শুভশ্রী মৈত্র, ওয়েব ডেস্কঃ
সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশে ভোটের আগে আর বাধা রইলো না ইলেক্টরাল বন্ড বিক্রিতে। কেন্দ্রের যুক্তি মেনে নির্বাচনী বন্ড বিক্রিতে স্থগিতাদেশ দিল না প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। পশ্চিমবঙ্গ-সহ ৪ রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল পুদুচেরিতে বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচনী বন্ড বিক্রিতে স্থগিতাদেশ দিলো না সুপ্রিম কোর্ট।
‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’-এর তরফে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের দায়ের করা আবেদন শুক্রবার খারিজ করেছে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের বেঞ্চ।
আগামী ১-১০ এপ্রিল ইলেক্টরাল বন্ড বিক্রির ঘোষিত সময়সূচি স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। কেন্দ্রের তরফে সেই আবেদনের বিরোধিতা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল এবং সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা।
বন্ড বিক্রিতে সম্ভাব্য অনিয়ম রুখতে প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয় নির্বাচন কমিশনও। প্রধান বিচারপতি সরকার পক্ষের সেই যুক্তি মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘আগামী ১ এপ্রিল থেকে বন্ড বিক্রিতে কোনও বাধা নেই।’’ বন্ড বিক্রির বিরুদ্ধে যা কিছু যুক্তি পেশ করা হয়েছে তাতে সারবত্তা নেই বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুনঃ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বেসরকারিকরণ হচ্ছেই, বার্তা আরবিআই কর্তার
ভোটে কালো টাকার ব্যবহার প্রতিহত করার যুক্তিতে ২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড চালুর ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এরপর সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায়, ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যাবে। কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, ওই বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলের হাতে তুলে দিতে হবে। তারপরে রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিতে পারবে।
আরও পড়ুনঃ এপ্রিলের মাঝামাঝি করোনা সংক্রমণের সংখ্যা হতে পারে সর্বোচ্চ, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
কিন্তু কিছু বিরোধী দল এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বিশ্বের কোনও দেশেই এমন ব্যবস্থা নেই। কারণ, এর ফলে ভোটে অস্বচ্ছতা আরও বাড়বে। বন্ড ভাঙাচ্ছে রাজনৈতিক দল। ফলে কোন ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা কাকে ভোটে সাহায্য করছে, তার বিনিময়ে সরকারের থেকে তারা কি কি সুবিধে আদায় করছে, তা কিছুই বোঝা যাবে না। উল্টো দিকে সরকারের যুক্তি, কোন ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা তা প্রকাশ করতে গেলে বন্ডের ব্যবহারই বন্ধ হয়ে যাবে। আগের মতো নগদে কালো টাকার খেলাই চলবে ভোটে।
আগে নিয়ম ছিল কোনও রাজনৈতিক দল এককালীন ২০ হাজার টাকা বা তার বেশি অনুদান পেলে বাধ্যতামূলক ভাবে দাতার নাম জানাতে হত। বন্ড ব্যবস্থায় তা তুলে দেওয়া হয়। প্রশান্ত ভূষণ সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে বলেন, ‘‘নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমেই শাসক দলকে ঘুষ দেওয়া হয়।’’
পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে বন্ড বিক্রি স্থগিত রাখার আবেদন জানান তিনি। কিন্তু ২০১৯ এবং ২০২০ সালে বন্ড বিক্রির সময় কোনও রকম অভিযোগ মেলেনি বলে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের দাবি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চও জানিয়েছে, বন্ড বিক্রি নিয়ে কোন অভিযোগের নজির নেই বা কোন অনিয়মও নজরে আসেনি। ফলত, আর কোন বাধা থাকলো না নির্বাচনী বন্ড বিক্রিতে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584