শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
লকডাউনের মধ্যেও ২০১৫ সালে রবিনসন স্ট্রিটের মত হাড়হিম করে দেওয়ার ঘটনা এবার সামনে এল ভবানীপুরে মাধব চ্যাটার্জি লেনে। দীর্ঘদিন ধরে মৃত ভাইয়ের দেহ আগলে বসে ছিলেন দিদি মহাশ্বেতা দে (৫৩)। প্রত্যেক দিন খাবার দিতে গিয়ে সন্দেহ হওয়ায় শুক্রবার রাতে বাড়িতে আচমকাই ঢুকে পড়েন পাড়ার বেশ কিছু স্থানীয় বাসিন্দা। তারপরেই উদ্ধার হয় শান্তনু দে-র (৪৮) পচাগলা বিকৃত দেহ।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বেশ কয়েকদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। আরও জানা গিয়েছে, দুই ভাইবোনের বাবা-মা আগেই মারা গিয়েছেন। তাদের নিজেদের জমি প্রোমোটারকে দিয়ে ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে ওই ফ্ল্যাটটি পেয়েছিলেন শান্তনু বাবু ও তাঁর দিদি মহাশ্বেতা। খুব একটা আর্থিক সমস্যাও ছিল না। সূত্রের খবর, লকডাউনের কারণে নিয়ম করে কলকাতার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি চাল-ডাল-আলু পৌঁছে দিচ্ছিলেন কাউন্সিলরের লোকেরা। ওই বিশেষ ফ্ল্যাটটির সামনে গেলেই পচা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, এমন অভিযোগ ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের।
শুক্রবার রাতে সেই খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার সময়ে বিষয়টি দেখে ছাড়বেন বলে পরিকল্পনা করে শান্তনুবাবুর ফ্ল্যাটে যান কয়েকজন যুবক। অন্যদিন দরজা ফাঁকা করে জিনিসপত্র নিয়ে নেন মহাশ্বেতাদেবী। কিন্তু এদিন দরজা খুলতে এরপর একপ্রকার জোর করে ঘরে ঢুকে পড়ে ওই যুবকেরা। তখনই নজরে পড়ে শান্তনুবাবুর পচাগলা দেহ। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় ভবানীপুর থানায়। রাতেই দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।
কিন্তু কেন কাউকে কিছু না জানিয়ে ভাইয়ের দেহ আগলে রেখেছিলেন তিনি? ওই ব্যক্তির কি স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে? প্রশ্ন করা হলে কখনও তিনি বলেন যে, লকডাউনের কারণে বাইরে কাকে জানাবেন বুঝতে পারেননি তিনি। কখনও আবার বলেন যে, ভাই তাঁর দেখভাল করতেন, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতেন। তাই ভাইয়ের আচরণ দেখে বুঝতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুনঃ পথপ্রানীদের খাবারের জন্য এগিয়ে এলো রায়গঞ্জের কালচারাল ফোরামের কর্মকর্তারা
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মহাশ্বেতাদেবীকে সুস্থই মনে হয়েছে তদন্তকারীদের। তবে ময়না তদন্তের পাশাপাশি ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও মৃত্যুর আসল কারণ জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। বাড়িটি আপাতত সিল করে দেওয়া হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584