ডিজিটাল শর্ট ফিল্মে ডাবিং! সম্ভব করলেন ‘এবং আমি’র কারিগররা

0
75

নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ

দর্শক দরবারে হাজির শর্ট ফিল্ম ‘এবং আমি’। এই ছবির হাত ধরেই পরিচালক হিসেবে ডেবিউ করলেন রণজিৎ দে। তিনি পেশায় একজন জন সংযোগ আধিকারিক। এককালে চুটিয়ে করেছেন সাংবাদিকতাও। এবার একটু অন্য পথে হাঁটা। ইচ্ছেটা অনেকদিনের। কিন্তু সময়টা সঙ্গ দিচ্ছিল না কিছুতেই। অবশেষে স্বপ্নপূরণ।

shortfilm | newsfront.co

‘টিভিওয়ালা মিডিয়া’র জন্য তিনি বানিয়ে ফেললেন ‘এবং আমি’। এই নতুন উদ্যোগে তাঁর সঙ্গী ছিলেন সুদীপ যাদব। তিনিও পেশায় জন সংযোগ আধিকারিক। তিনিও এককালে করেছেন সাংবাদিকতা। ছবির কাহিনি এবং পরিচালনা রণজিতের। ভাবনা ও পরিকল্পনা সুদীপের। “সুদীপ না থাকলে ছবিটা হত না।” জানিয়েছেন রণজিৎ দে।

shortfilm | newsfront.co

ছবি প্রসঙ্গে বলতে গেলে বলতে হয়, প্রথম ছবি অনুযায়ী রণজিৎ যে ক্যারিশ্মা দেখালেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটা মোবাইলে শুট করা ছবি যে এত জীবন্ত হতে পারে জানা ছিল না। এই ছবির সংলাপ ডাবিং করা হয়েছে। এবং তা কোনও স্টুডিওতে গিয়ে নয়। নিজেদের বাড়িতে স্ক্রিপ্ট দেখে। বলাবাহুল্য, লকডাউন পিরিয়ডে নির্মিত ডিজিটাল শর্ট ফিল্মে এই প্রথম ডাবিংয়ের সাহায্য নেওয়া হল। প্রত্যেকটা শট একেবারে বড় পর্দার জন্য নির্মিত ছবির মতো। অথচ মোবাইলে শুট।

shortfilm | newsfront.co

ছবিতে দুটি চরিত্র রঞ্জা এবং অর্ক। রঞ্জা অর্কর প্রাক্তন প্রেমিকা। অর্কর বউ যখন বাপের বাড়িতে তখন সে রঞ্জাকে ফোন করে জানায় তার ফ্ল্যাটের নিচের ফ্ল্যাটে কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। গোটা বিল্ডিংটাকে কোয়ারেন্টাইন করে দেওয়া হয়েছে। অর্কর শরীরটাও ভাল নেই। তবে সেও কি আক্রান্ত? আক্রান্ত হলে বাঁচবে তো? এই নিয়ে সে চিন্তিত। করোনা এবং তার জন্য মানুষের জীবনে চলতে থাকা হরেক রকমের ক্রাইসিস নিয়ে কথোপকথন চলে অর্ক আর রঞ্জার মধ্যে। উঠে আসে বাস্তব আর অবাস্তবের কথাও। এরপর কী হয় সেটা জানার জন্য দেখা দরকার ছবিটি।

shortfilm | newsfront.co

ছবির শেষে রণজিতের কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমি’ কবিতাটির পাঠ ছবিতে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে ওস্তাদ বিসমিল্লা খানের সানাইয়ের সুরে ‘তুমি রবে নীরবে’।

আরও পড়ুনঃ নতুন পৃথিবী গড়ার কামনায় শিশু-কিশোর দল

ছবির নায়িকা রঞ্জা থুড়ি পূজারিণী ঘোষ এখানে একেবারে অন্যরকম। তিনি নিউজ ফ্রন্ট-কে জানান- “রণ’দা পি আর হিসেবে যেমন, পরিচালক হিসেবে একেবারে অন্যরকম। মারত্মক খুঁতখুঁতে। প্যানিকও আছে বিস্তর। আর তাই সে আলাদা একেবারে। কাজটা করিয়ে নিতে জানে রণ দা। ঘরে বসে কী ভাবে ডিরেকশন দেওয়া যায় তার কায়দা রণ’দার কাছ থেকে শেখা দরকার। খুব খেটে কাজটা করেছি আমরা। আমার বোন আর দিদির ছেলে ধরেছে আমার ক্যামেরা থুড়ি মোবাইল।

