নিজস্ব সংবাদদাতা, পুরুলিয়াঃ
নাবালিকা কিশোরীকে ভিন্ রাজ্যে পাচারের চেষ্টায় গ্রেফতার করা হল ৬ জনকে । ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়া জেলার বরা বাজার এলাকায় । এই ঘটনায় বরা বাজার থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ওই কিশোরীর আত্মীয় স্থানীয় যুবক ভাস্কর মাহাতো সহ আরো ছয় জনকে ৷ উদ্ধার করা হয়েছে কিশোরীকেও। ধৃতদের মধ্যে পাঁচজন হরিয়ানা ও একজন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা।

রবিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের দশ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার জেলা চাইল্ড লাইনের পক্ষ থেকে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং জেরায় তারা অভিযোগ স্বীকারও করেছে। ধৃতরা আন্তঃ রাজ্য নারী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বলেই পুলিশের সন্দেহ।
পুরুলিয়া জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর অশোক মাহাতো জানান, শনিবার চাইল্ড লাইনের হেল্প লাইন (১০৯৮) নম্বরে একটি ফোন আসে, সেই ফোনে জানানো হয় বরা বাজারের একটি গ্রামের এক কিশোরীকে বিয়ে দেওয়ার নাম করে ভিন্ রাজ্যে বিক্রির চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুনঃ উত্তরবঙ্গে নিহত বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর তদন্ত করবে সিআইডির ‘সিট’
তিনি ওই ফোনে পাওয়া যাবতীয় তথ্য জানিয়ে যোগাযোগ করেন বরা বাজার থানায়। বরা বাজার থানার পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে ভাস্কর মাহাতো সহ বাকি যুবকদের খোঁজ পায়, সেখানে হরিয়ানার নম্বর প্লেট সহ সন্দেহজনক একটি গাড়িও দেখতে পায়। ওই কিশোরীও তাদের সঙ্গে ছিলো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সকলকেই থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিশোরী পুলিশকে জানায় ধান কাটার নাম করে ভাস্কর মাহাতো তাকে ওই জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল। ভাস্কর মাহাতোর কাছে সাড়ে ৪১ হাজার টাকা ও পাওয়া যায় যার প্রকৃত হিসেব সে দিতে পারেনি।
আরও পড়ুনঃ পাচারের আগেই সাগরপাড়া বিওপি সীমান্ত থেকে মোষ উদ্ধার
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে উদ্ধার হওয়া ওই কিশোরীর দিদির ও ভিন্ রাজ্যে বিয়ে হয় লকডাউনের সময়, বিয়ের পর থেকে তার সঙ্গে পরিবারের সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এই ঘটনায় কিশোরীর বাবার ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ধৃতদের মোবাইল ফোন থেকে দেখা গেছে, সকলেই বিজেপির বিভিন্ন হোয়্যাটস অ্যাপ গ্রুপে যুক্ত, এমনকি তাদের গাড়িতেও ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ স্টিকার সাঁটানো ছিল। জেরায় ধৃতরাও তাদের রাজনৈতিক যোগের কথা স্বীকার করেছে।
জানা গিয়েছে ওই অঞ্চলের এক প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় থেকেই অভিযুক্তরা নারী পাচার চক্র চালাতো, ওই ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখেছে পুলিশ এবং জানা গিয়েছে এই সূত্র ধরেই আসল ‘বড় মাথা’ পর্যন্ত পৌঁছনোর চেষ্টা করছে পুলিশ। ধৃতদের মোবাইলের কললিস্ট ঘেঁটেও বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে এবং রাজনৈতিক যোগের প্রচুর প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584