মুসলিম অধ্যাপককে অপসারণের দাবিতে ছাত্রদের বিক্ষোভ

0
45

নিউজফ্রন্ট, ওয়েবডেস্কঃ

বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ২৯ বছর বয়সী মুসলিম অধ্যাপকের নিয়োগে গত সপ্তাহ থেকে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। ফিরোজ খান নামের এক অধ্যাপক সংস্কৃত বিদ্যা-ধর্ম বিজ্ঞান বিভাগে সহকারি অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার দু’দিন পর, ৭ নভেম্বর এই প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল।

the student protest for removal of muslim professor | newsfront.co
সংবাদ চিত্র

বিক্ষোভের পরে, বিএইচইউ প্রশাসন একটি বিবৃতি জারি করে– বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পিছনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গের ভিত্তিতে কোনও বৈষম্য ছাড়াই সমস্ত যোগ্য ব্যক্তিকে অধ্যয়ন ও শিক্ষার সমান সুযোগ প্রদান করা হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মিঃ খানের নিয়োগ একটি সর্বসম্মত বিধি ও নীতির উপর নির্ভর করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়াতে হয়েছে।

একটি সর্বভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে, ওই অধ্যাপক বলেছেন, তিনি এর আগে কখনও এতটা অপমানিতবোধ করেননি। যদি অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত হওয়ার ওই বিজ্ঞাপনে এটা লেখা থাকত, কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও মুসলিম অধ্যাপক চান না, তবে তিনি এই ব্যাপারটি নিয়ে ভেবেই দেখতেন না।

অন্যদিকে ছাত্রদের বক্তব্য, ফিরোজ খানের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিযুক্তিকরণ একটি চক্রান্ত ছাড়া কিছুই নয় এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়ক প্রতিষ্ঠাতা মদনমোহন মালব্যর বিশ্বাস ও সম্মানে আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুনঃ ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ ঘিরে উত্তেজনা

বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা সংস্কৃত বিভাগের ছাত্র চক্রপাণি ওঝা বলেছেন, “আমাদের দুটি দাবি আছে। প্রথমত, ফিরোজ খানের নিযুক্তিকরণ প্রক্রিয়াটি একটি চক্রান্ত ছাড়া কিছুই নয়।

অধ্যাপকের ফেভারে এই পুরো বিষয়টি সংঘটিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরে একটা কথা খুব পরিস্কার করে লেখা রয়েছে যে, হিন্দু ব্যতীত অন্য কোনও ধর্মের শিক্ষার্থী বা অধ্যাপককে সংস্কৃত বিভাগে নিযুক্ত করা হবে না। তবে কর্তৃপক্ষ কথার এমন অন্যথা করল কেন? এই ঘটনা মদনমোহন মালভ্যকে অপমান করা ছাড়া কিছুই নয়।”

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী শুভম তিওয়ারি নামের আর একজন ছাত্র বলছেন, “এই বিভাগের অধ্যাপকেরা আমাদের কাছে শিক্ষকের থেকে উচ্চতর আসনে, তাঁরা আমাদের গুরু।

এই বিভাগের প্রত্যেক অধ্যাপকই মাথায় টিকি রাখেন, আমরা তাঁদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করি, ‘হাভানে’ (ধার্মিক রীতি) অংশগ্রহণ করি। একজন অহিন্দু অধ্যাপককে নিযুক্ত করে এসবে বৈষম্য সৃষ্টি করা ছাড়া কিছুই হবে না। একজন মুসলিম আমাদের নিজ ধর্ম সম্পর্কে উপদেশ দিতে পারেন না।”

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর রাকেশ ভাটনগর জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী দেশের প্রত্যেকটি জনতাই সমান। তদুপরি কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে কাউকে নি্যুক্ত করা হলে তার থেকে বেশি অসম্মান ও গোঁড়া বিষয় কিছু হবে না।

সংস্কৃত বিভাগে উক্ত নিয়মটি পুরোপুরি মিথ্যে নয়, কিন্তু সমস্ত বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের সম্মতিতেই ওই অধ্যাপককে নিযুক্ত করা হয়েছে। এমনকি ওই অধ্যাপক নিযুক্তিকরণের প্রক্রিয়াতে কোনও নিয়ম লঙ্ঘন করাও হয়নি।

অন্যদিকে, বিভাগীয় প্রধান উমাকান্ত চতুর্বেদী জানিয়েছেন, অন্যান্য আবেদনকারীদের মধ্যে খান সবচেয়ে যোগ্যতম অধ্যাপক। যদি ছাত্রদের মতে, এই ঘটনা মদনমোহনের সম্মানকে আঘাত করছে, তবে এটিও সমভাবে ঘৃণ্য যে, শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে একজন যোগ্য অধ্যাপককে খারিজ করা হচ্ছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here