উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
খাস কলকাতার বুকে শুক্রবার ভোরে বাইপাসের রাস্তায় চলন্ত বাইক থেকে হলুদ ট্যাক্সিতে তুলে নেওয়া হয় মহম্মদ নাদিম নামে তিলজলার এক যুবককে। ট্যাক্সির মধ্যেই তার সঙ্গে থাকা একুশ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, এরপর নাদিমের মাথায় পিস্তল ধরে ভাইকে ফোন করিয়ে বোনের বিয়ের জন্য রাখা তিন লাখ টাকা চলন্ত ট্যাক্সিতেই আদায় করা হয় বলে আরও অভিযোগ। মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দেওয়ার পরই দুষ্কৃতীরা মহম্মদ নাদিমকে ছেড়ে দেয়। তিলজলায় অপহরণে সামনে এল এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিলজলা লেনের বাসিন্দা ২৯ বছরের মহম্মদ নাদিম পেশায় ওয়েব ডিজাইনার। শুক্রবার ভোরে বাইকে করে সল্টলেক থেকে বাড়ি ফিরছিলেন নাদিম। নাদিমের সঙ্গে তাঁর আরও এক বন্ধুও অন্য বাইকে ছিলেন। তিনিও বাড়ি ফিরছিলেন। নাদিম জানিয়েছেন, পরপর ৩ বার তাঁর বাইককে চেপে দেয় অভিযুক্ত ট্যাক্সিটি। এরপর সায়েন্স সিটির কাছে বোটিং ক্লাব এলাকায় তাঁকে ছুরি দেখিয়ে জোর করে ট্যাক্সিতে তোলে। হলুদ রঙের ওই ট্যাক্সিতে চালক সহ মোট ৪ জন ছিল। এরমধ্যে ৩ জনই পরিচিত নাদিমের।
নাদিম অভিযোগ করেছেন, গাড়ির মধ্যে তাঁর উপর অত্যাচার করে ওই দুষ্কৃতীরা। বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁর কাছে থাকা ২১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। একইসঙ্গে নাদিমকে হুমকি দেয়, বাড়ি থেকে আরও টাকা না নিয়ে এলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে তাঁকে। বোনের বিয়ের জন্য বাড়িতে ৩ লাখ টাকা রাখা ছিল। সেই পুরো টাকাটা দেওয়ার পরই নাদিমকে ছাড়ে ওই দুষ্কৃতীরা।
আরও পড়ুনঃ ভয়াবহ বিস্ফোরণ তামিলনাড়ুর বাজি কারখানায়, মৃত অন্তত ১১
জানা গিয়েছে, মহম্মদ নাদিম নামে আক্রান্ত ওই যুবক তিলজলার বাসিন্দা। ঘটনার সময় তিনি বাইকে করে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ই তাঁর বাইকের পথ আটকায় একটি ট্যাক্সি। ধাক্কা মেরে চলন্ত বাইক থেকে নাদিমকে ফেলে দেয়। এরপরই ট্যাক্সি থেকে নেমে আসে তিন জন। জোর করে তারা মহম্মদ নাদিমকে ট্যাক্সিতে তুলে নেয়। তারপর চলন্ত ট্যাক্সির মধ্যেই মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তিন লক্ষ টাকা চায়। শেষপর্যন্ত নাদিম তাঁর ভাইকে ফোন করে টাকার ব্যবস্থা করেন।
আরও পড়ুনঃ পাটকাঠি বোঝাই লরিতে অগ্নিকাণ্ড, চাঞ্চল্য নন্দকুমারে
তবে টাকা লুঠ করার পরই কসবার অ্যাক্রোপলিস মলের কাছে তাঁকে চলন্ত ট্যাক্সি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়। এরপরই ট্যাক্সি ছুটিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন মহম্মদ নাদিম। এরপরই ঘটনায় তদন্তে নামে প্রগতি ময়দান থানা। খতিয়ে দেখা হয়, ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ট্যাক্সি চালক সোহেল আলি ওরফে আমন ও শেখ আনসার ওরফে নিয়াজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের জেরা করে বাকিদের ধরার চেষ্টা করছেন লালবাজারের দুঁদে গোয়ান্দারা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, আক্রান্ত ওই যুবকের সল্টলেকে একটি কল সেন্টার রয়েছে। সেই নিয়েই গত বেশ কয়েকদিন ধরেই মূল অভিযুক্তের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল তাঁর। আর সেজন্যই এই ঘটনাটি ঘটেছে। এমনটাই মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তবে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584