নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ারঃ
এক সময় গ্ৰামে গেলেই শোনা যেত তাঁত বোনার খটাখট আওয়াজ, কিন্ত এখন গ্ৰামে গেলে আর শোনা যায়না সেই আওয়াজ। চারিদিকে শুধু বিরাজ করছে নিঃশব্দতা। টানা লকডাউনের তীব্র প্রভাব পড়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের উত্তর মেন্দাবাড়ি রাভা বস্তির তাঁতীপাড়ায়।
এই এলাকায় প্রায় ৪০ টি পরিবারের চল্লিশ জন মহিলা তাঁত বুনে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। এদের বোনা কাপড় পাড়ি দেয় ভিনরাজ্য ও বিভিন্ন জেলার কোনায় কোনায়। কিন্ত টানা লকডাউনের ফলে বন্ধ তাঁত, বর্তমানে রাভা মহিলারা তাঁত বন্ধ করে রেখে দিয়েছে। কিন্তু কেন বন্ধ রয়েছে তাঁত ? এই প্রশ্নের উত্তরে রাভা মহিলারা জানান, আমরা ভুটান থেকে ও কোচবিহার থেকে সুতো আনি, কিন্ত এখন লকডাউনের ফলে বন্ধ সব জায়গা,ফলে সুতো আমদানি করতে পারছিনা এর জন্য আমাদের কাপড় বোনা বন্ধ।
এছাড়াও লকডাউনের আগে যেসমস্ত কাপড় বোনা হয়েছিল সেগুলো ঘরে পড়ে আছে, সেগুলো বিক্রিও করতে পারছিনা। রাভা মহিলারা আরো জানান, বর্তমানে আমরা চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিনযাপন করছি। কারণ তাঁত বুনে আমরা ছয় থেকে সাত হাজার টাকা মাসিক আয় করতাম এবং এটাই ছিল আমাদের আয়ের প্রধান উৎস। কিন্ত এখন আয় বন্ধ ।
আরও পড়ুনঃ জঙ্গলে যাবার মাঝ পথেই বেহাল তবিয়তে জলযোগ সারলো “গজরাজ”
একটা সময় এই রাভা বস্তির তাঁতী পাড়াতে পা রাখলেই তাঁত চালানোর খটাখট আওয়াজ কানে আসতো, দেখা মিলতো রাভা মহিলারা তাঁতে কাপড় বুনছে এখন আর কানে আসে না সেই আওয়াজ। দেখা মেলেনা তাঁত চালানোর।
রাভা মহিলারা জানান ২০১৬ সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কালচিনি এফ পি ও এর সহযোগিতায় এই এলাকার ৩৬ টি রাভা মহিলাকে হস্তচালিত তাঁত প্রদান করা হয় তারপর থেকেই এখানকার মহিলারা সবাই তাঁতে কাপড় বোনা শুরু করে প্রথমাবস্থায় এলাকায় তাদের বোনা কাপড় বিক্রি হত এবং পরবর্তীতে কালচিনি এফ পি ও এর সহযোগিতায় তাদের বোনা কাপড় পাড়ি দেয় সুদূর দীল্লিতেও। তাদের বোনা কাপড় ভালোই চাহিদা ছিল, সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্ত বাধ সাধলো লকডাউন। করোনা জেরে লকডাউন জারি হওয়ায় সবকিছু বন্ধ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584