁচামেচি কোনোভাবেই সফল হবে না বলে মনে করেন তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা।
অন্যদিকে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী পরেশ চন্দ্র দাস এবং দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী এলাকায় ভোটের প্রচার করেন সেইসাথে শাসক দলের ব্যাপক দূর্নীতির কথা তুলে ধরেন।এই অঞ্চলে রেলপথের প্রয়োজন রয়েছে যথেষ্ট তাই শাসকদলের যারা সাংসদ রয়েছে তারা কখনোই কেন্দ্রের রেলমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি অর্থাৎ তৃণমূল কখনোই ব্যাপক উন্নয়নমুখী কাজ হোক চায় না শুধুমাত্র নিজেদের দলীয় ক্যাডারদের উন্নয়ন করেন তৃণমূলের নেতারা।ভারতীয় জনতা পার্টির মন্তেশ্বর ব্লকের বিজেপি নেতা রাজেশ রায় অভিযোগ করেছেন যে,”আমাদের প্রার্থী তৃণমূলের সন্ত্রাসকে হাতিয়ার করেই ভোট প্রচারে নেমে পড়েছেন।তৃণমূলের ব্যাপক সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করে আমাদের কর্মী সমর্থকরা গ্রামে গ্রামে প্রচার অভিযানের সামিল হয়েছেন শুধুমাত্র পুলিশের ভয় দেখিয়ে রাতের অন্ধকারে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ভোট করতে চাইছে যা কিনা আগামী দিন আর কখনো সম্ভব হবেনা দিকে দিকে পদ্ম ফুল ফুটবেই বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিজেপি নেতারা।” রাজেশ রায় এদিন জানান যে, “আমরা সন্ত্রাসের প্রধান ইস্যু নিয়ে ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছি গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল যেভাবে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে তার জবাব দেওয়ার জন্য মানুষ আজ প্রস্তুত তাই সন্ত্রাস কে উপেক্ষা করেই গ্রামে গ্রামে প্রচার অভিযানের সামিল আমাদের লোক জনেরা।” তিনি আরো জানিয়েছেন যে “তৃণমূলের ব্যাপক সন্ত্রাস আর তোলাবাজির সরকারে পরিণত হয়েছে তাই সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের প্রধান ইস্যু সন্ত্রাস।সেই সাথে রয়েছে মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকায় রেলপথ তৈরির দাবি।আমরা ভোটারদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি ভোটে জয়লাভ করলে মন্তেশ্বর ব্লকের রেলপথ তৈরি হবেই।”
আরও পড়ুনঃ ভোট প্রশিক্ষণে অনুপস্থিত শিক্ষক ভোটকর্মীদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন শাস্তির নিদান
তাই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ঘিরে সরগরম মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকা।প্রখর রোদ কে উপেক্ষা করে ভোট প্রচার জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে সবকটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেই।জেতার আসন পাকা করতে প্রতিশ্রুতিতে বান ডাকলেও আদতে কতটা কি ফল হয় সেটা সময়ই বলবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584