লেবাননের রাস্তায় জ্বলছে আগুন, মুখে রঙ মেখে পথে হাজার হাজার ‘জোকার’

0
488

নিউজফ্রন্ট,ওয়েব ডেস্কঃ

সিনেমা মানব জীবনকে ইনফ্লুয়েন্স করে নাকি জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ইভেন্ট থেকে সিনেমার জন্ম হয়- এই নিয়ে বিতর্ক আজীবন কাল থেকে চলে আসছে। সিনেমা বিভিন্ন ভাবে মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে এই নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। তবে প্রশ্ন থেকে যায় সেই প্রভাব বিস্তার কার জীবনে কতখানি হয়ে থাকে।

Lebanon hitted and hundred on people makeup joker | newsfront.co
জোকার সিনেমার সেই বিখ্যাত দৃশ্য। চিত্র সৌজন্যঃ এন্টারটেনমেন্ট গণমাধ্যম

টড ফিলিপস্‌ পরিচালিত ও জঁকেন্‌ ফিনিক্স অভিনীত সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘জোকার’ সারা বিশ্বে এমন প্রভাব ফেলেছে যা মানুষের জীবনকে নাড়িয়ে দিয়েছে নানা ভাবে।

Lebanon hitted and hundred on people makeup joker | newsfront.co
বেইরুটের রাস্তায় এক প্রতিবাদী। চিত্র সৌজন্যঃ এন্টারটেনমেন্ট গণমাধ্যম

‘জোকার’- চরিত্রে এর আগে অনেকেই তুখোড় অভিনয় করেছেন। সেই তালিকায় জ্যাক নিকলসন, হিথ লেজার, জেয়ার্ড লেটো থেকে বাদ দেওয়া কাউকেই সম্ভব নয়। কিন্তু শুধুমাত্র ‘জোকার’কে কেন্দ্র করে বানানো ছবিতে জঁকেন্‌ ফিনিক্সের অভিনয় যেন পৃথিবীবাসীকে সিস্টেমের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার তাড়না জুগিয়েছে। ভেঙেচুড়ে দিয়েছে চিরাচরিত ভাবে চলে আসা রাষ্ট্রের সিস্টেমের ম্যাথমেটিক্সকে।

সিনেমার শেষ দৃশ্যে দেখা যায় শহরে আগুন জ্বলছে, প্রতিবাদীরা প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নেমে তীব্র বিরোধিতা করছে রাষ্ট্রের। আগুন জ্বলছে দাউদাউ করে, আর তার মাঝে মুখ্য চরিত্র আর্থার ফ্লেক (পড়ুন জোকার) একটি গাড়ির বনেটের উপর দাঁড়িয়ে দুদিকে হাত মেলে সেলিব্রেট করছে ক্ষয়িষ্ণু সমাজের পতন।

ঠিক এমন দৃশ্যই বাস্তবায়িত হয়েছে লেবাননের রাজধানী বেইরুট এ। হাজার হাজার প্রতিবাদীদের মাঝে অন্তত একশো জন মুখে জোকার এর মতো রঙ মেখে নেমে পরেছে রাস্তায়।

নেমে পড়েছে সরকারের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। সম্প্রতি বেইরুট সরকার সেখানকার বাসিন্দাদের হোয়াটস্যাপ কল এর উপর একটি বিতর্কিত কর প্রথা চালু করেছিল। তা মানতে নারাজ ছিল অনেকেই। এই কর প্রথা রদের বিরুদ্ধেই রাস্তায় নামে বিরোধীরা। কেউ মুখে রঙ মেখে, আবার কেউ ‘জোকার’ মুখোশ পরে নেমে পড়ে রাস্তায়।

আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, এক মহিলা প্রতিবাদী বলেন, আমরা সবাই জোকারের মতো মুখে রঙ মেখেছি, কারণ আমরা ওই চরিত্রটির সাথে নিজেদের মিল খুঁজে পাই। আর্থার ফ্লেককে সবাই অবজ্ঞা করত, উপহাসের পাত্র ছিল সে। ধীরে ধীরে তার ভিতর জমতে থাকা রাগ, রোষ, আক্রোশ একটা সময়ে পাগলামিতে পরিণত হয় এবং সে সবকিছু ধ্বংস করতে শুরু করে। লেবানন এ ঠিক এমনটাই চলছে এখন।

আরও পড়ুনঃ একসঙ্গে ষোলো জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিল বাংলাদেশ আদালত

বেইরুট এর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী, এস আরি হানাফি জানান, “হিজাবল্লাহ নেতা সঈদ হাসান নাসারল্লা এর মতো একজন রাজনীতিবিদের থেকে নিজেদের মুখ লোকানোর জন্যই সবাই মুখে রঙ মেখেছে। এখন কথা হল কেন ‘জোকার’? কারণ যে কোনও প্রতিবাদের বাস্তবায়ন লেবানন এ ক্রিয়েটিভলি হয়ে আসে। এটা এই বিপ্লবের একটি আর্টিস্টিক অ্যাপ্রোচ।”

যেহেতু মানুষের মধ্যে একতা রয়েছে, তাই বিরোধীরা এই বিপ্লবকে সফল ভাবেই দেখছেন। জানা গিয়েছে, হিজাবল্লাহ নেতা সাধারণ জনগণকে বিরোধীদের থেকে দূরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here