শ্যামল রায়,নবদ্বীপঃ
গত দুদিন ধরে নবদ্বীপ শহরের প্রতাপনগর হৃদয় ঘাট সংলগ্ন বঙ্গবাণীতে শ্রী অরবিন্দের দেহাবশেষ স্থাপনের হীরক জয়ন্তী উৎসব পালিত হলো।বঙ্গবাণী প্রধান কর্ণধার দিব্যেন্দু গোস্বামী শুক্রবার জানিয়েছেন যে চৈতন্য ভূমি নবদ্বীপ ধাম এর শেষ প্রান্তে বঙ্গবাণী প্রতিষ্ঠান শ্রী অরবিন্দ মন্দিরে তাঁর দেহাবশেষ রয়েছে।
লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে গেল পশ্চিমবঙ্গে প্রথম প্রতিষ্ঠিত শ্রী অরবিন্দের দেহাবশেষ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ১৯৫৯ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শ্রী মায়ের জন্মদিনে এ রাজ্যে সর্বপ্রথম শ্রী অরবিন্দের দেহাবশেষ এই নবদ্বীপ শহরের বঙ্গবাণী মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।নবদ্বীপের শ্রী অরবিন্দ মন্দিরে দেহাবশেষ নিয়ে আসার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন গোবিন্দলাল গোস্বামীর পুত্র দিব্যেন্দু ঘোষ।তাঁর উদ্যোগে এই হীরক জয়ন্তী উৎসব পালিত হচ্ছে।এই হীরক জয়ন্তী বর্ষে বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এই সময়কালে প্রখ্যাত সাংবাদিক তরুণ গঙ্গোপাধ্যায় সহ বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী এবং প্রশাসনিক আধিকারিকরা।শ্রী অরবিন্দ মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
আরও পড়ুন: ঋষি অরবিন্দ কলেজে প্রাক শারদীয় উৎসব
বঙ্গবাণী প্রতিষ্ঠাতা গোবিন্দ লাল গোস্বামী হাজার ১৯৫৮সালের জুন মাসে কয়েকজন সহকর্মী কে নিয়ে পন্ডিচেরিতে শ্রী অরবিন্দ আশ্রমে যান এবং শ্রী মাকে সবকিছু বুঝিয়ে বলেন,পরে অক্টোবরে পন্ডিচেরি গিয়ে শ্রী মাকে গোবিন্দ বাবু শ্রী অরবিন্দের দেহাবশেষ নবদ্বীপে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করেন। শ্রীমা তাতে সম্মতি জানান এবং গোবিন্দ বাবু দের নিয়ে যাওয়া বঙ্গবাণী নকশার এক প্রান্তে একটি বিশেষ স্থান চিহ্নিত করে শ্রী অরবিন্দ উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করার নির্দেশ দেন।
গোবিন্দ লাল গোস্বামী নবদ্বীপ দেহাবশেষ নিয়ে ফিরে আসেন এবং ১৯৫৯ সালের ২১ ই ফেব্রুয়ারি দেহাবশেষ প্রতিষ্ঠা করেন নবদ্বীপ শ্রী অরবিন্দ মন্দির প্রাঙ্গণে।এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা বলেও উল্লেখ করেছেন দিব্যেন্দু গোস্বামী।বর্তমান বঙ্গবাণী ট্রাস্ট এর সম্পাদক দিব্যেন্দু গোস্বামী জানিয়েছেন যে হাজার হাজার মানুষ সারা ভারত থেকে এই বঙ্গবাণী তে আসেন এবং অরবিন্দর দেহবাশেষ সমাধি মন্দির পরিদর্শন করেন নবদ্বীপের এই স্মৃতি মন্দিরে শ্রী প্রফুল্ল চন্দ্র সেন ও একসময় এখানে এসেছিলেন।
বঙ্গবাণী বিষয়ে জহরলাল নেহরু থেকে শুরু করে ইন্দিরা গান্ধী এবং ভারতবর্ষের প্রধান প্রধান রাজনীতিবিদরা এই বিষয়টি জানেন এবং সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য সমস্ত রকম সহযোগিতা করে থাকেন দিব্যেন্দু গোস্বামী কে।এদিন দিব্যেন্দু ঘোষ জানিয়েছেন যে বর্তমান বঙ্গবাণী প্রাঙ্গণে ভেষজ চাষ করা হবে এবং অদূর ভবিষ্যতে একটি বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করা হবে।
ইতিমধ্যেই ভেষজ চাষে একাধিক নামি দামি গাছ চাষ করা শুরু হয়েছে।হটিকালচার বিভাগ থেকে ও সমস্ত রকম আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছে।আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করা হবে এবং একটি গবেষণাগারে তৈরি করা হবে অদূর ভবিষ্যৎ ইতিমধ্যে নবদ্বীপের বঙ্গবাণী ১২টি প্রজাতির গাছের চাষ চলছে।দিব্যেন্দু বাবু আরো জানিয়েছেন ভেষজ গাছের চাষ তার পাশাপাশি আয়ুর্বেদ চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরীর কথা ভাবা হয়েছে।
তাই নবদ্বীপের বঙ্গবাণী মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও তিনি আক্ষেপ করে জানিয়েছেন যে বঙ্গবাণী বহু জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে এবং এককভাবে দিব্যেন্দু গোস্বামী জমি রক্ষার ক্ষেত্রে একটি সময় খারাপ অবস্থার মধ্যে পড়েছেন তাই সরকারের তরফ থেকে শুরু করে সমস্ত রকম সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে তার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584