নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ
ছোটবেলায় রচনা লিখতে হত- ‘দুর্গাপূজা’। প্রথম লাইনেই লিখতাম– দুর্গা পূজা হল বাঙালির বড় উৎসব। এরপর একে একে লিখতাম এই পুজো শরৎ কালে হয়, আমরা নতুন জামাকাপড় পরি- এহেন আরও কত লাইন।
কিন্তু লিখতাম না, দুর্গা পুজোতেই হারিয়ে যায় কত কী, দুর্গা পুজোতেই ঘটে কত না অপ্রীতিকর কাণ্ড। আর এই হারিয়ে যাওয়া, না পাওয়া, কঠিন কোনও বাস্তবকে সামনে নিয়েই চেনা ছকের বাইরে এক অন্য দুর্গাপুজোর সন্ধান দেবেন পরিচালক রূপম পাল। রূপম নির্মিত প্রথম স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবির নাম ‘দুর্গা দুর্গতি’।
গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে অপরাজিতা নামে এক সাধারণ মেয়ে। সে রঞ্জনের স্ত্রী এবং রিকুর মা’ও বটে। এক দুর্গাপুজোয় দমকা হাওয়ায় পাল্টে যায় তার চেনা ছকের জীবন। কী ভাবে? সেটাই দেখার বিষয় এই ছবিতে।
অপরাজিতার জীবন পাল্টে গেলে কার কী? পরের বছর আবারও মা আসবেন, ভিড় হবে, ঠেলাঠেলি হবে, দশমীতে উচ্চারিত হবে “বলো দুগ্গা মাইকি, জ…য়, আসছে বছর আবার হবে।”
কিন্তু সারাজীবনের মতো একলা হয়ে যাওয়া অপরাজিতার কথা কি ভাববে কেউ? না, ভাবে না। আর তাই আমরা কেউ ভাল মন্দ, আগামীর চিন্তা না করে কে কার আগে লাইনে ঠেলাঠেলি করে, হুড়োহুড়ি করে প্রতিমা আর প্যাণ্ডেলের কারুকার্য দর্শন করব তার চিন্তা করব। একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে হয়ত অপরাজিতাদের একলা হতে হয় না।…
আরও পড়ুনঃ আবালবৃদ্ধবনিতার মন কাড়ছে জর্জিয়ান্সদের অকাল বোধন- ‘রে অফ হোপ’
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন – লাড্ডু, পিঙ্কি ব্যানার্জি, দেবলীনা ঘোষ, দেবজয় মল্লিক, সুদীপ মুখার্জি, কৌশিক ব্যানার্জি, ভাস্কর ব্যানার্জি, স্বাগতা বসু, সুব্রত গুহ রায়, অনিমেষ ভাদুড়ি, অর্ঘ্য মিত্র।
ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন রাজীব দাস, ক্যামেরায় উজ্জ্বল মল্লিক, সঙ্গীত পরিচালনায় এবং আবহে জয় সরকার। সম্পাদনা করছেন অর্ঘ্যকমল মিত্র। শব্দ পরিকল্পনায় অনুপ মুখার্জি। গ্রাফিক্স করেছেন স্বর্ণদীপ চক্রবর্তী। ছবিতে একটি গান গেয়েছেন শ্রাবণী সেন।
সম্প্রতি সামনে এসেছে ছবির পোস্টার। নজর কেড়েছে সকলের। এবার অপেক্ষা ট্রেলারের, তারপর ছবির। ততদিন অপেক্ষা। ছবিটিকে বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে দেখানোর পর কলকাতায় স্ক্রিনিং করানোর ইচ্ছে আছে পরিচালকের।
আরও পড়ুনঃ অভিষেক বসু বলবেন ‘তাদের কথা’
প্রসঙ্গত, পুরোপুরি স্বাধীন ছবি এটি। পরিচালক রূপম নিজের উপার্জনের টাকা থেকে একটু একটু করে সঞ্চয় করেছিলেন৷ আর সেটাই উজার করে দিলেন ‘দুর্গা দুর্গতি’কে। পেশায় তিনি সিরিয়ালের প্রোগ্রামার৷
ফলে ধারাবাহিকের শুটিং ফ্লোরে তাঁকে ব্যয় করতে হয় অনেকটা সময়। ফলে নিজের ছবির কাজের জন্য সারাদিনে তিন ঘণ্টার বেশি পেতেন না। তার মাঝেই কাজ এগিয়ে নিয়ে চলতে হত তাঁকে।
পরিচালক নিউজ ফ্রন্ট বাংলাকে জানান- “যাদের বয়স ৩০-৪০-এর পাশাপাশি ঘোরাঘুরি করে তারা দুর্গাপুজোর দুটি ঘরানা দেখল। একটি সাবেকি অন্যটি থিম। থিমের পুজোর স্বাদ লুটেপুটে নিতে যেভাবে মানুষের ঢল নামে তাতে কাগজের পাতা খুললেই দেখা যায় কোথায় কী অনর্থ ঘটে পুজোর ওই পাঁচটি দিনে।
তেমনই এক ঘটনাকে সম্বল করে এই ছবি। তা বলে থিমের পুজোর বিপক্ষে কোনও কথা বলতে চাওয়া হয়নি। থিম শিল্পের পরিচয় বহন করে। এই ছবিতে সামাজিক বার্তা রয়েছে। আট থেকে আশি- সকলের দেখার উপযোগী এই ছবি।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584