মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
রাজ আজ্ঞা তাই করে যেতে হয়। অসিহষ্ণুতা এই সময়ে বড় নজির কোচবিহার। ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে কোচবিহারের পূজা পার্বণ আচার বিধি পালিত হয় রাজ নিয়মে।
রাজা নেই, নেই তার রাজ্য শাসনও কিন্তু রাজ প্রথাকে মান্যতা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দপ্তরের অর্থানুকূল্যে কোচবিহার দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ড পরিচালনা করে পূজা পার্বণের অনুষ্ঠান।

শারদ উৎসব দীপাবলী সহ নানা ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান কোচবিহারে হয়ে থাকলেও, এই জেলার মূল উৎসব রাসমেলা। ইতিমধ্যে প্রশাসনিক স্তরে এর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামী কার্তিকী পূর্ণিমায় এই মেলার সূচনা হবে। এই মেলার মূল আকর্ষণ কাগজের তৈরি রাসচক্র। যা বংশ পরম্পরায় নির্মাণ করছেন ইসলাম ধর্মের বিশ্বাসী শিল্পী আলতাফ মিঞা।
এটাই নিয়ম, এটাই প্রথা যে রাসচক্রকে ঘিরে কোচবিহার তথা অসম বাংলার মানুষের আকর্ষণ তার নির্মাণ কল্পেও রয়েছে নানান বিধি।
আরও পড়ুনঃ পেল্লাই সাইজের জিলিপি হাড়দার লক্ষ্মী পুজোর মূল আকর্ষণ
কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমার গোটা দিন নির্জলা উপোস থেকে এই নির্মাণ কল্পে হাত দেন তিনি। লক্ষ্মী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত দীর্ঘ ১ মাস গোটা পরিবার এই সময় কালে নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন। ঘরে তার লক্ষ্মীব্রত না হলেও এই পূজার সমস্ত নিয়ম আচার পালন করে রাসচক্র নির্মাণের সূচনা করেন তিনি।
কাগজ, কাঠ, বাঁশ দিয়ে তৈরি এই রাসচক্র নির্মাণ হয় হিন্দু, মুসলিম, শিখ ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির আদলে। মুসলিম ধর্মের মহরমের তাজিয়া, বৌদ্ধ ধর্মের গম্বুজে ৩২ টি হিন্দু দেব দেবীর ছবিতে নির্মাণ হয় অষ্টকোনের এই চক্র। এই রাস চক্র ঘুরিয়ে পূর্ণাজন হয় বলে বিশ্বাস ধর্ম প্রান মানুষের।
শিল্পী আলতাফ মিয়া বলেন, আসলে এটা সংহতির অন্যতম নজির। ৩৪ বছর থেকে তিনি এই নির্মাণ করে আসছেন তার আগে তার বাবা ঠাকুরদারা এটা তৈরি করেছেন।
কোচবিহার হরিণচওড়া এলাকার তোর্সা পারে বসে আগামী দিন তার পুত্রও এই নির্মাণ চালিয়ে যাবেন বলে তার আশা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584