শারোদৎসবে ঘটেই পূজিতা হন মা ঝিংলেশ্বরী

0
221

নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

কথিত আছে আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমারের ভবানীপুর গ্রামে পূর্বে নদী ছিল। আর নদী তীরবর্তী জায়গায় হিঙ্গল বন ছিল। প্রায় ৫০০ বছর আগে এই নদীতে একটি জাহাজ এসে ভবানীপুরে নোঙর করে। জাহাজের সদস্যরা যখন তামাক খাচ্ছিল, সেই সময় একটি ১০-১২ বছরের কিশোরী মেয়ে এসে তাদের কাছে তামাক চায় ।

devi | newsfront.co
মা ঝিংলেশ্বরী ৷ নিজস্ব চিত্র

জাহাজে যারা ছিল তারা ঐ কিশোরীকে জাহাজে উঠে আসতে বলে। কিন্তু ঐ কিশোরী নিষেধ করে জানায় জাহাজে উঠলে বিপদ আছে। কিন্তু জাহাজে যারা ছিল তারা হাসাহাসি করে এবং কিশোরীকে জাহাজে উঠে আসতে বলে। আর ঐ কিশোরী জাহাজে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে জাহাজটি মাটিতে বসে যায়। সেই থেকে জাহাজের মাস্তুলেই মা অবস্থান করে। বর্তমানে সেই ঝিংলেশ্বরী মন্দির জাহাজের মাস্তুলের উপর বিরাজমান। কথিত আছে স্থানীয় পতি বংশের এক সদস্যকে মা স্বপ্নাদেশ দেয় হিঙ্গল বনে মা রয়েছে এবং মন্দিরের সামনে একটি পুকুর রয়েছে।

statue | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

প্রতিদিন সকালে ঐ পুকুর থেকে কাঁসার বাসন পত্র উঠবে তাতে করে বিশেষ ভোগ দিয়ে মাকে পুজো করতে হবে । তারপর থেকে পতি বংশ মায়ের পুজো করে আসছিল। তখন মায়ের নাম ছিল মা হিংলেশ্বরী। পরে নাম পরিবর্তিত হয়ে মা ঝিংলেশ্বরী হয়। কিন্তু পতি বংশের এক সদস্য ঐ কাঁসার বাসন চুরি করে নেয়। মা ক্ষিপ্ত হয়ে অভিশাপ দেয় পতি বংশে আর কোনো পুত্র সন্তান হবেনা। পতি বংশের শেষ সদস্যা ভীমা দেবী ও ফুলেশ্বরী দেবী মায়ের পুজো চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উত্থাসিনী ও মিশ্র পরিবারকে পুজোর দায়িত্ব দিয়ে যায়। দুই পরিবারের সদস্যরা কিছুদিন পুজো চালানোর পর প্রায় ১৫০ বছর আগে মহিষাদলের রাজা দেব প্রসাদ গর্গ মায়ের নামে কয়েক একর জায়গা লিখে দেয়।

pandel | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

তবে দেবপ্রসাদ গর্গের নির্দেশ ছিল মা সারা বছর তারা রূপে পূজিতা হলেও মাকে দুর্গা পুজোর সময় পুজো করতে হবে এবং বাসুদেবের শিলা থাকায় জন্মাষ্টমী ও পালন করতে হবে। আর তারপর থেকেই দুর্গা পুজোর সময় উগ্র তারা মূর্তির সামনে দুর্গা মায়ের ঘট করে পুজোর প্রচলন শুরু হয়। তখন থেকে পুজোর পাঁচটা দিন দুর্গা পুজোর নিয়মনীতিই মানা হয় ।

temple | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

এমনকি নব পত্রিকা থেকে অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি ও সন্ধি পুজো হয়ে আসছে।আর একটি নিয়ম কথিত রয়েছে মায়ের নির্দেশে ভবানীপুর গ্রামে কখনও দুর্গা ও কালী প্রতিমা করে পুজো করা যাবেনা।

আরও পড়ুনঃ স্বজন হারানোদের চোখের জলে ব‍্যতিক্রমী শারদোৎসবের সূচনা কোলাঘাটে

এখানকার মা এতটাই জাগ্রত যে , শুধু ভবানীপুর নয় জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আসেন এখানে পুজো দেখতে ও মায়ের ভোগ গ্রহণ করার জন্য।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here