মনিরুল হক, কোচবিহারঃকলেজের ছাত্রছাত্রী আয়োজিত শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেই অনুষ্ঠান মঞ্চ ত্যাগ করে চলে যান শিক্ষকরা।অভিযোগ, কলেজে বহিরাগত ছাত্রছাত্রীরা ঢুকে পড়েছে।এই অভিযোগে শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে সংবর্ধনা না নিয়েই অনুষ্ঠান মঞ্চ ত্যাগ করায় শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের তোপের মুখে পড়েন শিক্ষক শিক্ষিকারা।
আর এই ঘটনার পরপরই শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃনমূল ছাত্র পরিষদ ও বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপির সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।ওই সংঘর্ষে এবিভিপির পাঁচজন আহত হয়েছেন।আহতদের উদ্ধার করে মেখলিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মেখলিগঞ্জ থানায় বিশাল পুলিশ বাহিনী।উত্তেজিত থাকায় ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। যদিও ওই ঘটনায় এবিভিপির ছাত্ররা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরূদ্ধে মেখলিগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়৷
এবিষয় নিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা টিআইসি সুজয় পাল জানিয়েছেন “শিক্ষক দিবস পালন করা নিয়ে দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই রেষারেষি চলছিল।ফলে আমরা দুই ছাত্র সংগঠনকেই জানিয়ে দিয়েছিলাম শিক্ষক দিবসের প্রোগ্রাম নিরপেক্ষভাবে করতে হবে, কোন রাজনৈতিক কালারে না করে কলেজের যারা ছাত্রছাত্রী তারা এই প্রোগ্রাম করবে।এর পাশাপাশি আমরা শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বলেছিলাম যে শিক্ষক দিবসের প্রোগ্রাম বহিরাগতদের আসা চলবে না।কিন্তু প্রোগ্রাম শুরু হলে আমরা দেখতে পাই সেখানে প্রচুর বহিরাগতদের আগমন ঘটেছে।ফলে আমরা সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করার পর অনুষ্ঠান মঞ্চ ত্যাগ করি।আমরা জানিয়ে দিই যে বহিরাগত ছাত্রছাত্রীরা আসার কারণেই আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা নিতে পারছি না।এর পরেই একদল উত্তেজিত ছাত্রছাত্রী যাদের অধিকাংশ বহিরাগত তারা আমাদের গালাগাল করতে থাকে হুমকি দিতে থাকে।”
এবিভিপির নেতা ও কলেজের জিওগ্রাফি অনার্স থার্ড ইয়ারের ছাত্র অনুভব দত্ত অভিযোগ করে করে বলেন,”কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মান জানাতে আমরা কলেজে হাজির হয়েছিলাম।কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি সমস্ত বহিরাগতদের নিয়ে এসে অনুষ্ঠান করছে টিএমসিপির লোকজন।টিএমসির বহিরাগতরা এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিল।সেই বহিরাগতরাই স্যার এবং ম্যাডামদের গালাগাল দেয়।আমাদের সংগঠনের ছেলেরা কলেজ গেটের বাইরে বসে ছিল। স্যার ম্যাডামরা বহিরাগতরা এসেছে বলে ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে সংবর্ধনা না নিয়ে যখন বেরিয়ে আসে তখন স্যার ম্যাডামদের উদ্দেশ্য করে টিএমসিপির এই বহিরাগতরা গালাগাল দিতে থাকে।এরপর কলেজের চেয়ার টেবিল ভেঙে তার বাটাম নিয়ে এসে আমাদের ছেলেদের মারধোর করে আমাদের পাঁচজন জখম হয়েছে তাদের মধ্যে আমি এবং আর একজন পাস আউট ছাত্র ইরফান প্রামাণিক আহত হয়ে মেখলিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি।”
টিএমসিপির মেখলিগঞ্জ কলেজ ইউনিটের ইউনিট প্রেসিডেন্ট শাহীনুর ইসলাম এবিভিপির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে বলেন,”কলেজে আমরা আজ শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম কিন্তু এবিভিপির কিছু বহিরাগত ছেলে এসে সেই প্রোগ্রাম পন্ড করে দেয়। এই ঘটনার জন্য দায়ী এবিভিপির সদস্যরা।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584