শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনা আতঙ্কের মধ্যে যাতে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় বেরোতে না হয়, তার জন্যে লকডাউনে সরকারি তরফে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে। কিন্তু আসলে মানুষের বিপদের দিনে যে মানুষের পাশে আছেন, তা জাহির করতে গিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট বোমাবাজিতে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল গার্ডেনরিচ এলাকা।
পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে দৌড়ে যায় গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ। এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৭ জনকে। তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কিন্তু লকডাউনে যেখানে সবকিছু বন্ধ, সেখানে অশান্তি করল কারা? অভিযোগের তির তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। রবিবার গভীর রাতে ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাচ্চি সড়ক এলাকায় এলোপাথাড়ি পাথর ছোঁড়া হয়। ভাঙচুর করা হয় বেশ কিছু দোকান, রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি। এমনকী পিস্তল নিয়ে দাপাদাপি চলে বলেও অভিযোগ। ছোঁড়া হয় বোমাও। গোটা ঘটনায় দুপক্ষের বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ গুজব ছড়িয়ে কলকাতা পুলিশের জালে ফের গ্রেফতার আরও এক মহিলা
জানা গিয়েছে, ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ত্রাণ বিলি করছিলেন প্রয়াত মুন্না ইকবালের মেয়ে শাবা ইকবালের অনুগামীরা। স্থানীয় মানুষজন এতে খুশি হন। কিন্তু তৃণমূলেরই আরেক গোষ্ঠী এই ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করে ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আখতারি নিজামির ছেলে ববি।
আর এর পরেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট-বোমাবাজি শুরু হয়ে যায়। আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা ঘরে ঢুকে পড়েন । পুলিশের বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বন্দর এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামস ইকবাল। তিনি প্রয়াত তৃণমূল নেতা মুন্না ইকবালের ছেলে। পাশের ওয়ার্ড ১৩৫। সেখানে কাউন্সিলর তৃণমূলের আখতারি নিজামি।
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, আখতারির ছেলে ববি বকলমে মায়ের হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, মুন্না ইকবালের মেয়ে সাবা ইকবাল ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে টিকিট পেতে চান। তাই বেশ কয়েক মাস ধরেই আখতারির ওয়ার্ডে বিভিন্ন ধরনের জনসংযোগমূলক কাজ করছেন তিনি। তা নিয়ে বেশ কয়েকবার ববি এবং সাবার অনুগামীদের মধ্যে বচসা, ছোটখাটো মারপিট হয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে সাবা ইকবাল বলেন, “আমরা খাবার এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে গিয়েছিলাম। সেই ত্রাণ বিলি করতে বাধা দিতে আগ্নেয়াস্ত্র আর বোমা নিয়ে কাউন্সিলরের লোকজন হাজির হয়।
অন্যদিকে, আখতারি নিজামির ছেলে ববি নিজামি বলেন, ‘বারবার নিষেধ করা সত্বেও ভিড় জমিয়ে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছিল। শুধু সেটা প্রতিবাদ করতেই ওরা মারপিট বোমাবাজি শুরু করে দেয়। এটা আমাদের ছেলেদের কোনও দোষ নেই।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584