নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
শিবির করে বিদ্যালয় পড়ুয়াদের সূর্যগ্রহণের দৃশ্য দেখালো বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার ছিল সুর্যগ্রহণ। তাই বিদ্যালয় পড়ুয়াদের এই দৃশ্য দেখানোর জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা ২নং নম্বর ব্লকের গোয়ালতোড়ের আমলাশুলি ইন্দ্রনারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই শিবিরের আয়োজন করা হয়।
বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে সেজন্য সান ফিল্টার দেওয়া হয়। ওই সান ফিল্টারের মাধ্যমেই মহাজাগতিক এই বিরল দৃশ্য উপভোগ করে বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে এই দৃশ্য দেখানোর জন্য বুধবার থেকেই বিদ্যালয়ে আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তাঁবু খাটিয়ে পড়ুয়াদের গ্রহণ দেখানোর ব্যবস্থার পাশাপাশি গ্রহণ বিষয়ক আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয় বিদ্যলয়ের পক্ষ থেকে। আর এই বিরল দৃশ্য দেখার জন্য এদিন সকাল থেকে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
আরও পড়ুনঃ NPR নিয়ে বহু প্রশ্ন ও আশঙ্কার মাঝে বিরোধিতার আহ্বান সমাজকর্মীদের
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ শিকদার জানিয়েছেন, ‘এর আগে আমরা শুক্রের সূর্য অতিক্রমের ঘটনা দেখানোর ব্যাবস্থা করেছিলাম, তাতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করেছিলাম।
তাদের সেই উৎসাহকে মাথায় রেখেই এদিন আমরা সূর্যগ্রহণ দেখানোর ব্যাবস্থা করেছি।এবারও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। আরো জানা যায় বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত এই সুর্যগ্রহণের দৃশ্য দেখানো হবে।
আরও পড়ুনঃ উত্তরবঙ্গে গিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন দিলীপের
পাশাপাশি, জন সাধারনের মধ্যেও সূর্যগ্রহণকে উপলব্ধি করার জন্য উদ্দীপনা দেখা যায়। জেলার কেশপুরের জামিরা গ্রামে সূর্য গ্রহন দেখার জন্য কেউ ছাদের উপরে উঠে এক্সরে প্লেট নিয়ে সূর্যগ্রহণ দেখতে ব্যস্ত আবার কেউবা মাঠের ধারে দাঁড়িয়ে এই সূর্যগ্রহণকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করছে, এমনই ছবি ধরা পড়ল আমাদের ক্যামেরায়, যেখানে এমনই চিত্র উঠে এসেছে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ছাদের উপর দাঁড়িয়ে এই সূর্যগ্রহণকে উপলব্ধি করার চেষ্টা চলছে।
ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটি ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল শাখা ছাত্রদের সূর্যগ্রহণ দেখানোর লক্ষ্যে তাদের যন্ত্রাংশ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ঘাটাল বিদ্যাসাগর স্কুল মাঠে। এদিন সকাল থেকেই এলাকার ছাত্রছাত্রীরা আসতে শুরু করেছিল সূর্য গ্রহন দেখার জন্য।
আরও পড়ুনঃ হারানোর জমি ফিরে পেতে বড়দিনে সাংগঠনিক বৈঠকে গৌতম
কিন্তু বাধ সাধলো আবহাওয়া। মেঘলা আকাশ ঢেকে ফেলেছে সূর্যকে। যার ফলে ছাত্রদের আর সূর্যগ্রহণ দেখা হলো না। তার সাথে ঝিরঝিরিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে সকাল থেকেই, দুই মিলে হতাশ ছাত্ররা মেঘে ঢাকা সূর্যকে এক পলক দেখার লক্ষ্যে টেলিস্কোপে চোখ রেখে চলেছে এলাকার সকল ছাত্র ছাত্রীরা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের পাশাপাশি এদিন পূর্ব মেদিনীপুরেও একই উদ্দীপনা দেখা গেল সূর্যগ্রহণ দেখতে। বাড়ির ছাদ মাঠে-ঘাটে এমনকি নদীর ধারেও দেখা গিয়েছে মানুষজনের ভিড়, চোখে সান ফিল্টার লাগিয়ে কেউ কেউ সূর্যগ্রহণকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করছে, আবার কেউ এক্সরে প্লেট নিয়েও চেষ্টা চালাচ্ছে সূর্যগ্রহণকে দেখার।
আর এই সূর্য গ্রহণের দিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটে রূপনারায়ণের পাড়ে গৌরাঙ্গ ঘাটে একটি ভ্রমণ সংস্থার উদ্যোগে বিশেষ চশমার মাধ্যমে সূর্য গ্রহণ দৃশ্য দেখার ব্যবস্থা করা হয় এই দিন।
আরও পড়ুনঃ মদ্যপ জামাইয়ের হাতে খুন শাশুড়ি
প্রায় দুশো জন আগ্রহী মানুষের হাতে সান ফিল্টার পেপার দিয়ে তৈরি এই বিশেষ চশমা বিনামূল্যে তুলে দেওয়া হয় এলাকার মানুষজনকে।এক একটা চশমায় একের পর এক প্রায় দশ/বারো জন করে এই মহাজাগতিক অপার্থিব সূর্য গ্রহণ দৃশ্য দেখেন। সকাল আটটা থেকে বেলা এগারোটা এই সময় গৌরাঙ্গঘাটে আগ্রহী মানুষের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
সূর্যের বলয় গ্রহন দেখার জন্য এলাকার মানুষকে দেখার ব্যবস্থা করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল বিজ্ঞান কেন্দ্রের তরফ থেকে। বৃহস্পতিবার মহিষাদল জাগরন সংস্থার ব্যবস্থাপনায় মহিষাদল বিডিও অফিস সংলগ্ন মাঠে এই অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়।
সূর্যগ্রহণ নিয়ে মানুষের মধ্যে যে কুসংস্কার রয়েছে তা দূর করার জন্য এই উদ্যোগ। কথিত আছে সূর্য গ্রহন লাগলে বাড়ি থেকে বাইরে বেরোনো চলবে না, আবার সেই সময় নাকি কোন খাবার খাওয়া যাবেনা, শুধু তাই নয় রান্নার জন্য সবজি পর্যন্ত কাটতে পারবে না মানুষজন, এবার এই কুসংস্কারকে দূর করার লক্ষ্যেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন, এইদিন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহিষাদল বিজ্ঞান কেন্দ্রের সম্পাদক চিকিৎসক সুব্রত মাইতি, মহিষাদলের বিডিও জয়ন্ত দে সহ অন্যান্যরা। উন্নতধরেন চশমার সাহায্যে গ্রহণের দৃশ্য উপভোগ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584