পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
সমাবর্তনের দিন যত এগাচ্ছে, ততোই শান্তিনিতনে নিরাপত্তা বিধিনিষেধ আরো বাড়ছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে যে, কেউ যদি শুধু বাংলাদেশ ভবনে আমন্ত্রিত হন তাহলে তাকে ১ থেকে ২ কিলোমিটার হাটতে হবে। সে তিনি শ্যামবাটি হয়ে আসুন কিংবা বকুলতলা হয়ে। কালিসায়ের অথবা বিনয় ভবনের দিক থেকে এলেও এক বিপত্তি। শান্তিনিকেতনের ভেতরে যান চলাচল কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা এসপিজি-র কর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন এবং একের পর এক বিধিনিষেধ তৈরী করছেন। যাতে জেরবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষও আম্রকুঞ্জের জহর বেদিতে হতে চলেছে সমাবর্তনের অনুষ্ঠান। তাই ইতিমধ্যে সমস্ত আশ্রম জুড়ে ঢোকা বেরানো বন্ধ করে দিয়েছে নিরাপত্তা সংস্থা।
ওই চত্বরের সমস্ত হস্টেল গরমের ছুটি দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংবাদ মাধ্যম কেউ ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা। আম্রকুঞ্জ এলাকায় মেটাল ডিটেক্টরে তল্লাশি শুরু হয়েগেছে। স্টুডেন্ট দেরও শুধু স্টুডেন্ট আই কার্ডে হবেনা। লাগবে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড। সে সব সাথে না থাকলে সমাবর্তন বা শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবনে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের নো এন্ট্রি। দুই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনার নিরাপত্তার ঠেলায় নাজেহাল শান্তিনিকেতনবাসী। এতে ক্ষোভ বারছে বিশ্বভারতীর সর্বস্তরে।
এক ছাত্রীর বক্তব্য, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমবর্তন আর আমাদের বলা হচ্ছে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রে কাজ হবেনা। সমাবর্তনে ঢোকার জন্য নিতে হবে আধার কার্ড। এর চেয়ে বিড়ম্বনা আর কী আছে?’। শান্তিনিকেতনে আশ্রমিক স্বপনকুমার ঘোষ বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী দেখছি না। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি তে অনেক সমাবর্তন দেখেছি। কিন্তু এবছর যেন মাত্রা ছাড়া কড়াকড়ি। এখানকার সাধারণ মানুষ এতে অনেক সমস্যায় পড়বেন।’
একসঙ্গে দুই প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হবেন বলেই এত নিরাপত্তা। দুই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না এসপিজি। বীরভূমের পুলিশ বা প্রশাসনের কর্তারা এনিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি। বিশ্বভারতীর উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, ” আমরা নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছিনা। কারন এর সাথে দুই দেশের সম্মান জড়িয়ে আছে। আমরা এখনও অবদি চুড়ান্ত সূচি পাইনি। যতোদুর সম্ভব মনেহচ্ছে নিরাপত্তার করনেই এই বিরম্বনা। দুই প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর নিরাপত্তা নিয়েও ভাবা হচ্ছে। তিনি সমাবর্তনের আগের দিন বিকেলেই চলে আসছে। তার জন্যেও কুমিরডাঙার মাঠে আলাদা হেলিপ্যাড এর ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584