নিজস্ব সংবাদদাতা,বহরমপুরঃ
কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানে লোকসভা ভোট ‘অপূর্ব’ ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।এবার সকলে ‘অধীর’ আগ্রহে ফলাফলের অপেক্ষায়।
বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল ও কংগ্রেস দুই যুযুধান শিবিরের দুই প্রার্থীর নাম ব্যবহার করে তৈরি এ ট্যাগলাইন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছে।
মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে দ্বিমুখী লড়াই হয়েছে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে অধীর চৌধুরীর মনোনয়ন পত্র থেকে শুরু করে প্রচারপর্ব সবেতেই ছিল অপূর্ব বাবুর একাধিপত্য।
আরও পড়ুনঃ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা অধীরের
কিন্তু ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে সেই অপূর্ব সরকারই অধীর চৌধুরীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে উঠে এসেছেন। ফলে সাধারণ মানুষের কাছে লোকসভা ভোট পূর্ববর্তী চিত্রটাও একটু বদলে গেছে।
জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রেও মূলত কংগ্রেসের অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ও তৃণমূলের খলিলুর রহমানের মধ্যে দ্বিমুখী লড়াই হয়েছে।
তবে মুর্শিদাবাদ লোকসভা আসনে তৃণমূলের আবু তাহের খান,কংগ্রেসের আবু হেনা ও বামফ্রন্টের বদরুদ্দোজা খাঁন এর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হয়েছে।নিজের কেন্দ্র বাদে বাকি দুই কেন্দ্রেও প্রাক্তণ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কংগ্রেস প্রার্থীদের হয়ে নিয়মিত প্রচার চালিয়েছেন।
অন্যদিকে শাসকদলও এই আসনগুলি নিজ অধিকারে পেতে মরিয়া।প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর ও জঙ্গিপুর আসন দুটি কংগ্রেসের এবং মুর্শিদাবাদ আসনটি বামফ্রন্টের অধিকারে ছিল।
তবে বিগত পাঁচ বছরে বিভিন্ন নেতা ব্যাক্তিদের দলবদল সাধারণ মানুষের মতামত কতটা প্রভাবিত করতে পারবে সেটাই দেখার।
আপাতত সকলের পাখির চোখ বহরমপুর আসনটি। কারণ আপাত দৃষ্টিতে লড়াইটা অধীরবাবু ও অপূর্ব বাবুর মধ্যে মনে হলেও এই আসনটিতে আসল পরীক্ষা জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী ও অধীর চৌধুরীর সাংগাঠনিক দক্ষতার।
প্রাকনির্বাচনী প্রচারপর্ব থেকে শুরু করে সবকিছুতেই তাই শাসকদল এই আসনটির দিকে বাড়তি নজর রেখেছে।
অধীরবাবুর প্রাকনির্বাচনী প্রচারপর্বে সেভাবে কোনো বাড়তি আকর্ষণ ছিল না।
তবে নির্বাচনের দিন অর্থাৎ গত ২৯ শে এপ্রিল সকাল থেকেই অধীরবাবু যেভাবে নিজে এক বুথ থেকে বুথে ছুটে বেড়িয়েছেন তা ছিল চোখে পড়ার মতো। নিজে গিয়ে কোনো বুথে এজেন্ট বসিয়ে এসেছেন আবার কোথাও বুথে ঢুকেই হাতেনাতে ধরেছেন ছাপ্পা ভোটদাতাকে। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে কর্মীদের বলেছেন “আরে আমিই তো কেন্দ্রীয় বাহিনী”।
অবশ্য বিরোধীরা বলছে তারা যেভাবে অধীর চৌধুরীর গতিবিধি শুধুমাত্র বহরমপুর শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে পেরেছে এটাই তাদের সফলতা।
জেলা তৃণমূলের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা খানিকটা রসিকতার ছলেই এক সামাজিক মাধ্যমে লেখেন “উনি সারাদিন বহরমপুরে ফিল্ডিং করলেন, আর ফাইন লেগ দিয়ে বল বেরিয়ে গেলো বাউন্ডারির ওপারে।”
বেলডাঙ্গা ও কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত কিছু বিশৃঙ্খলা হয়েছিল তবে কোনোরূপ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।মোটের উপর বহরমপুর লোকসভা আসনে নির্বাচন বেশ শান্তিপূর্ণই হয়েছে। এবার শুধু দেখার দীর্ঘ দিনের এই সাংসদ নিজের গড় রক্ষা করতে পারেন কি না। দেখার অধীরবাবুর রাজনৈতিক হুঙ্কারের তীব্রতা কমবে নাকি বাড়বে। আপাতত সবাই আগামী ২৩শে মে ফলাফলের দিকেই চেয়ে রয়েছেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584