সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
ভারতবর্ষের ইতিহাসে অন্যতম কলঙ্কজনক অধ্যায় সতীদাহ প্রথা। স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে সহমরণে যেতে হতো। এখন বিধবারা সতী হতে চাইতেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বারেবারে।দেখা যেত মেয়েদের এক রকম জোর করেই ভাবাতে বাধ্য করা হতো যে স্বামীর সঙ্গে সহমরণে গেলে স্বর্গবাস সম্ভব নতুবা সারা জীবন কষ্ট করে কাটিয়ে শেষে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে।যাঁরা স্বেচ্ছায় সহমৃতায় যেতেন তাঁদের কপালে সিঁদুরের টিপ,সিঁথিতে সিঁদুর প্রভৃতি দিয়ে সাজানো হতো কিন্তু যাঁরা সতী হতে অনিচ্ছুক থাকতেন তাঁদের জোর করে বাঁশ দিয়ে বেঁধে রেখে স্বামীর পাশে শুইয়ে অবশেষে জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ করা হতো।
এই নিষ্ঠুর প্রথার বিরুদ্ধে রাজা রামমোহন রায় আন্দোলন শুরু করেন এবং লর্ড বেন্টিঙ্ক ১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে প্রথাটি চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।বর্ধমান শহরের এই সতী হওয়ার ঘটনার তথ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে একটি হল জি.টি. রোড বীরহাটা থেকে সর্বমঙ্গলা মন্দির যাবার পথে রাস্তার বামদিকে একটি সতী মন্দির। ইতিহাসের শিক্ষক তরুণ আড়ি বলেন, সতী হওয়ার পিছনে অনেক কারণ থাকতো।যেমন বলা যেতে পারে এসবের পিছনে পুরুষশাসিত সমাজের প্রধান্য সেটি বারে বারে চোখে পড়ে। পুরুষ শাসিত সমাজে নারীদের এই নিয়ম মেনে নিতে হতো এবং মেনে নেওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকত না। তাছাড়া এটাও বলা যায় যে,বিধবা স্ত্রীকে যাতে স্বামীর সম্পত্তির ভাগ দিতে না হয় সেজন্য বিধবা স্ত্রীকে এইভাবে কৌশলে সরিয়ে দেওয়া স্বামীর বাড়ির লোকেদের একটা চক্রান্ত।তরুণ বাবু আরও বলেন,এই রকম পারিবারিক রেওয়াজ দেখা যাচ্ছে যেখানে অতীতে পরিবারে কেউ সতী হলে দ্বিতীয় ক্ষেত্রে সেই পরিবারের আবার যদি কখনো স্বামী মারা যান তাহলে সতী হতেই হবে এরকম একটি নিয়ম যেন তৈরি হয়ে যাচ্ছে। আলমগঞ্জ থেকে তেজগঞ্জ যাবার পথেও “সতী মাঠ” বা সহমরণ স্থল আছে যেখানে সতীদাহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আলিপুরদুয়ার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের শিক্ষক দিবস উদযাপন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584