উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
আগামী ৩০ ও ৩১শে জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় রাজনৈতিক সফরে আসছেন। তিনি তাঁর এই সফর কালে উত্তর চব্বিশ পরগনার ঠাকুরনগর ও হাওড়ার ডুমুরজোলায় দুটি জনসভা ছাড়াও উলুবেড়িয়া একটি রোড-শো করবেন।বিজেপি সূত্রে জানা গেছে এই দুই সভায় অন্তত দশ জন বিধায়ক ও নেতা অন্য দল থেকে বিজেপির ঝান্ডা হাতে তুলে নেবেন।
শুক্রবার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো জানান, ‘৩০ জানুয়ারি বাংলায় আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এবার তিনি যাবেন নদিয়া-বনগাঁ, হাওড়া শহর ও উলুবেড়িয়ায়। সেখানে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। ৩০শে জানুয়ারি ইসকন মন্দিরে যাবেন শাহ। তারপর সভা করবেন ঠাকুরনগরে। ওইদিন রাতেই দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কলকাতায় সারবেন বৈঠক। ৩১শে জানুয়ারি উলুবেড়িয়ায় রোড শো করবেন তিনি। তারপর জনসভা করবেন হাওড়ার ডুমুরজলায়। ওই সময় বিজেপির রথযাত্রা শুরু হলে তাতেও যোগ দেবেন অমিত শাহ।’
কারা অমিত শাহের এই সফর কালে গৈরিক শিবিরে যোগ দেবেন তার একটি তালিকা তৈরি হচ্ছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। এই তালিকার বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও, শাহর সভায় যোগদান প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বক্তব্য, ‘অনেকেই তৃণমূল ছাড়বে। অপেক্ষা করুন। যোগদান হলে প্রকাশ্যেই হবে।’ শনিবার রেড রোডে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে মাল্যদান করে একশো পঁচিশ তম জন্মদিনে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
আরও পড়ুনঃ কলকাতায় মোদী-মমতার, নেতাজীর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কর্মসূচীতে ব্রাত্য এলগিন রোডের বাড়ি
তাঁর দাবি, ‘একাধিক সাংসদ-বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন। এবিষয়ে দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘ফেব্রুয়ারি থেকে ঝান্ডা তোলার লোক পাবে না তৃণমূল। লাগাতারভাবে যোগদান মেলাও করছে বিজেপি।’ বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, শাহর সভায় যোগদানের তালিকায় পদত্যাগী মন্ত্রী ছাড়াও ওই জেলারই এক বর্তমান ও প্রাক্তন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। যোগদানের তালিকায় বেশ কয়েকজন বিধায়ক-সহ আরও কয়েকজন জনপ্রতিনিধির নামও রয়েছে।
বিজেপির দাবি, বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে সংখ্যাটা অন্তত দশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক বিধায়ক, উত্তরবঙ্গেরও কয়েকজন বিধায়কের নাম নিয়ে জল্পনা চলছে। এই দশ বিধায়কের মধ্যে ‘বেসুরো’ বিধায়কও যেমন রয়েছেন, তেমনই দু-একজন দল থেকে বহিষ্কৃতও রয়েছেন। হুগলি, হাওড়ার সংখ্যা অবশ্যই যোগদানের তালিকায় এগিয়ে। পুরোটাই অবশ্য বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের একটি অংশের দাবি। তাই বাস্তবে কী ঘটে তার দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুনঃ কলকাতার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কমিশনের কড়া প্রশ্নের মুখে পুলিশ কমিশনার
যদিও শাসক শিবির দাবি করেছে, একজন-দু’জন গেলে কিছু যায় আসে না। দল সংগঠিত রয়েছে। তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে জল্পনা শুরু হলেও পরে তিনি জানিয়ে দেন বিজেপিতে যোগদানের কোনও প্রশ্নই নেই। তৃণমূলের সহ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শতাব্দীকে। বেসুরো শাসকদলের সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ও অবশ্য দলের পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহেই বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। তাই বঙ্গের ভোটে দলের প্রচারে সোশ্যাল মিডিয়াকে কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, কোন কোন বিষয়গুলিকে আরও বেশি করে তুলে ধরতে হবে। তা নিয়ে এবার নিজেই ক্লাস নেবেন অমিত শাহ। দক্ষিণ কলকাতায় একটি প্রেক্ষাগৃহে এই কর্মসূচি হবে।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বৈশালী
বিধানসভা নির্বাচন সামনেই। তাই হাতে যেটুকু সময় আছে সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের প্রচারকে তুঙ্গে নিয়ে যেতে চাইছে গেরুয়া শিবির। শেষমুহূর্তে সেই প্রচার কৌশলের বিষয় ঠিক করে দিতে নিজেই রাজ্য বিজেপির আইটি সেলের কর্মীদের ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাহ। আগামী ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি দু’দিনের বঙ্গ সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
গেরুয়া শিবির বরাবরই সোশ্যাল মিডিয়াকে প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। একুশে বাংলার বিধানসভা নির্বাচন এখন বিজেপির পাখির চোখ। সেই লক্ষ্যে এবার ঝাঁপিয়েছে গেরুয়া শিবির। আর সেই উদ্দেশ্য সফলে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া। তাই এবার দলের নেতা-কর্মীদের হাতেকলমে ক্লাস নিতে চাইছেন শাহ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584