ন’দিনে চারবার সিদ্ধান্ত বদল যাদবপুরের ভর্তি প্রক্রিয়ায় আন্দোলনের পথে ছাত্র অধ্যাপক

0
97

নিউজ ডেস্ক,কলকাতাঃ

বেশ কয়দিন ধরেই রাজ‌্য রাজনীতির শিরোনামে বারবার উঠে এসেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ‌্যালয়ের নাম। ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে সমগ্র রাজনৈতিক আবহাওয়া যখন সরগরম, সেইসময়ে ভর্তিতে দুর্নীতি ও প্রবেশিকা পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ ক্লাস বয়কট করেন যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা। যাদবপুরে বিগত চার দশক প্রবেশিকা পরীক্ষার চল। ​প্রবেশিকা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী গত দেড় বছর ধরেই নানা মাধ্যমে তাঁর ক্ষোভ জানিয়েছেন। এ বছর ২ জুন কর্তৃপক্ষ শিক্ষামন্ত্রীর স্তাবক স্বরূপ ভূমিকা নিয়ে ঘোষণা করে, বাংলা ইংরেজি ইতিহাস তুলনামূলক সাহিত্য দর্শন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এই ছয়টি বিভাগে পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে বাংলা ইতিহাসে গত বছর পরীক্ষা হয়নি। এই সিদ্ধান্তের পরই বিভিন্ন মহল থেকে চাপের অভিযোগ ওঠে, বোর্ড অফ স্টাডিজ থেকে সিদ্ধান্ত যায় এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে। ২৫ জুন থেকে ৪ জুলাই, এই নয় দিনে চার বার পাল্টায় সিদ্ধান্ত। বদলায় নোটিশ বারবার। শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার জানান, একই ক্যাম্পাসে ভিন্ন ধাঁচে অ্যাডমিশন তাঁর না পসন্দ। শেষ অবদি যাদবপুরের দীর্ঘদিনের ট্র্যাডিশন ভেঙে পরীক্ষা বাতিল করা হয় ৪ জুলাই।

নিজস্ব চিত্র

কর্তৃপক্ষের এই তুঘলকি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ক‌্যাম্পাস, প্রতিবাদের মুখর হন ছাত্র ও শিক্ষকরা।তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে তুলতে তারা বিকল্প হিসাবে আন্দোলনের পথ বেছে নেন। কিন্তু সেসবে বিন্দুমাত্র আমল না দিয়ে সমস্ত নিয়মের তোয়াক্কা না করেই বোর্ড অফ স্টাডিজের সিদ্ধান্তকেও নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে ইসি বৈঠকে। দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে শাসক মহল থেকে, তোলা হয়েছে বাইরের শিক্ষকদের খাতা দেখা ও প্রশ্ন করার মত প্রস্তাবও, যা অধ্যাপকদের আত্মসম্মানের পরিপন্থী বলেই যাদবপুর মনে করছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার কে ঘেরাও করে ছাত্রছাত্রীরা। সুস্পষ্টভাবে তারা তুলে ধরে দাবী, কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের দাবীকে বিন্দুমাত্র পরোয়া না করেই ঘেরাও শেষে বেরিয়ে যান তারা। শুক্রবার সকালে উপাচার্য শিক্ষামন্ত্রীর নাকতলার বাড়িতে যান, বিকেলে যান রাজভবনে। ছাত্রদের আন্দোলন কে ইস‌্যু রেখে জানান তার পদত‌্যাগের সিদ্ধান্ত, এমনটাই চলছে গুঞ্জন। পরিকল্পিত ভাবে রাজ‌্যের মানুষের কাছে যাদবপুরের আন্দোলনবিরোধী ইমেজ গড়ে তুলতেই এরকম তাঁর সিদ্ধান্ত বলে জল্পনা জমে উঠছে নানা মহল জুড়েই।

নিজস্ব চিত্র

এ দিন ছাত্রসংগঠন গুলির তরফে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত আগেই জানানো হয়েছিল, এরই পাশাপাশি গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতির ডাক দেয় শিক্ষক সংগঠন জুটা, অবস্থানেও বসে তারা। অন্য দিকে ধর্মঘট সফলে পড়ুয়ারাও ক্লাস বয়কট করে। দাবি না মানলে তাঁরা আমরণ অনশনে যেতে পারেন বলে জল্পনা। শুক্রবার বিকেলেও বিক্ষোভ হয় আর্টসের ডিনের গাড়ি ঘিরে, তোলা হয় স্লোগান, ইতিহাস বিভাগে তাঁর বিরুদ্ধে পড়েছে পোস্টারও। অরবিন্দ ভবনে পড়ুয়াদের অবস্থান চলছে। অন্য দিকে, অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ইংরেজি বিভাগ, তুলনামূলক সাহিত্যের দশ অধ্যাপকও পরিস্থিতির সমালোচনা করে নোট অফ ডিসেন্ট পাঠিয়েছেন উপাচার্যকে। এর মধ্যেই শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ফর্ম ফিল আপ। পড়ুয়াদের বক্তব্য, সরকারের অঙ্গুলি হেলনে আঠারো হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলেখেলা বন্ধ করতে হবে। আপাতত জল কোথায় গড়ায়, সেটাই দেখার।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here