শ্যামল রায়,পূর্বস্থলীঃ
প্রায় পাঁচ শতাধিক বছরের পুরনো জামালপুরে বাবা বুড়োরাজ এর পুজো ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে সন্ন্যাসীদের মধ্যে। প্রতিবছরের মতো এবছরও বৈশাখ মাসের শেষ পূর্ণিমায় বাবা বুড়োরাজের মন্দিরে পুজো হয়। কয়েক লক্ষ ভক্তের ঢল নামে এই মন্দিরে।
ইতিমধ্যেই হাজার হাজার সন্ন্যাসী উপস্থিত হয়েছেন।তারা এক মাস ধরে ব্রত পালন করে আগামী শনিবার পূর্ণিমার দিন পূজা দেবেন। এই বাবা বুড়োরাজ এর মন্দিরে পুজো ঘিরে বিগত দিনে ব্যাপক গন্ডগোল হতো।মানুষ খুনের ঘটনায় ঘটেছে।তাই কয়েক বছর যাবত ব্যাপক পুলিশি পাহারা এবং র্যাপ নামিয়ে নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় মন্দির চত্বর।
আগামী শনিবার পূর্ণিমার দিন বাবা বুড়োরাজ এর পুজো।রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে লক্ষাধিক ভক্তের ঢল নামে পুজো দেওয়ার জন্য। ভক্তরা বড় বড় গাড়িতে চেপে তাশা ব্যাঞ্জ বাজিয়ে পুজো দিতে আসেন।আগে এই মেলাকে কেন্দ্র করে প্রচুর বে-আইনি অস্ত্রের সমাগম হতো ভক্তদের মধ্যে।বাবা বুড়োরাজের মেলা মানেই একটা আতঙ্কের ছাপ থাকতো সকল ভক্তদের মধ্যে কখন যেন কী ঘটে যায় রক্তাক্ত ঘটনা। বিগত কয়েক বছর যাবত খুব শান্তিতে মেলা সম্পন্ন হচ্ছে বলে দাবি পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে।
আরও পড়ুনঃ পাজরায় শ্মশান রক্ষা কালী পুজোয় ভক্তদের ঢল
পূর্বস্থলী থানার পুলিশ জানিয়েছে যে ইতিমধ্যেই তারা মন্দির কমিটি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে এবং পুলিশ বিভাগের কর্মীদের সাথে আলোচনা শেষ করেছেন। কিভাবে মেলা প্রাঙ্গণে পুলিশ প্রশাসন কাজ করবে এবং নিরাপত্তা বজায় রেখে নজরদারি থাকবে সে ব্যাপারেও আলোচনা শেষ হয়ে গিয়েছে।সিসিটিভি থেকে শুরু করে ওয়াচ টাওয়ার থাকবে মেলা প্রাঙ্গণে।জেলার আধিকারিক পর্যায়ের পুলিশ প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবেন মেলা প্রাঙ্গণে যাতে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
এই বাবা বুড়োরাজের মন্দিরে প্রচুর পরিমাণে বলি প্রথা বজায় রয়েছে।প্রচুর ছাগ বলি পর্যন্ত হয়ে থাকে বলে খবর।ইতিমধ্যেই মন্দির প্রাঙ্গণে বহু ভক্ত তারা নিজেরাই সারাদিন উপোস থেকে রাতের বেলা রান্না করে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন রয়েছে মন্দির চত্বরে।বাবা বুড়োরাজ এর মন্দিরে যে ধরনের পুজো সংঘটিত হয় তা অন্য কোথাও হয় না বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।তাই বাবা বুড়োরাজ এর পুজো ঘিরে ইতিমধ্যেই প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা গিয়েছে ভক্তদের মধ্যে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ।মন্দির চত্বরে রয়েছে পুকুর,পুজোর দিন হাজার হাজার ভক্ত স্নান সেরে দন্ডি কেটে মায়ের পুজো দেন।
মন্দিরে রয়েছে বাবা শিবের ছবি এবং মূর্তি। দুধ দিয়ে পুজো দেওয়া হয় শিব কে।রয়েছে মনসা দেবীর নাগ।তাই পুরোহিতরা নিষ্ঠা সহকারে এই ভক্তদের পুজো দিতে নিজেরাও তৈরি হয়ে গিয়েছেন।পুজোর সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শিবিরসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত থেকে পুজো শান্তিতে ঘটে তার জন্য সমস্ত রকম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। থাকে মেডিকেল ক্যাম্প।প্রগ্রেসিভ রুরাল মেডিকেল প্রাকটিশনার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক জয়ন্ত চক্রবর্তী জানিছেন যে, তাদের তরফ থেকেও ভক্তদের জন্য মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়।
তাই এক কথায় বলা যেতে পারে যে আগামী শনিবার বাবা বুড়োরাজ এর মন্দিরের পুজো ঘিরে সমস্ত দিক থেকেই প্রস্তুতি শেষের পথে বলে জানা গিয়েছে। কোন প্রকার অশান্তি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তার জন্য নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে।নবদ্বীপ কৃষ্ণনগর রাস্তাতে পুলিশ নজরদারি এবং নাকা চেকিং এর ব্যবস্থা করে।এছাড়াও বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে নজরদারির ব্যবস্থা থাকে যাতে কোন ভক্ত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ওই মেলায় প্রবেশ করতে না পারে। বিভিন্ন ধরনের রামদা ধারালো অস্ত্র তরোয়াল নিয়ে মেলায় প্রবেশ নিষিদ্ধ তাই আগে থেকেই পুলিশের নাকা চেকিং রয়েছে এলাকায়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584