ওয়েবডেস্কঃ
দীর্ঘ লড়াইয়ের শেষে ভারতে প্রথম জাতধর্ম-মুক্ত পরিচয়ের আইনি স্বীকৃতি পেল তামিলনাড়ুর স্নেহা ! গত ৫ই ফেব্রুয়ারী তিনি তামিলনাড়ুর তিরুপাত্তুরের তহশিলদার টি এস সত্যমুর্তীর কাছ থেকে ‘জাত-ধর্ম বিহীন’ সার্টিফিকেট পান।
পৃথিবীর সূচনা লগ্ন থেকে জাত- ধর্ম ভেদাভেদকে কেন্দ্র করে এ পৃথিবী জুড়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে।ইতিহাস তার সাক্ষী। হাজারো লেখনি ঘাটলে প্রমাণ পাওয়া যায় বহু মানুষ যুগে যুগে এসব ভেদাভেদের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভেবেছেন । কিন্তু পারিবারিক বাধ্যবাধকতা কিংবা সামাজিক টানাপোড়েনের ভয়ে পিছিয়ে গেছেন । তবে এসবের উর্ধ্বে গিয়ে ও জাত-পাত বা ধর্মের ভেদাভেদকে তোয়াক্কা না করে জাত – ধর্ম হীন পরিচয় নিয়ে বাঁচতে চাওয়ার দীর্ঘ লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন তামিলনাড়ুর এম এ স্নেহা ।
পেশায় আইনজীবী ৩৫ বছরের স্নেহা সম্ভবত দেশের প্রথম যিনি জাত ধর্ম মুক্ত পরিচয়ের আইনি স্বীকৃতি পেলেন । খুব ছোটবেলা থেকেই তার মনে এই জাত ধর্ম সংক্রান্ত ভেদাভেদের নিষ্পত্তি নিয়ে চিন্তাভাবনা তৈরি হয় । এর কারণ অবশ্য তার পরিবার । স্নেহার বাবা তাদের তিন বোনের নাম রেখেছিলেন হিন্দু, খ্রিস্টান ও মুসলিম ধর্মের অনুকরণে । তিনি স্নেহা, তার আর এক বোন জেনিফার, আর অন্যজন মমতাজ ।
স্নেহার কথায় “আমি ২০১০ সাল থেকে এই সার্টিফিকেট চাইছিলাম। কোনও না কোনও কারণে সেটা ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কেউ কেউ বলছিলেন আমাদের দেশে এরকম আইন নেই, যেখানে ধর্ম এবং জাত পরিচয় ছাড়া বাঁচা যাবে।”
তিনি আরো জানান “আমি ২০১৭ সাল থেকে আরও স্পষ্ট করে আমার অবস্থান বোঝাতে থাকি। সরকারি আধিকারিকদের আমি বলতে শুরু করি, আমার যুক্তি যেন বোঝার চেষ্টা করা হয়, সংরক্ষণ অথবা সরকারের কোনো প্রকল্পে আমার নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য দাবি করছি না ”
তবে স্নেহার জন্য সবথেকে খুশীর বিষয় এটা যে তার স্বামী প্রফেসর পার্থিব রাজা স্নেহার এই লড়াইকে ভাগ করে নিয়েছেন । সেজন্য তারা তাদের তিন কন্যার নাম মুসলিম,বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান ধর্মের নামের অনুকরণে রেখেছেন । তাদের তিন কন্যা আধিরাই নাসরিন, আধিলা আইরিন ও আরিফা জেসি।
(ছবি সৌজন্যে-দ্যা হিন্দু)
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584