সবথেকে বড় কথা হল, এই ছবির জন্য ডাবিং করা হয়েছে। ঘরে বসে শুট করব আশপাশ থেকে আওয়াজ আসবেই। আর ছবিতে আওয়াজটা খুব ম্যাটার করে। চারদিকের আওয়াজ যদি ছবিতে শোনা যায় তা হলে ভাল লাগে না। আমরাই রণ’দাকে বলি ডাবিং-এর জন্য। ক্রিয়েটিভ টিম গ্রিন সিগনাল দিলে আমরা ডাবিং করি। ফলে গোটা ছবিতে কোনও অতিরিক্ত শব্দ বিরক্ত করেনি। আর তাই মনে হয়েছে সেটা বড় ক্যামেরায় বড় পর্দার জন্য বানানো ছবি।

আরও পড়ুনঃ ‘যিশু পরমব্রত অনির্বাণরা কি তাহলে উভকামী’- সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন স্বস্তিকার

শট নিয়ে সেটা রণ’দাকে পাঠাতাম আর টেনশন করতাম ‘ওকে’ বলবে তো? না হলে রি-টেক! হয়েছেও এরকম। আর রণ’দা খুঁতখুঁতে বলেই কাজটা ভাল করতে পেরেছি আমরা। আর বলব এডিটর শুভ ভট্টাচার্য এবং সঙ্গীত পরিচালক সৌম্য রিতের কথা। এডিটিং এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর একটা ছবিকে তার সঠিক মান দেয়। আর সেই দুটি জিনিস এই মানুষ দুটি দক্ষতার সঙ্গে করেছেন। গোটা টিম নিজেদের জায়গায় নিজেদের বেস্ট টা দিয়েছেন। আমি খুব খুশি ‘এবং আমি’ নিয়ে।”

অর্ক অর্থাৎ অনুভব কাঞ্জিলালের কথায়, ছবিটা যতটা না করোনা রোগে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে তার থেকেও বেশি সমসাময়িক পরিস্থিতি কিংবা ক্রাইসিস নিয়ে দুটি মানুষের কথোপকথনের উপর দাঁড়িয়ে আছে। আমার বাবা (অঞ্জন কাঞ্জিলাল) আমার প্রত্যেকটা শট নিয়েছেন মোবাইলে। আর রণ’দা প্রসঙ্গে বলতে গেলে বলব, পরিচালক রণ’দা বড্ড প্যানিক করে। পি আর রণ দা অতটা প্যানিক করে না। খুব গোছানো একজন মানুষ রণ’দা৷ কী করবে আর কী করবে না মাথায় গোটা ব্যাপারটা সাজানো থাকে। সেই মতো প্রয়োগ করে। আমার অন্তত পরিচালক রণ’দাকে দেখে সেটাই মনে হয়েছে।

ছবির আরেক কাণ্ডারি তথা নেপথ্য মানুষ সুদীপ যাদবের কথায়, আমি আর রণ’দা একই পেশায় অন্য প্রতিষ্ঠানে যুক্ত ঠিক কথা। কিন্তু কখনও আমরা একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াইনি। প্রতিযোগিতা কোনওদিনই ছিল না আমাদের মধ্যে। অনুভব আর পূজারিণীর ধৈর্য দেখে অবাক হয়েছি আমরা। আর বলব এডিটর শুভ ভট্টাচার্য’র কথা। কী দারুণ এডিট করেছে ছবিটা! রণ’দাকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই আমার। অসম্ভব ধৈর্য, খুঁতখুঁতে আর পারফেকশনিস্ট। কাজ করার সময় আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের মতামত জ্ঞাপন করতে পেরেছি বলেই কাজটা মানুষের মন ছুঁয়েছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here