শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
বছরখানেক আগে থেকেই তানিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেন নজরে এসেছিল অর্থমন্ত্রকের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জানানোর পর শুরু হয় নজরদারি।
পরে লস্কর-ই-তৈবার লিঙ্কম্যান সন্দেহে ১৮ মার্চ কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্কফোর্সের গোয়েন্দারা বাদুড়িয়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল বসিরহাটের তরুণী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তানিয়া পারভিনকে। প্রায় মাসতিনেক পরে তানিয়া পারভিনকে নিজেদের হেফাজতে নিল এনআইএ।
শুক্রবার সকালে এনআইএর তরফে বসিরহাট আদালতে তানিয়া পারভিনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন জানায় এনআইএ।
আরও পড়ুনঃ ভারতে করোনায় রেকর্ড সংক্রমণ, গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ১১৪৫৮
বিকেলে বসিরহাট আদালতের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর দমদম সেন্ট্রাল জেলে আদালতের নির্দেশিকা নিয়ে পৌঁছন এনআইএর আধিকারিকরা। এরপর বিচারাধীন বন্দি তানিয়া পারভিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় নিউটাউন এনআইএর পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতরে।
গোয়েন্দাদের দাবি, প্রায় ২ বছর ধরে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার লিঙ্কম্যান হিসেবে তানিয়া কাজ করত বলে অভিযোগ।
বাদুড়িয়ার বাড়িতে বসে এলাকার মুসলিম যুবক যুবতীদের জঙ্গি কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ করত সে। এই কাজের জন্য বেশ কয়েকবার কাশ্মীর, মুম্বই এমনকি দিল্লিতেও গেছে এই তরুণী। এই সমস্ত তথ্য পেয়েই বাদুড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে এসটিএফ।
তাঁর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে পাকিস্তান-সহ আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগের কথা জানতে পারেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুনঃ মহারাষ্ট্রে মোট আক্রান্ত পেরোল ১ লাখের গন্ডি !
সেই কারণেই এ রাজ্যে এই আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের জাল কতটা বিস্তৃত হয়েছে, তা জানতেই এদিন তানিয়া পারভিনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা শুরু করে এনআইএ।
এনআইএ দাবি ওই তরুণী প্রচন্ড বুদ্ধিমতী। ‘ডার্ক ওয়েব’-এর মাধ্যমে সে দেশের বিভিন্ন তথ্য লস্কর–ই–তৈবাকে ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছে। বাবা দিনমজুর। শান্ত স্বভাবের মেয়ে বলে পরিচিত ছিল। কলকাতার একটি কলেজে আরবি ভাষায় স্নাতকোত্তরের ছাত্রী ছিল।
হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল তানিয়া। বাদুড়িয়ার ছোট ছেলেমেয়েদের পড়াত। সেই মেয়েরই দুটি মোবাইলে মাসের খরচ কিনা কমবেশি ৭ হাজার টাকা হওয়ায় বিষয়টি নজরে পড়ে গোয়েন্দাদের। মেধাবী এই সাধারণ ছাত্রী জঙ্গিদের খপ্পরে কী করে পড়ল, সেই যোগসূত্রও খুঁজে বার করতে চান এনআইএ গোয়েন্দারা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584