সিমা পুরকাইত, দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ
বড়োসড়ো এক অস্ত্রকারখানার হদিশ পেল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জেলা পুলিশ। ঢোলাহাট থানার আমিরপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে ওই অস্ত্রভান্ডারের খোঁজ পায় পুলিশ।
প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা তৈরির মশলা এবং অস্ত্র তৈরির নানা সরঞ্জাম সহ দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত দুইজন হল জাহির মির (৩০),এরাদ লস্কর (২১)।
কিছুদিন আগে ঢোলাহাট থানার আমিরপুর গ্রামে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই সংঘর্ষে দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি হয়। ঘটনার তদন্তে নামে ঢোলাহাট থানার পুলিশ।
তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে ওই গ্রামেই কোনও এক বাড়িতে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা রয়েছে। যেখান থেকে সংঘর্ষে ব্যবহৃত বোমাগুলি কেনা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ব্যবসায়ীর দোকান থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার আনাজ চুরি
ওই অস্ত্র তৈরির কারখানা থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা এবং জেলার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা ও গুলি সরবরাহ করা হত।
এই অস্ত্র কারখানার হদিশ পেতে ঢোলাহাট থানার পুলিশ এবং সুন্দরবন জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল যৌথভাবে ওই গ্রামে বুধবার তল্লাশি চালায়। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামের বাসিন্দা জাহির মীরের বাড়ি ঘিরে ফেলে। সেই বাড়িতেই অভিযান চালিয়ে বিশাল ওই অস্ত্রভান্ডারের হদিশ পায় পুলিশ। হাতেনাতে ধরে ফেলা হয় দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি জানিয়েছেন, ঢোলাহাট থানার অফিসার ইন-চার্জ, মন্দিরবাজারের ডিএসপি এবং জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এক বিশেষ দল এদিন অভিযান চালায় ওই বাড়িটিতে।
আরও পড়ুনঃ চাষের জমি থেকে উদ্ধার বোমা
বাড়িটি থেকে তিনটি বড় রাইফেল, একটি ছোট রিভলবার, দুটি ওভার সোল্ডার লঞ্চার, তিন হাজারের বেশি তাজা বোমা, বোমা তৈরির মশলা, গান পাউডার, ছ’প্যাকেট বোমায় ব্যবহারের জন্য লোহার বল, ওয়েল্ডিং মেশিন এবং আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
বাড়ির মালিক জাহির মীর এবং মথুরাপুর থানার হরিণবাটির বাসিন্দা এরাদ আলি লস্কর নামে দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে অস্ত্র আইন ও সরবরাহ মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অভিযুক্ত দু’জনকেই বুধবার কাকদ্বীপ এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃত দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে জেরা করে এই ব্যবসার সঙ্গে বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঢোলাহাট থানা থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে গ্রামের মধ্যেই এত বড় অস্ত্র কারখানা দীর্ঘদিন ধরে চললেও তা গ্রামবাসী এবং পুলিশের কাছে এতদিন অজানা থাকায় বিস্মিত সকলেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584