নিউজফ্রন্ট,ওয়েবডেস্কঃ
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব থেকে ৭ জুন পদত্যাগ করবেন। এতে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নতুন কারও আসার পথ সুযোগ হলো।দি টাইমস অফ লন্ডন সূত্রে জানা যায়।
ডাউনিং স্ট্রিটে এক আবেগময় বক্তৃতায় মে বলেন, ‘২০১৬ সালের ইউপোরিয়ান ইউনিয়নের গণভোটের ফলের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান দেখানোর চেষ্টা করেছি।’
মে বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা যে তিনি ব্রেক্সিট কার্যকর করতে পারেননি। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী যিনি হবেন,তিনি দেশের সর্বোচ্চ স্বার্থে কাজ করবেন বলে আশা করেন তিনি।
Theresa May is set to resign as the Conservative leader today, clearing the way for a new prime minister by the end of July https://t.co/sa1EXNqdOW
— The Times of London (@thetimes) May 24, 2019
থেরেসা মে বলেন, কনজারভেটিভ পার্টিতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন তিনি।
টরি দল থেকে ৭ জুন পদত্যাগের পর নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মে আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘শিগগিরই চাকরি ছেড়ে দিচ্ছি এবং আমার জীবনে এটি বড় সম্মানের বিষয়।’
৪৬ বছর ধরে ইইউ সদস্য যুক্তরাজ্য। ইইউ ছাড়তে প্রায় তিন বছর আগে এ নিয়ে দেশটিতে গণভোট হয়। ওই সময় ব্রেক্সিটের পক্ষে ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল। বিপক্ষে পড়েছিল ৪৮ শতাংশ ভোট।
ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর তৃতীয় দফা ভোটের আগে থেরেসা মে ঘোষণা দিয়েছিলেন, চুক্তি পাস হলে তিনি পদত্যাগ করবেন। কিন্তু এরপরও চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন আইনপ্রণেতারা।
থেরেসা মে ১৯৫৬ সালের ১ অক্টোবর ইংল্যান্ডের সাসেক্সের ইস্টবোর্নে জন্মগ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের পর দ্বিতীয় নারী হিসেবে যুক্তরাজ্যের সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন থেরেসা মে। জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদের (ব্রেক্সিট) বিষয়ে গণভোট হয়। এতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইইউতে থাকার পক্ষে ছিলেন। জনগণ বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দিলে ক্যামেরন পরাজয় মেনে পদত্যাগ করেন। যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ডেভিড ক্যামেরনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে কনজারভেটিভ পার্টির ঝানু রাজনীতিক থেরেসা মেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানান।
থেরেসা মে গণভোটে ইইউতে থাকার পক্ষেই প্রচার চালিয়ে ছিলেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বলেন, ‘ইইউ থেকে বিচ্ছেদ মানে বিচ্ছেদ। যুক্তরাজ্য কোনোভাবেই ইইউর সদস্য থাকবে না এবং সর্বোচ্চ স্বার্থ নিশ্চিত করেই যুক্তরাজ্য ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্নির্ধারণ করবে।’ দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এমন এক সরকার গড়ার অঙ্গীকার করেন, যে সরকার সব মানুষের জন্য কাজ করবে, শুধু সুবিধাভোগী কিছু মানুষের জন্য নয়।
২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া পার্লামেন্টের মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত থাকলেও ২০১৭ সালের এপ্রিলে হঠাৎ করেই মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ওই সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে থেরেসা মের কনজারভেটিভ পার্টি শীর্ষে থাকলেও পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। যুক্তরাজ্যে এককভাবে সরকার গঠনের জন্য ৬৫০ আসনের পার্লামেন্টে প্রয়োজন হয় ৩২৬ আসন। কনজারভেটিভ পার্টি তা থেকে ৮টি কম আসন নিয়ে বৃহত্তম দল হিসেবে অবস্থান ধরে রাখে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের রক্ষণশীল পার্টি ডিইউপি পার্লামেন্টে ১০টি আসন পায়। পরে ডিইউপির সঙ্গে সমঝোতা করে সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় কনজারভেটিভ পার্টি।
আরও পড়ুনঃ নির্বাচন কমিশনে ফাটল,স্বেচ্ছায় সরে গেলেন লাভাসা
অল্প বয়স থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় হন থেরেসা মে। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের ফিন্যান্সিয়াল কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত লন্ডন বারো অব মর্টনে কাউন্সিলর হন। ১৯৯৭ সালে সাধারণ নির্বাচনে পশ্চিম লন্ডনের মেইডেনহেডের পক্ষে তিনিই প্রথম নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) ছিলেন। ১৯৯৯ সাল থকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্রিটেনের ছায়া কেবিনেটের সদস্য ছিলেন থেরেসা। ২০০২ সালে কনজারভেটিভ পার্টির প্রথম নারী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। ২০১০ সালে পান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে ছয় বছর ধরে তিনি ডেভিড ক্যামেরনের মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584