শিবশংকর চ্যাটার্জ্জী,দক্ষিন দিনাজপুরঃ
রাজ্যের দূর্গা পুজোর ইতিহাস শুরুই হয় বিভিন্ন জমিদার বাড়ি বা বনেদি বাড়ি দিয়ে।দক্ষিন দিনাজপুর জেলাতেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন বনেদি বাড়ির পুজোর ইতিহাস।
আর বনেদি বাড়ির পুজোর কথা উঠলেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মধ্যে সর্বাগ্রে এক বাক্যে যে পুজোর কথা উঠে আসে তা হল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের মনোহলীর জমিদার বাড়ির দুর্গোৎসব।
মনোহলীর এই জমিদার পরিবারের জমিদারীর পত্তন করেছিলেন জমিদার তারাচাঁদ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এই জমিদার পরিবারের প্রথম দুর্গাপূজার উদ্যোগ নিয়েছিলেন রমেশ চন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও যোগেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু কালের নিষ্ঠুরতায় জমিদারও নেই তার পুজোর সেই ঠাঁটবাটও নেই।বর্তমানে এই জমিদার বাড়ি ও ঠাকুর দালানের ভগ্নপ্রায় অবস্থা।ঠাকুর দালানটি এখন কয়েকশো পায়রার আস্থানা।সেইসব পায়রার মল,ডিম ও পালকে ঠাকুর দালান এখন ভর্তি।
খসে পড়ছে এই বাড়ির পলেস্তারা।ধ্বংসের মুখে দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাসের একটি অধ্যায়।জানা যায় আনুমানিক ১২৭ বছর পূর্বে তপনের মনোহলীর জমিদার বাড়িতে রমেশ চন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও যোগেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে প্রথম দুর্গোৎসব হয়।
আরও পড়ুনঃ বিরিহাঁড়িতে ‘জীবন্ত দুর্গা’ পুজো ঘিরে সচেতনতার প্রচার
বর্তমানে এই জমিদার পরিবারের সকল শরিকের বাইরে চলে যাওয়াতে এবং তাদের পুজোতে সেভাবে অংশগ্রহণ না থাকায় মনোহলী গ্রামের বাসিন্দারা এখন এই জমিদার বাড়ির পুজো টিকে সার্বজনীন বারোয়ারি পুজো কমিটি তৈরি করে সার্বজনীন রুপ দিয়েছে।
তারাই জমিদার বাড়ির চিরাচরিত রীতি ও প্রথা মেনে দুর্গা পুজোটি করে থাকেন।এখনো শতবর্ষ প্রাচীন এই পুজো সেই শতাব্দী প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই হয়ে থাকে বলে গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
লোকশ্রুতিতে জানা যায় জমিদার ঘরানা থাকাকালীন তপন এলাকার আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ জন এই পুজো দেখতে আসতেন এবং পুজোতে অংশগ্রহণ করতেন সেই সময় পুজোর কটাদিন এলাকার কারো বাড়িতেই রান্না হত না সকলেই জমিদারের অতিথি হিসেবে জমিদার বাড়িতে অন্ন গ্রহন করতেন।
এছারাও জমিদার বাড়ি থেকে তৎকালীন সময়ে গ্রামের মানুষজনদের পরবি দেওয়া হতো পুজোর দিনগুলি সকলে সমান ভাবে উৎসবমুখর হয়ে আনন্দঘন পরিবেশে পালন করার জন্য।বর্তমানে পরিচর্যার অভাবে জমিদারবাড়ির যেমন ভগ্নপ্রায় দশা,জমিদার বাড়ির ঠাকুরদালানের অবস্থাও তথৈবচ।তবুও এই জমিদার বাড়ির দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে মানুষজনের উৎসাহ ও উন্মাদনার বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584