নিজস্ব সংবাদদাতা,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
বালুরঘাটের সীমান্ত গ্রামের মুশকিল আসান চকোলেট দাদুকে বঙ্গরত্ন পুরস্কারে ভূষিত করলেন রাজ্য সরকার। সীমান্তের গ্রাম গুলিতে চকোলেট দাদু নামে নিজের পরিচিতি থাকলেও তার পোষাকি নাম তাপস কুমার চ্যাটার্জী।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের রথতলার ৭২ বছরের বাসিন্দা তাপস কুমার চ্যাটার্জী একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। সরকারি কর্মী হিসেবে এসসিএসটি দপ্তরে দীর্ঘদিন ইনেসপেক্টর পদে চাকরি করলেও, যে সময় উনি এই পদে ঢুকেছিলেন সেই সময় এই চাকরির কোন স্থায়িত্ব ছিল না ।
তাই চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি কোন সরকারি পেনশন বা অনান্য কোন সরকারি সুবিধে পান না। চাকরির অবসর কালে গ্র্যাচুয়িটি বা পি এফ বাবদ ফান্ড থেকে যে সঞ্চিত অর্থ পেয়েছিলেন সেই নিয়েই হাসি মুখে সীমান্তের গ্রাম গুলিতে ঘুরে ঘুরে পরের মুশকিল আসানে নিঃস্বার্থ ভাবে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন ।
আরও পড়ুনঃ সামশেরগঞ্জে এসডিপিও অফিসের উদ্বোধনে ডিআইজি
সীমান্তের গ্রামগুলি বেশির ভাগ এসটি ও এসসি এবং আদিবাসী ভুক্ত এলাকা। চাকরি জীবনে সেই সব গ্রাম গুলিতে কাজ করতে গিয়ে খুব সামনে থেকে এদের সামাজিক দুরাবস্থা দেখেছেন। দেখেছেন ঠান্ডার মধ্যে শীত পোশাক ব্যতীত শিশুদের ঘুরে বেড়াতে । দেখেছেন দুঃস্থ মেয়েদের নানান সমস্যা, তাদের অসহয়তার সুযোগ নিয়ে কত ভাবে অন্যেরা তাদের প্রতারিত করে থাকে। দেখেছেন অন্ন বস্ত্রের হাহাকারের পাশাপাশি অশিক্ষা এদের কেমন কুড়ে কুড়ে খায়।
আর এসব দেখতে দেখতেই তিনি চাকরির অবসরের পর সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন এই সব গ্রামের বাসিন্দাদের অন্ধকার জীবনে নিজের ক্ষুদ্র আর্থিক সাহায্যের মধ্যমে আলোর দিশা দেখাবেন। সেই শুরু তা এখনও বজায় রয়েছে। শীত, গ্রীষ্ম বর্ষা হোক কি করোনার মত অতিমারি তাকে কেউ আটকে রাখতে পারেনি ৷ পুজো বা বড়দিনে এই সব গ্রামের বাসিন্দাদের পাশে তার সীমিত উপহারের ডালি নিয়ে হাজির হন ।
আরও পড়ুনঃ কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রীর ভিডিও বার্তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন পশ্চিম মেদিনীপুরে
গ্রামে ঢুকলেই যে সব বাচ্চা শিশুরা তার কাছে ছুটে আসে। তাদের কে তার কাঁধে থাকা ঝোলা থেকে মুঠো মুঠো চকোলেট হাতে তুলে দিতেই শিশুগুলির মুখ হাসিতে ভরে ওঠে ৷ তাপস চ্যাটার্জি নাম হলেও চকোলেট দাদু নামেই একডাকে চেনে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাবাসী ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584