পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
বিশ্বভারতীতে পাঠভবনে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেনিয়মের অভিযোগ উঠল। এ ব্যাপারে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মুখ খুলতে চাননি। বারবার ফোন করলেও, ফোন ধরেননি, টেক্সট মেসেজের কোন জবাব দেননি। পাশাপাশি, বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার, একবার ফোন ধরেই, কেটে দেন। তারপর আর ফোন ধরেননি।

জানা গেছে, বিশ্বভারতীর অধ্যাপক তথা অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফার পদাধিকারী সুদীপ্ত ভট্টাচার্য এই বেনিয়মের অভিযোগ নিয়ে বিশ্বভারতীর পরিদর্শক তথা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, আচার্য নরেন্দ্র মোদী, বিশ্বভারতীর রেক্টর তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়, মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকসহ বিভিন্ন জায়গায় চিঠি পাঠান। অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে “হোয়াটস অ্যাপে” কিছু কথা লিখেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ আলাপিনী মহিলা সমিতির বৈঠক ঘর খোলার দাবিতে গানের সুরে প্রতিবাদ বিশ্বভারতীতে
যার মধ্যে “ক্যাপ্টেন” বলতে কাকে বুঝিয়েছেন, এমন জিজ্ঞাস্য নিয়ে তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন এই পাঠভবনের অধ্যক্ষা বোধীরূপা সিনহা। এই অধ্যক্ষা ফের সুদীপ্তবাবুকে “খোস গল্প” করতে বলার দায়ে নতুন করে অভিযুক্ত করেন। তারপর বিভিন্নভাবে সুদীপ্তবাবু ও বিশ্বভারতীর তদন্ত দ্বৈরথ চলতে থাকে। এরপর সুদীপ্তবাবু বোধীরূপা সিনহার তদন্ত করার অধিকার আদৌ আছে কিনা জানতে, তাঁর নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য জানতে আর টি আই করেন।
আরও পড়ুনঃ পুরোনো কর্মীরা অপ্রয়োজনীয়- কোচবিহারে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৃণমূল কার্যকরী সভপতির
তাঁতে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩০ এপ্রিল বোধীরূপা সিনহার নিয়োগ সংক্রান্ত বহু বেনিয়ম। তাঁর নিয়োগ পত্রের সময় তিনি দেখাতে পারেননি, তাঁর প্রয়োজনীয় শংসা পত্র। শুধু তাই নয়, বেনিয়মে তাঁকে ৬ মাস অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়। এই শংসা পত্র দেখাতে না পারায়, তিনি দিন বাড়ানোর জন্য আবেদন করেন। এর মধ্যেই, বিশ্বভারতীর পাঠভবনের অধ্যক্ষার পদে তাঁকে উন্নীত করা হয়।
তাঁর নিয়োগের সময় বিশ্বভারতীর উপাচার্য ছিলেন সুজিত বসু, কর্মসচিব সুনীল কুমার সরকার এবং আচার্য পদে আসীন ছিলেন মনমোহন সিং। ২০০৬ সালের ১৭ জুলাই তদানীন্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য রাজ কুমার কোনার, কর্মসচিব সুনীল কুমার সরকারের কাছে জানতে চান, বোধীরূপা সিনহার নিয়োগ সংক্রান্ত বেনিয়ম গুলো তুলে ধরেই।
আরও পড়ুনঃ কোভিড বিধি মেনেই শুরু হল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা শ্রমিক মেলা
প্রশ্ন তোলেন, কেন বোধীরূপা সিনহাকে প্রয়োজনীয় ডিগ্রী সংক্রান্ত শংসা পত্র দেখাতে ৬ মাস সময় দেওয়া হলো? মনে হচ্ছে, নিয়োগের সময় স্নাতকত্তোর ডিগ্রির আসল প্রমাণ পত্র তাঁর কাছে ছিল না। সেই চিঠি তিনি তদানীন্তন রেক্টর গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর কাছে পাঠান এবং চিঠির নীচে নোট দিয়ে লেখেন স্থায়ী উপাচার্য আসা পর্যন্ত তাঁর নিয়োগ স্থগিত রাখার মতামত দেন।
সুজিত বসুর পর, রজতকান্তি রায়, সুশান্ত দত্তগুপ্ত এবং বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সহ এতগুলো স্থায়ী উপাচার্য ছিলেন বিশ্বভারতীতে, কিন্তু এই বেনিয়মের উপর কোন আলোকপাত হয়নি। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, কবি গুরুর আশ্রমে কিভাবে অবহেলায় নিয়ম ভাঙা হতে পারে? প্রশ্ন তুলছেন আশ্রমিকরাও।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584