পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
বীরভূমে নির্বাচন মিটতেই দিকে দিকে বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে।মল্লারপুর, নানুর, সিউড়ি সহ একাধিক বিধানসভা এলাকায় বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলা করছে তৃণমূল কর্মীরা।সোমবার লোকসভা নির্বাচনের দিন বিজেপির পোলিং এজেন্ট হওয়ার অপরাধে সেন্টু বাউরী নামে একজনকে মঙ্গলবার সকালে তরোয়াল দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মল্লারপুরে।ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিজেপি সমর্থকরা চড়াও হয় বিকাশ বাউরী নামে ওই তৃণমূলের সমর্থকের বাড়িতে।এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে মল্লারপুর থানার পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত শীতলখুচি
পুলিশের সামনেই এলাকার বিজেপি কর্মীরা হাতে লাঠি,শাবল,ইট,নিয়ে বিকাশ বাউড়ীকে আক্রমণ করে।আক্রান্ত বিজেপি কর্মী সেন্টু বাউরি জানান, সোমবার নির্বাচনের দিন মল্লারপুর বটতলা ১৯ নম্বর বুথে বিজেপির পোলিং এজেন্ট হয়েছিল সে।তিনি বলেন, “ভোটের দিন তৃণমূল কর্মীরা বারবার আমাকে ভয় দেখিয়ে বুথ ছাড়া করতে চেয়েছিল,কিন্তু পারেনি।
তাই সোমবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আমি যখন বাজার যাচ্ছিলাম তখন বিকাশ বাউরি আচমকাই তরোয়াল দিয়ে আক্রমণ করে এবং ডান হাতে কোপ মারে। আমাকে বাঁচাতে আমার দাদা কার্তিক বাউরি ছুটে আসে তাকেও আক্রমণ করে সেও আঘাত পায়।” এরপর আহত দুই বিজেপি কর্মীকে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।এই আক্রমণের ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিজেপি কর্মীরা।তারা গিয়ে তৃণমূল নেতা বিকাশ বাউরির বাড়ি ঘেরাও করে রাখে।
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছায় মল্লারপুর থানার পুলিশ। পুলিশকে ঘিরে বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।এরপর কোনোক্রমে পুলিশ তৃণমূল নেতা বিকাশ বাউরি ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।যখন মল্লারপুর থানার পুলিশ ওই তৃণমূল নেতাকে গাড়িতে চাপিয়ে থানায় নিয়ে যায় সেই সময় গাড়ি ঘিরে বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।
তাদের দাবি এর আগে বারবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেও পুলিশ বিকাশ বাউরির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি।পুলিশ এলাকা ছেড়ে চলে যাবার পর বিকাশ বাউরির বাড়িটি বিজেপি কর্মীরা কার্যত দখল নিয়ে বিজেপির পতাকা টানিয়ে দেয়।বিজেপি কর্মীদের দাবি আজ থেকে বিকাশ বাউরির বাড়িটি বিজেপির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হবে।অন্যদিকে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের নানুরের ব্লক সভাপতি মনজ সাধু কে ব্যাপক মারধোরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
রাস্তায় ফেলে তাকে মারধর করা হয়, মনজ সাধুর মাথা ফেটে যায়,শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লাগে, পড়ে তাকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।বীরভূমের বিজেপি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় জানান, “নির্বাচনের আগে থেকে অনুব্রত মণ্ডল যেভাবে দিনের পর দিন হুমকি দিয়ে গেছে বিজেপি কর্মীদের তাতে এই হামলার ঘটনা ঘটবে বলেই আমরা জানতাম।
আমরা পুলিশকে বারবার বলেছিলাম বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটতে পারে আপনারা ব্যবস্থা নিন,কিন্তু পুলিশ আমাদের কোন কথায় পাত্তা দিল না। অনুব্রত মণ্ডল বুঝে গেছে বীরভূম জেলায় তৃণমূলের পায়ের তলায় মাটি আর নেই তাই এই বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতে চাইছে,কিন্তু এইভাবে বিজেপিকে দমানো যাবে না।
যত আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করবে তৃণমূল ততো আমাদের পায়ের তলায় মাটি শক্ত হবে। নানুর এবং মল্লারপুর এর হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে আমরা পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছি।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584