নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
নামেই সু-সংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প।যেখানে শিশুদের স্কুল যাওয়ার অভ্যাসের পাশাপাশি শিশুদের পুষ্টি ও মানসিক বিকাশ পরিবর্তনের জন্য একটি বিশেষ কেন্দ্র।
কিন্তু বাস্তবে স্কুল যাওয়ার অভ্যাস ছাড়া এখানে বাকি দিক গুলির ছিঁটে ফোটাও দেখা মিলবে না।এমনটাই হয়ে আছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা -২ ব্লকের পিংবনী -২ অঞ্চলের শাঁখাভাঙ্গা সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পটি।

বাম আমলে এই কেন্দ্রটি চালু হলেও নিজস্ব কোনো বাড়ি ছিলনা। ফলে এতদিন কেন্দ্রটি চলতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রান্নাঘরটিতে। ২০১৬ সালে ৯৮২৭১৬ টাকা ব্যয় করে নিজস্ব ভবন তৈরি হলেও একবছর আগে তা চালু হয়। বর্তমানে ভবনটি তৈরি হয়েছে বাঁশ বাগানের ঝোপের মধ্যে। যেখানে চারিদিকে ঝোপ জঙ্গলে পরিপুর্ণ। মশার গুনগুণানি নিত্য সঙ্গী।

ঝোপ জঙ্গলের মাঝেই কাঠের উনুনে হচ্ছে রান্না। যেখানে প্রশাসনের থেকে সতর্ক করা হচ্ছে বার বার পরিবেশ দুষণ রোধ করতে হবে।তার জন্য কাঠের উনুন বাদ দিয়ে রান্না করতে হবে গ্যাসে। সেই মতো সমস্ত স্কুলে সরকারিভাবে দেওয়া হয়েছে গ্যাস কানেকশন।অথচ এখানে সরকারী ভাবেই হয়ে চলছে পরিবেশ দুষণ। পাশেই রয়েছে গবাদিপশু বাঁধা।
আরও পড়ুনঃ বর্ধমান স্টেশনে কয়লার উনুনে রমরমিয়ে চলছে হোটেলের রান্না
নাম দেওয়া হয়েছে শিশু বিকাশ প্রকল্প। অথচ এখানে ঝোপ জঙ্গলের মাঝে এই কেন্দ্রে শিশুদের মানসিক বিকাশের কিছু পরিবর্তন তো হচ্ছেই না, উলটে শিশুরা ঝোপ জঙ্গলের মাঝে এই কেন্দ্রে শিশুরা আসতেই চাই না।২০১৬ সালের পর থেকে স্কুল চত্বর পরিস্কার না করার দরুন স্কুলের পরিবেশ সেই আগের পরিবেশেই ফিরে এসেছে দেখলে মনে হবে জঙ্গলমহলের মাঝখানে শিশুদের মানসিক বিকাশ পরিবর্তনের এক আদর্শ কেন্দ্র মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।
বাম আমলের তৈরি এই কেন্দ্রের মূল সমস্যা রাঁধুনির।এখনো নিয়োগ করা হয়নি রাঁধুনি। বার বার জানানো হলেও প্রশাসনের তরফে কোনো সদর্থক ভূমিকা দেখতে পাওয়া যায়নি এখনো।ব্লকের সুপারভাইজার রীণা ঘটকের কাছে রাঁধুনি নিয়োগের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি সম্পুর্ণভাবে প্রশাসনের উপর দোষারোপ করে জানান, “এটা সরকারের ব্যাপার।
কবে নিয়োগ করা হবে তা সরকারি বলতে পারবেন।আমরা এই ব্যাপারে কিছুই জানি না। তবে এটা হোম কোটা, হোমের কর্মী ছাড়া নিয়োগ করা হবে না।” তাঁরা প্রশাসনের কাছে রান্নি নিয়োগের ব্যাপারে কিছু জানিয়েছেন কিনা তার কোনো সদুত্তর তিনি দেননি।রাঁধুনি না থাকায় গ্রামের কয়েকজন মহিলাকে দিয়ে রান্না করানো হয়ে দৈনিক ২৫ টাকার চুক্তিতে।
যে মহিলা রান্না করেন তিনি নিজ দায়িত্বে কাঠ নিয়ে এসেই রান্না করেন।রান্না নিয়েও ভুরিভুরি অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।প্রায় দিন দেখা যায় খিঁচুড়ি,ভাত বা তরকারি সিদ্ধ হয় না বলে অভিযোগ। মাঝে মধ্যে বন্ধ থাকে রান্না। সেদিন কাঁচা ডিম দিয়েই পুষ্টির বিকাশ ঘটানো হয়।
কেন্দ্রের দিদিমণি চন্দনা সেন বলেন, “আমি কি করবো, সরকার যদি নিয়োগ না করে আমার তো কিছু করার নেই।আমি কয়েকজন মহিলাকে ঠিক করেছি রান্নার জন্য।
তাদের বাড়ির যেদিন সমস্যা হয় সেদিন না আসলে রান্না বন্ধ থাকে। দফতরে জানিয়েছি তাতেও কোনো সুরাহা হয়নি।” এখন দেখার বিষয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ শাসক দলের নেতা কর্মীরা বারবার বিভিন্ন স্থানে দাবী করেন জঙ্গলমহল হাসছে।
এগিয়ে বাংলা জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রাম শাঁখাভাঙা সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের কবে সুদিন ফিরবে তার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে গ্রামবাসী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584