নিউজফ্রন্ট, ওয়েবডেস্কঃ
২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ভারতের সংবিধানকে সামনে রেখে শপথ গ্রহণ করে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হলেন দুই যুগল। সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠের মধ্য দিয়ে আজীবন ধর্মনিরপেক্ষ থাকার শপথ গ্রহণ করলেন তারা।
অরিজিৎ মহাপাত্র(২৭) ও শিবালিকা প্রধান(২৫) ভুবনেশ্বরের একটি বিয়েবাড়িতে নিজেদের দাম্পত্য জীবনে প্রবেশ করার ফিতে কাটলেন ২৬ জানুয়ারি। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বিবাহযজ্ঞ ১৫ মিনিটেরও বেশি স্থায়ী হয়নি। তার মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে যাবতীয় রীতি রেওয়াজ। তবে ব্যান্ড বাজিয়ে, সেজেগুজে, ভোজ খাইয়ে যেভাবে যে কোনও আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হয়, সেই সব ব্যবস্থাই ছিল এই বিবাহ অনুষ্ঠানে। আমন্ত্রিত ছিলেন প্রায় ১৫০ জন অতিথি।
সর্বভারতীয় গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ সূত্রে জানা যায়, পাত্র অরিজিৎ মহাপাত্র বলেন, “আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না। আমি আমার কর্মে বিশ্বাস রাখি এবং আমার মা-বাবাই আমার কাছে ভগবানের মতো।”
সংবিধানকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করার প্রসঙ্গে অরিজিৎ বলেন, “সংবিধান সবাইকে একত্রিত করে, সংহতি বাড়ায়। জাত, ধর্ম নির্বিশেষে কাউকে পৃথক করে না। সবাইকে ভারতীয় হিসেবেই দেখে। আমরা জীবনের শেষ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকতে চাই।”
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন যে আমি যেভাবে বড় হয়ে উঠেছি সেই পরিবেশে জাত-পাত, ধর্মের নিরীখে কাউকে তফাৎ করা হয় না। আমি আমার ভবিষ্যৎ স্ত্রীকে তাই জানাই আমরা এই ভাবে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হতে পারি। সেও রাজি হয়ে যায় এই প্রস্তাবে।
আরও পড়ুনঃ শুরু আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার কাউন্টডাউন
অন্যদিকে শিবালিকা, যিনি গণিতে একজন গোল্ড মেডেলিস্ট এবং খুব শিগগিরি কলেজে লেকচারার হিসাবে পড়াতে চলেছেন তিনি জানান, “আমার বাবা নৌবাহিনীতে কাজ করার দরুণ ছোট থেকেই আমাকে গোটা ভারতবর্ষ ঘুরে বেড়াতে হয়েছে। একটা বিষয় উপলব্ধি করেছি সংবিধানই গোটা ভারতবাসীকে একত্রিত ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছে। তাছাড়া আমার মা-বাবা চেয়েছিলেন আমার স্বামী একজন শিক্ষিত মানুষ হন; ধর্ম-জাতপাত এসব কিছুই এইক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।”
বলা বাহুল্য ২০২০ সালে দাঁড়িয়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশ ভারতবর্ষে শাসক দল যখন দেশের আপামর জনগণের উপর অসাংবিধানিক আইনের নামে সিএএ চাপিয়ে দিতে চলেছেন, তখন ভুবনেশ্বরের এই যুগল নতুন উপায়ে বিয়ে করে উদারতার অনন্য নজির গড়লেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584