মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
অভিনব আন্দোলনে সামিল হল ওয়েস্টবেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার ভোর থেকেই কোচবিহার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়ে স্কুল শিক্ষক যারা এখনও বাড়িতে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন তাদের কাছে গিয়ে গোলাপ ফুল ও লাড্ডু দিয়ে গান্ধীগিরি করলেন গৃহশিক্ষকদের সংগঠন।
আন্দোলনকারীদের দাবী, সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা চাকরির শর্ত আইন অনুয়ায়ী প্রাইভেট টিউশনি করতে পারেন না বলে দাবী গৃহশিক্ষক সংগঠনের।সেই আইন কড়া ভাবে প্রয়োগ করতে হবে জেলা প্রশাসনকে।মাস গেলে মোটা অঙ্কের বেতন পান।
আবার স্কুলের সময় টুকু বাঁচিয়ে বাড়িতে কিংবা কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট টিউশনিও করেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।স্কুলের যুক্ত থাকার কারণেই হোক কিংবা পড়ানোর গুণে,সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের কাছে ছেলে-মেয়ের প্রাইভেট পড়ানোর ঝোঁক থাকে অভিভাবকদেরও কিন্তু, ঘটনা হল, চাকরির শর্ত অনুযায়ী,সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা বাইরে কোথাও পড়াতে পারেন না।
আরও পড়ুনঃ স্বীকৃতির আশায় একুশে জুলায়ের প্রচারে গ্রামীন চিকিৎসক সংগঠন
এমনকী, সরকারি শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি না করার পক্ষে রায় দিয়েছে আদালত।প্রথম যখন নিয়মটি চালু হয়,তখন শিক্ষকদের মধ্যে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল।অনেকেই রাতারাতি প্রাইভেট টিউশনি করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন কিন্তু, আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুরোনো ব্যবস্থা ফের চালু হতেও বেশি সময় লাগেনি।
তারপর প্রাইভেট টিউশন নিয়ে ওয়েস্টবেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন কোচবিহার জেলা শাসক,জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারপার্সন এবং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দপ্তরে গিয়ে আবেদন ও পরে বিক্ষোভ দেখান।
যে সমস্ত স্কুল শিক্ষক প্রাইভেট টিউশন করান সেই সময় ওই শিক্ষকরা ওয়েস্টবেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কাছে মুছলেখা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা।পরে তাদের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোন সুরাহা হয় নি। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে নিজেরা যে সমস্ত স্কুল শিক্ষক এখনও প্রাইভেট টিউশন পড়াচ্ছেন তাদের বাড়িতে গিয়ে ফুল ও লাড্ডু দিয়ে গান্ধীগীরি করেন।
এদিন ওয়েস্টবেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অমিতাভ কর বলেন, “সারা পশ্চিমবঙ্গে তথা কোচবিহারে যে সকল স্কুল শিক্ষকরা এখনও প্রাইভেট পড়াচ্ছেন তাদের প্রাইভেট বন্ধ করার দাবী দীর্ঘদিন ধরে আমরা জানিয়েছি।এমনকি মুখ্যমন্ত্রী থেকে শিক্ষা মন্ত্রী সব জায়গাতে বারবার আবেদন করেছি।তাঁরা আশ্বাস দিয়ে ছিল।
এমনকি সেই আন্দোলনের চাপে পড়ে কোচবিহার শহর এবং শহর সংলগ্ন এলাকায় ৫৮ জন শিক্ষক গৃহশিক্ষকতা ছেড়ে দেবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন,এই দাবি আন্দোলনকারীদের।যদিও জেলাশাসকের কাছে মুচলেকাও দিয়েছেন তাঁরা। তাতেও কোন লাভ হয়নি। জেলার ৯০ শতাংশ শিক্ষক এখনও প্রাইভেট টিউশন করছেন।তারপর আমরা নিজেরা গিয়ে তাদেরকে বারবার বলেছিলাম আপনারা প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করুন।
তা স্বত্বেও তাঁরা এখন প্রাইভটে টিউশন পড়াচ্ছেন।তাই বাধ্য হয়ে আজ আমরা কিছু স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে তাদের হাতে গোলাপ ফুল ও লাড্ডু দিয়ে প্রাইভেট টিউশন যাতে আর না করে সেই কথা বলেছি।” অভিনব এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান অনেকেই।অহিংস ভাবে নিশ্চুপ আন্দোলন আদৌ সুফল আনবে কি সেটাই এখন দেখার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584