শ্যামল রায়,কালনাঃ
পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের আগেই মৃত্যু মিছিল কালনা ঘেষা শান্তিপুরে। চোলাই মদ বিষক্রিয়ায় সাতজনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসনিক স্তরে ও নানা মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠেছে।পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা উদ্বিগ্নের মধ্যে রয়েছেন।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কি বার্তা দেন, ভেবেই আতঙ্কিত প্রশাসনিক কর্তারা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত চোলাই মদ বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের কালনা ও শান্তিপুর হাসপাতালে।
অসুস্থ হয়ে পড়েছেন একাধিক। বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ঐসব ব্যক্তিদের- এমনটাই জানা গিয়েছে শান্তিপুর ও কালনা হাসপাতাল সূত্রে।
কালনা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ভুটান মাহাতো (২৭) । সুনীল মাহাতো(৩০ ) ও কাশীনাথ মাহাতোর (৬৫)।এদের প্রত্যেকের বাড়ি নদীয়া জেলার শান্তিপুর চৌধুরী পাড়ায়।এছাড়া নদীয়া শান্তিপুর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে আলো মাহাতো ও দূলার চাঁদ মাহাতোর।বাকীদের নাম জানা যায়নি।
জানা গিয়েছে যে মঙ্গলবার সন্ধ্যে নাগাদ চোলাই মদ খায় স্থানীয় বাসিন্দা চৌধুরীপাড়া ইটভাটার শ্রমিক সকলেই।চোলাই মদ খাওয়ার পরে সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরিবারের লোকজন এদের দ্রুত কালনা মহাকুমা হাসপাতাল এবং শান্তিপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।রাতেই এদের মৃত্যু হয়।অভিযোগ যে কালনা সংলগ্ন ভাগীরথী পাড় ঘেঁষে এবং শান্তিপুর এলাকায় চোলাই মদ কারবারিদের বাড়বাড়ন্ত দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ যে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রতিনিধি এবং পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এলাকার বাসিন্দাদের আরো অভিযোগ যে এখানকার বহু গরিব মানুষ আছেন যারা ইটভাটায় কাজ করে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন শ্রমিক রয়েছেন যারা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে থাকে। এই সকল শ্রমজীবি মানুষ যা আয় করেন চোলাই মদ খেয়ে টাকা উড়িয়ে দেয়। মাঝেমধ্যে মহিলারা সরব হলেও আইনি ব্যবস্থায় এবং পুরুষদের হাতে অত্যাচারিত হয়ে মুখ বুজে সহ্য করে থাকেন বলে জানা গিয়েছে।আরো অভিযোগ যে এই সকল চোলাই মদ বর্ধমান থেকে নৌকা পথে শান্তিপুরে আসে।চোলাই মদ কারবারিদের ভরসা একদিকে নদিয়া অন্যদিকে বর্ধমান তাই আইনি ঝামেলা তেও এরা অনেকটা রেহাই পেয়ে যান তার জন্য মদ কারবারিদের বাড়বাড়ন্ত রয়েছে এই দুটো জেলার জিরো পয়েন্টে।তবে চোলাই মদ খেয়ে স্বজনদের মৃত্যুতে এলাকায় ব্যাপকভাবে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
চোলাই মদের বিরুদ্ধে সরব দেবঃ
শান্তিপুর হাসপাতালে সুপার জয়ন্ত বিশ্বাস জানিয়েছেন যে চোলাই মদের বিষক্রিয়ার ফলে এই সমস্ত শ্রমজীবী মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও পরীক্ষার পরে জানা যাবে অন্য কোন কারণে এদের মৃত্যু ঘটেছে কিনা। এলাকায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ওই সকল চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে বুধবার সকাল থেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং যারা চোলাই মদ কারবারী সাথে যুক্ত তারা এলাকা থেকে পলাতক।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে যে এই ঘটনার সাথে কোন কোন মদ কারবারি যুক্ত বিষয়টি তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দোষীদের ধরতে সমস্ত রকম উদ্যোগ নেয়া হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে। কালনা মহকুমা হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বড়াই জানিয়েছেন যে মদে বিষক্রিয়ার ফলে ওই সকল ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে বলে প্রাথমিক অনুমান তবুও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে আসল ঘটনাটি জানা যাবে।
আরও পড়ুনঃ বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584